এনআইডি সেবা নিজেদের কাছেই রাখার দাবিতে মানববন্ধন ইসির কর্মকর্তাদের

.
দেশে এখন
0

এনআইডি নিজেদের কাছে রাখতে অনড় অবস্থানে ইসি। মঙ্গলবারের (১৮ মার্চ) মধ্যে এনআইডি সেবা সিভিল রেজিস্ট্রেশন কমিশনের নেওয়ার প্রস্তাবনা বাতিলের দাবি জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তা কর্মচারীরা। আর তা না হলে, বুধবার থেকে সারাদেশে সকাল ৯টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত কর্মবিরতি পালনের ঘোষণা দিয়েছেন তারা। একই দাবিতে সারাদেশে নির্বাচন অফিসগুলোতে 'স্ট্যান্ড ফর এনআইডি' কর্মসূচি পালন করছেন ইসি'র কর্মকর্তা ও কর্মচারিরা।

একজন সেবাপ্রত্যাশী বলেন, ‘আমরা সেবা নিতে এসেছি, কিন্তু ওরা আমাকে ধমক দেয়, বলে পুলিশে দেবে।’

এনআইডি সেবাপ্রত্যাশীদের এমন অভিযোগ প্রতিনিয়ত দেখা যায়। নির্বাচন কমিশন ভোটার তালিকা হালনাগাদ, সীমানা নির্ধারণসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে নাগরিকের তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণে জাতীয় পরিচয়পত্র সম্পর্কিত কাজ করে আসছে।

সম্প্রতি সংস্কার কমিশনের সুপারিশে এনআইডি সেবা সিভিল রেজিস্ট্রেশন কমিশনে নেওয়ার যে প্রস্তাবনা এসেছে, তা নিয়ে অসন্তোষ নির্বাচন কমিশন সংশ্লিষ্টরা। গত ৫ মার্চ প্রধান নির্বাচন কমিশনারের অফিস কক্ষের সামনে অবস্থান নেয় ইলেকশন কমিশন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন। তাদের দাবি, এই সেবা ইসির বাইরে গেলে নির্বাচন হুমকির মুখে পড়তে পারে। এ নিয়ে ইসির পক্ষ থেকে সরকারকে চিঠি পাঠানো হলেও খুব একটা সাড়া না মেলায় আবারও ক্ষুব্ধ তারা।

এনআইডি সেবা ইসিতে রাখতে বৃহস্পতিবার নির্বাচন ভবনের সামনের সড়কে ২ ঘণ্টার মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে ইসি সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারিরা। এতে ইসি, সচিবালয়, জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ ও নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।

এসময় নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট এর মহাপরিচালক আসাদুজ্জামান বলেন, যেখান থেকে এনআইডির জন্ম সেখান থেকে এনআইডি সরিয়ে নিলে এর অপমৃত্যু ঘটবে। এতে বিড়ম্বনা আর ভোগান্তিও বাড়বে কয়েকগুণ।

নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক বলেন, ‘এটা শুধু আমাদের একার দাবি না। আগেও বলেছি, এটা শুধু নির্বাচন কমিশন বা সচিবালয় কর্মচারি-কর্মকর্তাদের দাবি না, এটা ১৩ কোটি মানুষের দাবি যাদের তথ্য আমাদের ডেটাবেইজে রাখা আছে। এই ডেটাবেইজ যাতে নষ্ট না হয়, আমাদের মূল দাবি সেটাই।’

এদিকে, আগামী মঙ্গলবারের (১৮ মার্চ) মধ্যে সরকার এনআইডি নিয়ে সিদ্ধান্ত বাতিল না করলে বুধবার (১৯ মার্চ) সারাদেশে সকাল ৯টা থেকে ১২টা পর্যন্ত অর্ধদিবস 'অপারেশনাল হল্ট' পালন করবে ইসির কর্মকর্তা-কর্মচারিরা।

ইলেকশন কমিশন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মনির হোসেন বলেন, ‘একটাই ডেটাবেইজ থাকবে বাংলাদেশে, আমাদের পরিচিতি একটাই হবে, একটাই ডেটাবেইজ থেকে আমাদের আইডি তৈরি হবে। যদি কোন নিরাপত্তাজনিত সমস্যা থাকে তাহলে আমরা সেটা নিয়ে কাজ করতে পারি, সরকার সেটার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে।’

পরে এই বিষয়ে ব্রিফ করেন সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ।

আখতার আহমেদ বলেন, ‘এই সিস্টেমটা আমরা গড়ে তুলেছি ২০০৭ সাল থেকে। আমাদের দক্ষতা আছে এবং আমরা এখান থেকে কাঙ্ক্ষিত সেবা দিচ্ছি, এখান থেকে সেবা সম্প্রসারণের ক্ষেত্রও তৈরি করছি। কাজেই কোনো পদ্ধতি নতুন করে গড়ে না তুলে,যেটা প্রতিষ্ঠিত আছে সেটাই সম্প্রসারণ করাই যৌক্তিক বলে আমরা মনে করছি। এজন্যই এটা আমরা বারবার করে বলছি।’

এদিকে, 'দেশের বিভিন্ন নির্বাচন কার্যালয় চত্বরে একই কর্মসূচি পালিত হয়। এসময়, জাতীয় পরিচয়পত্র সেবা কমিশনের অধীনে রাখতে ৯ দফা দাবির যৌক্তিকতা তুলে ধরেন তারা। মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ভোটার তালিকা থেকে এনআইডি ডেটাবেজ আলাদা করার কোনো সুযোগ নেই।

এসএইচ