পূর্ব চীন সাগর, তাইওয়ান প্রণালি ও দক্ষিণ চীন সাগরের জলসীমায় চীনের নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ডের প্রায় ৯০টি জাহাজ অবস্থান করছে।
মূলত তাইওয়ান ও ফিলিপিনসের সংযোগকারী ফার্স্ট আইল্যান্ড চেইন ঘিরে এসব নৌবহর মোতায়েন করা হয়। যা ২০২২ সালের চীনের সামরিক মহড়ার তুলনায় আরও বড়। ওই বছর তৎকালীন মার্কিন স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির তাইওয়ান সফরের প্রতিক্রিয়ায় বড় মহড়া চালিয়েছিল বেইজিং।
চীনের এমন কর্মকাণ্ডকে উদ্বেগজনক বলছে তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। তাদের দাবি, চীন শুধু তাইওয়ান নয়, এই অঞ্চলের অন্য দেশকেও লক্ষ্যবস্তু বানিয়েছে। এই প্রণালীতে নিজের আধিপত্য বিস্তার করতে চায় চীন।
তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা শেই জিহ-শেং বলেন, ‘চীন এখন পর্যন্ত তাদের মহড়ার শুরু করেনি। এ বিষয়ে আমাদের কিছু জানানো হয়নি। তবে এই অঞ্চলে চীনের এসব মহড়া সত্যিই উদ্বেগজনক। কারণ মহড়ার নামে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়তে পারে চীন। তাদের ওপর নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।’
চীনা জাহাজের উপস্থিতি জনমনে কিছুটা আতঙ্ক তৈরি করছে। অনেক বাসিন্দার ধারণা এটা চীনের নিয়মিত সামরিক মহড়ার অংশ, যুদ্ধ লাগার লক্ষণ নেই।
এক অধিবাসী বলেন, ‘ভয় বা আতঙ্কিত হয়ে কোনো লাভ নেই। এতে আমাদের জীবনযাত্রার ব্যাঘাত ঘটবে। তবে চীনের প্রতি অবশ্যই সজাগ থাকতে হবে।’
আরেকজন বলেন, ‘তাইওয়ানের বাসিন্দারা শান্তিপ্রিয় মানুষ। অনেকের ধারণা নেই তাইওয়ান নিয়ে চীন কি পরিকল্পনা করছে। প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আমাদের আরও শক্তিশালী হওয়া প্রয়োজন।’
যদিও, চীন বলছে, তাইওয়ান অঞ্চলের সার্বভৌমত্ব রক্ষা ও আঞ্চলিক অখণ্ডতা টিকিয়ে রাখবে তারা। অন্য দেশ যেন এই অঞ্চলে অস্থিরতা তৈরি করতে না পারে, সেজন্য এসব পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বলে জানান চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাও নিং বলেন, ‘তাইওয়ানে কোনো প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় নেই। এটি ভূখণ্ড চীনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। তাইওয়ান ইস্যুটি চীনের অভ্যন্তরীণ বিষয়। এই প্রণালীর সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ডতা রক্ষার দায়িত্বও চীনের।
এদিকে চীনকে কড়া হুঁশিয়ারি জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তাইওয়ানকে শক্তিশালী করতে এবং তাদের সক্ষমতা অর্জনে সব ধরনের সহায়তা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ওয়াশিংটন।
মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব লয়েড অস্টিন বলেন, ‘চীনা প্রেসিডেন্ট যেকোনো সময় সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করতে পারেন। তবে আমি এতটুকু বলতে পারি এই অঞ্চলে যেকোনো সময় আক্রমণ আসতে পারে। যুক্তরাষ্ট্র চায় এই অঞ্চলে মুক্ত ও স্বাধীনভাবে সবাই চলতে পারে।’
তাইওয়ান নিজেদের সার্বভৌম দেশ হিসেবে দাবি করলেও ভূখণ্ডটিকে নিজেদের অংশ মনে করে চীন। স্বশাসিত তাইওয়ানকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে আনতে বলপ্রয়োগের বিষয়টিও এখন পর্যন্ত উড়িয়ে দেয়নি বেইজিং।