জুলাই আগস্ট আন্দোলনের উত্তাল দিনগুলোতে বন্দর নগরীতে বুক চিতিয়ে লড়েছিলেন ছাত্র জনতা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও তৎকালীন সরকারদলীয় কর্মী সমর্থকদের হামলায় হতাহত হন বহু ছাত্র জনতা।
সে সময়ের আন্দোলনে তেমনই এক আহত শিক্ষার্থী চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শুভ হোসেন। আন্দোলন শুরুর দিকে জুলাইয়ে মুরাদপুরে চোখে গুলিবিদ্ধ হন শুভ। এরপরই দৃষ্টিশক্তি হারান মেধাবী এ তরুণ। বাকি জীবনে পড়াশুনা এবং দৈনন্দিন কাজের জন্য এক চোখই ভরসা শুভর।
শুভ হোসেন বলেন, ‘আমার রেটিনা ও কর্ণিয়া দুইটিতেই সমস্যা রয়েছে, তবে কর্ণিয়া চিকিৎসা হবার সম্ভাবনা থাকলেও রেটিনার কোনো সম্ভাবনা নেই।’
শুভর মতো আরো বহু শিক্ষার্থী জনতা আন্দোলনে চোখে আঘাত পেয়েছেন। কারো চোখে বুলেট বিদ্ধ হয়েছে, কারো চোখ পাথর আবার কেউ টিয়ার শেলে আঘাতপ্রাপ্ত। ক্ষতিগ্রস্ত চোখ নিয়ে এখন সীমাহীন কষ্টে দিনাতিপাত করছেন এ সকল আন্দোলনকারী।
এসব রোগীদের চিকিৎসায় আমেরিকা থেকে উড়ে এসেছেন বাংলাদেশি চিকিৎসক রাশেদ নিজাম। মিড মিশৌরি আই সেন্টারের এ চিকিৎসক চট্টগ্রামের শেভরন ক্লিনিকে শনিবার সকাল ১০টা থেকে ১২ জন রোগীকে চিকিৎসা দেন।
যুক্তরাষ্ট্রের মিড মিশৌরি আই সেন্টারের চিকিৎসক রাশেদ নিজাম বলেন, ‘দুইজনের হয়ত অপারেশন লাগবে কিছুদিন পর। একজনের আঘাতের কারণে চোখে ছানি পড়েছে যার চিকিৎসা এখানে করা যাবে। তবে আরো একজনের আঘাতের কারণে রেটিনা সার্জারি হয়েছে, তবে তাকে এক্ষেত্রে ৬ থেকে ৭ মাস অপেক্ষা করতে হবে।’
সিভিল সার্জন অফিস এই চক্ষু সেবা কার্যক্রমের তত্ত্বাবধান করছেন। অভ্যুত্থানে যারা আহত হয়েছেন তেমন নিবন্ধিত রোগীদেরই কেবল চিকিৎসা দেয়া হয়। তিনি বলেন,‘প্রয়োজনে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতেও প্রস্তত রয়েছে সরকার। ’
চিকিৎসক ও আয়োজক মোহাম্মদ ইরফান চৌধুরী বলেন, ‘স্বাস্থ্য উপদেষ্টা আশ্বস্ত করেছেন প্রয়োজনে তাদেরকে বিদেশে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে বা বিদেশ থেকে চিকিৎসক আনা হবে।’
তবে এখনো সরকারিভাবে তেমন সহযোগিতা পাননি বলে জানান আহতরা। ব্যক্তিগতভাবে লক্ষাধিক টাকা খরচ করে এখন অনেকেই আর চিকিৎসা ব্যয় এগিয়ে নিতে পারছেন না। তবে আয়োজকরা বলছেন সরকারি সহযোগিতা পেতে অবশ্যই সিভিল সার্জন কার্যালয়ে নিবন্ধন করতে হবে।