৭ দশমিক ১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পে ধ্বংসস্তূপের নগরীতে রূপ নিয়েছে মাউন্ট এভারেস্টের চীনা অংশে অবস্থিত তিব্বতের ডিংরি কাউন্টির পবিত্র শহর শিগাৎসে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে হাজারেরও বেশি বাড়িঘর ও স্থাপনা। বাড়ছে হতাহতের সংখ্যা। প্রাণের সন্ধানে ধ্বসে পড়া স্থাপনায় চলছে উদ্ধার তৎপরতা। অ্যাম্বুলেন্সের শব্দে ভারি হয়ে উঠছে মাউন্ট এভারেস্ট লাগোয়া তিব্বতের প্রত্যন্ত নগরীটি।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে ভূপৃষ্ঠের ১০ কিলোমিটার গভীরে উৎপত্তি হয় এই ভূমিকম্পের। পরিস্থিতিকে আরও ভয়াবহ করে তুলেছে তীব্র শীতের আবহ। এরইমধ্যে বর্তমানে মাইনাস ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার পারদ মাইনাস ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নামার পূর্বাভাস দিয়েছে চীনের আবহাওয়া অফিস।
এ অবস্থায় হতাহতের সংখ্যা কমিয়ে আনতে সম্ভাব্য সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে উদ্ধার কাজ চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। এরপর শিগাৎসে পাঠানো হয়েছে পর্যাপ্ত গরম কাপড় ও তাঁবুসহ দুর্যোগ ও ত্রাণ সহায়তা। এছাড়াও মোতায়েন করা হয়েছে সামরিক সদস্যসহ ১৫শ' উদ্ধারকর্মী।
চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম সিসিটিভির তথ্য বলছে, তিব্বতের শিগাৎসের ২০০ কিলোমিটার এলাকায় গেলো ৫ বছরে ২৯ বার ভূমিকম্প হয়েছে। তবে মঙ্গলবারের ভূমিকম্প ছিল সবচেয়ে শক্তিশালী।
মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থার তথ্য অনুযায়ী ভূমিকম্পটির মাত্রা ৭ দশমিক ১ বলা হলেও চীন বলছে রিখটার স্কেলে মাত্রা ছিলো ৬ দশমিক ৮। এর শক্তিশালী ভূমিকম্পটির কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ওই এলাকায় ছোট ছোট আরও কয়েকটি ভূমিকম্প অনুভূত হয়।
তিব্বত অঞ্চলের সবচেয়ে উঁচু অঞ্চলটিতে শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানার পর নেপালেও কয়েক দফা আফটার শক অনুভূত হয়েছে। ৪শ' কিলোমিটার দূরে রাজধানী কাঠমান্ডুতে ঘরবাড়ি ছেড়ে রাস্তায় বের হয়ে এসেছেন সাধারণ মানুষ। ভূমিকম্প হয়েছে ভারত, বাংলাদেশ আর ভুটানেও।
এর আগে ২০১৫ সালে নেপালে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পে ৯ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। ২০০৮ সালে চীনের সিচুয়ান প্রদেশে ভূমিকম্পে প্রায় ৭০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। মঙ্গলবারের ভূমিকম্পটি গোটা হিমালয় অঞ্চলে ১০০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ ভূমিকম্পের মধ্যে একটি।