দেশে এখন
0

বিসিএসে একসঙ্গে ১৮ হাজার নিয়োগ দেবে অন্তর্বর্তী সরকার: জনপ্রশাসন সচিব

বিতর্ক-মুক্ত করতেই পরীক্ষা পুনর্মূল্যায়নের সিদ্ধান্ত

৪৩ থেকে ৪৭ বিসিএসে ক্যাডার ও নন-ক্যাডার পদে ১৮ হাজার ১৪৯ জনকে নিয়োগ দেবে অন্তর্বর্তী সরকার। রোববার সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোখলেস উর রহমান। আরও বলেন, বিতর্ক-মুক্ত করতেই অনুষ্ঠিত পাবলিক সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষা পুনর্মূল্যায়নের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এছাড়া, পদ বঞ্চিত যেসব কর্মকর্তা সাম্প্রতিক সময়ে পদোন্নতি পেয়েছেন, অবসরের আগে তাদের আরও একবার গ্রেড বাড়ানো হবে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।

৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে আলোচনা-সমালোচনার প্রেক্ষাপটে জনপ্রশাসনে চলছে নানা ধরনের যোগ বিয়োগ। এরই মধ্যে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে অনুষ্ঠিত হওয়া তিনটি বিসিএস নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত নিয়েছে পিএসসি।

রোববার জনপ্রশাসন এবং ৪৩ থেকে ৪৭ বিসিএস নিয়োগ নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার কী সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা জানাতে সচিবালয়ের এই সংবাদ সম্মেলন। জনপ্রশাসন সচিব মোখলেস উর রহমান শুরুতেই জানান, ৪৩ থেকে ৪৭তম বিসিএস পর্যন্ত ১৮ হাজারের বেশি সিভিল সার্ভিস কর্মকর্তাকে নিয়োগ দেবার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

তবে বিতর্ক এড়াতে, ৫ আগস্টের আগে শুরু হওয়া, ৪৩ থেকে ৪৬ বিসিএসের ক্ষেত্রে, নিয়োগের বিভিন্ন ধাপে পুনর্মূল্যায়ন ও পুনর্বিবেচনা করা হবে।

জানানো হয়, ৪৩তম বিসিএসে ২ হাজার ৬৪ জনের যে গ্যাজেট প্রকাশিত হয়েছে তাতে আসছে বছরের জানুয়ারি মাসে যোগদানের তারিখ ছিল। এই গ্যাজেট নিয়ে বিভিন্ন মাধ্যমে আলোচনা সমালোচনা সৃষ্টি হওয়ায় এখন ‘ক্লিন ইমেজে’র প্রার্থী খোঁজা হবে। এক্ষেত্রে নির্ভর করা হবে, গোয়েন্দা বাহিনীর প্রতিবেদনের ওপর।

৪৪তম বিসিএস, যেটার লিখিত শেষ হয়ে মৌখিক পরীক্ষা চলছিলো, সেটাতে পুনরায় নেয়া হবে মৌখিক পরীক্ষা। কাজেই ঐ বিসিএসে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ১১ হাজার ৭শ ৩২জনকে পুনরায় অংশ নিতে হবে মৌখিক পরীক্ষায়।

নতুন কমিশন, ৪৫তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার উত্তরপত্র তৃতীয় পরীক্ষককে দিয়ে মূল্যায়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ৪৬তম বিসিএসের ক্ষেত্রে, প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ পূর্বের ১০ হাজার ৬৩৮ জনের সঙ্গে আরও সমসংখ্যক প্রার্থীকে যোগ করে মোট ২১ হাজার ২৭৬ জনেকে লিখিত পরীক্ষার জন্য যোগ্য বিবেচনা করে ফল ঘোষণা হবে।

এসব সিদ্ধান্ত জানিয়ে, জনপ্রশাসন সচিব বলেন, গণঅভ্যুত্থানের চেতনা বৈষম্য দূর করতেই জনপ্রশাসন সংস্কারের অংশ হিসেবে এসব পরিবর্তন।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোখলেন উর রহমান বলেন, ‘ভাইভা বোর্ড খুবই সেনসিটিভ। এখানে নিজস্ব লোক থাকে, সাবজেক্টে লোক থাকে সরকারের লোক থাকে। এ জায়গায় একটা নার্ভ কাজ করে। এই যে ৫ আগস্টের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে যে সরকার গঠিত হয়েছে সে সরকারের পালসের আলোকে এ কমিটিগুলো কাজ করবে।’

এখানে জনপ্রশাসন সচিবকে, বিগত আমলে বঞ্চিতদের ব্যাপারে প্রশ্ন করেন সাংবাদিকরা। এ কর্মকর্তা জানান, পদ বঞ্চিতদের মধ্যে যাদের দ্রুতই অবসরে যাবার সময় হয়ে আসছে, বর্তমান সরকার তাদেরকে সম্মানের সঙ্গে বিদায়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এক্ষেত্রে অতিরিক্ত সচিবদের গ্রেড ওয়ান মর্যাদা দেয়া হবে। তবে এক্ষেত্রেও বিবেচনা করা হবে কারা বিতর্কিত।

তিনি বলেন, ‘মামলা-মোকদ্দমা, অভিযোগ তদন্ত যদি থাকে এদেরকে বিবেচনায় আনা হবে না। যেমন তাড়াহুড়ো করে ১৩ দিনে তিন প্রমোশন দেয়া হয়েছে, আপনারা ছিলেন তো সাক্ষী। তখন আমি আসি নাই। এর মধ্যে অনেকেই মামলাবাজ, মামলা খাওয়া, দুর্নীতি পরায়ণ, তারাও ঢুকে গেছে।’

এখানে জনপ্রশাসন সচিব জানান, নিয়োগের অস্বচ্ছতার কারণে আগের আমলে নিয়োগ সংক্রান্ত অনেক মামলা হয়েছে যে কারণসহ নানা কারণে প্রায় ৫ লাখ সরকারি পদ শূন্য হয়ে পড়ে আছে।

স্বচ্ছতার মাধ্যমে একটি ভালো নিয়োগ প্রক্রিয়ার মাধ্যম এসব পদে নিয়োগ দিয়ে কর্মসংস্থানের পরিকল্পনা রয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের জানান, এ কর্মকর্তা।

এএইচ