দেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকা শক্তি প্রবাসী আয়। হাজার মাইল দূর থেকে যারা দেশের জন্য টাকা পাঠান, সচল রাখেন অর্থের চাকা, দেশ পরিচালনায় তাদের নেই কোনো ভূমিকা। অর্থাৎ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় কে বসবে, সে প্রবাসীদের রায় দেয়ার অধিকার স্বাধীনতার ৫৪ বছরেও নিশ্চিত হয়নি। এবার তাই জোরেসোরে প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিয়ে আলোচনা।
প্রায় দেড় কোটির মত প্রবাসী বাংলাদেশে কীভাবে জাতীয় নির্বাচনে ভোট দিবেন, তা সোমবার বৈঠকে বসে নির্বাচন কমিশন। সেই বৈঠকে ৩টি প্রস্তাবনা উঠে। পোস্টাল ব্যালট, অনলাইন ভোটিং এবং প্রক্সি ভোট। এই ৩টির মধ্যে প্রক্সি ভোটের পথেই হাঁটছে ইসি। এই বিষয়ে মঙ্গলবার গণমাধ্যমের সাথে কথা বলেন, নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ। বলেন, পোস্টাল ব্যালট কার্যকর নয়, তাই প্রক্সি ভোটারের সুপারিশ নিয়ে ভাবা হচ্ছে।
নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, ‘বর্তমান যে পোস্টাল ব্যালট যে পদ্ধতি রয়েছে প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য সেটি একটি অচল পদ্ধতি। যে কারণে আমরা গত দ্বাদশ নির্বাচনেও দেখেছি বিদেশ থেকে একটি ভোটও এখানে কাস্ট হয়নি।’
তিনি বলেন, ‘আগামী নির্বাচনে যদি আমাদের এবং প্রবাসী সকলের প্রত্যাশা পূরণ করতে হয়, মাননীয় প্রধান উপদেষ্টাও যেমনটি বলেছেন যে আমাদের প্রক্সি ভোটিংয়ে যেতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘প্রক্সি ভোটিং সিস্টেমে বিশ্বস্ত প্রতিনিধির মাধ্যমে প্রবাসীদের ভোট দেয়ার যে প্রস্তাবনা এসেছে, তা রাজনৈতিক দল ও নীতিনির্ধারকদের সাথে এপ্রিলে চূড়ান্ত করা হবে।
তিনি আরও বলেন, ‘ওয়ার্কশপের মাধ্যমে আমরা ৩টা পদ্ধতির জন্য ৩টা আলাদা সিস্টেম আর্কিটেকচার ডেভেলপ করতে চাই, আশা করছি সেটা এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহের মধ্যেই হয়ে যাবে। রাজনৈতিক দলসমূহ ও অন্যান্য সকল স্টেকহোল্ডারদের সাথে বসে সর্বসম্মতিক্রমে এটা গ্রহণযোগ্য হলে তখন আমরা সিস্টেম ডেভেলপমেন্টে যাব।’
আগামী নির্বাচনে প্রবাসে অবস্থানরত ভোটাররা যাতে ভোট দিতে পারে সেই লক্ষ্যে একগুচ্ছ পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে কমিশন।
আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে যেন সকল প্রবাসী যারা ভোটের আওতাভুক্ত ছিল না তাদেরকে যেন ভোটের আওতাভুক্ত করা যায়।’
বর্তমানে ৯টি দেশে ভোটার নিবন্ধনের কাজ করছে নির্বাচন কমিশন। কমিশনার সানাউল্লাহ জানান,আগামীতে ৩৪ দেশের অবস্থানরত প্রবাসীরা বিদেশের মাটিতে বসেই ভোটার হবেন, এবং ভোটও দিতে পারবেন।