স্বৈরশাসক বাশার আল-আসাদের পতনের পর প্রথমবারের মতো বড়দিন পালন করেছেন সিরিয়ার সাধারণ মানুষ। নতুন সরকার সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের প্রতিশ্রুতি দেয়ায় নাচে গানে মাতোয়ারা ছিলেন খ্রিষ্ট ধর্মাবলম্বীরা। সিরিয়ার পতাকা হাতে দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে এদিন নানা মুহূর্ত ফ্রেমবন্দি করেন অনেকে।
স্থানীয় একজন খ্রিষ্টান বলেন, 'এ বছর কিছুটা ভয়ে ছিলাম। ভেবেছিলাম আশেপাশের মানুষ হয়তো আমাদের উৎসব উদযাপন মেনে নেবে না। তবে পরিস্থিতি ছিল ঠিক উল্টো। আশা করছি, সামনেও সবাই সহনশীল থাকবেন।'
অন্য একজন স্থানীয় বলেন, 'আশা করছি আমরা আমাদের অধিকার ফিরে পাবো। দেশকে শক্তিশালীভাবে গড়ে তোলার পাশাপাশি জাতির প্রতি দায়িত্ব পালন করবো।'
রাজধানী দামেস্কের গির্জায় গির্জায় চলে বড়দিনের প্রার্থনা। যিশুর বাণী ভক্তদের পাঠ করে শোনান যাজকেরা। খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের আশা, যিশুর আগমনের মাধ্যমে সিরিয়ায় আবারও ফিরে আসবে শান্তি। আসাদের পতনের পর প্রথম বড়দিনকে লিটমাস পরীক্ষা হিসেবে দেখছিলেন বিশ্লেষকরা। বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া শান্তিপূর্ণভাবে এবারের ক্রিসমাস পালিত হওয়ায় আবু মোহাম্মাদ আল জুলানি এই পরীক্ষায় উতরে গেছেন বলে মনে করছেন তারা।
তবে আসাদপন্থিদের আকস্মিক হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন বেশ কয়েকজন সিরীয় সেনা। বিবিসির প্রতিবেদন বলছে, বন্দর নগরী তারতৌসে সেদনায়া কারাগারে নির্যাতনের সঙ্গে জড়িত আসাদপন্থি এক সেনাকে গ্রেপ্তারে অভিযান চালায় সিরিয়া সেনাবাহিনী। এসময় আকস্মিক হামলায় ঘটে প্রাণহানির ঘটনা। পাল্টা হামলায় আসাদপন্থি কয়েকজন নিহতের তথ্যও মিলেছে।
কুর্দিদের অস্ত্র ফেলে দিতে হবে, নয়তো তাদের কবর দেয়া হবে। দলের পার্লামেন্টারি বৈঠকে এমনই হুমকি দিয়েছেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইপ এরদোয়ান। তিনি জানান, দামেস্ক পুনর্গঠনে অন্তর্বর্তী সরকারের পাশে থাকবে আঙ্কারা।
রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান বলেন, 'দুই দেশের জন্য হুমকি, এমন সন্ত্রাসী সংগঠনকে আমরা মূলোৎপাটন করবো। হয় কুর্দিরা অস্ত্র ফেলে দিবে, নয়তো অস্ত্রের সঙ্গেই তাদের কবর দেয়া হবে। ৯১০ কিলোমিটার সীমান্ত সুরক্ষিত করতে যা যা প্রয়োজন, আমরা সবকিছুই করবো।'
দেশে ফিরতে শুরু করেছেন সিরিয়ানরা। ধ্বংসস্তূপের মাঝেই নিজেদের বাড়ি খুঁজে বের করার বৃথা চেষ্টা করছেন অনেকে। সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে সিরিয়ার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে পশ্চিমাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে কাতার। তবে, এর মাঝেও চলে ইসরাইলি আগ্রাসন। দখলকৃত গোলান মালভূমিতে অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করেছে আইডিএফ।