খাবারের তালিকায় রয়েছে ৩ হাজার কেজি ডগ ফুড, ৫ হাজার ডিম, মুরগির মাংস, ডাল-চাল ও ২০০ কুকুরের চিকিৎসা সরঞ্জাম।
ঢাকার সম্মিলিত সংগঠনের দল নেতা আব্দুল কাইয়ুম জানান, সেন্টমার্টিনে অনেক কুকুর খাওয়া-দাওয়া করতে না পেরে মারা যাচ্ছে।
খবর পেয়ে আমরা সেন্টমার্টিনে কুকুরের জন্য খাবার নিয়ে যাচ্ছি। সাথে ২০০ কুকুরের চিকিৎসা সরঞ্জাম নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আমাদের সাথে দুইজন ডক্টর ও একজন ভেট অ্যাসিস্ট যাচ্ছে। আমরা নিজেরাই রান্না করে খাওয়াবো। আমাদের মত সবাইকে এই কাজে এগিয়ে আসতে হবে বলেও জানান তিনি।
সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান জানান, প্রায় ৪ হাজার কুকুর রাতদিন বিচরণ করছে সেন্টমার্টিনে। এর ফলে দ্বীপের পরিবেশের ভারসাম্য মারাত্মকভাবে বিনষ্ট হচ্ছে। প্রায়ই সময় দ্বীপে স্থানীয় বাসিন্দাদের কুকুরের আক্রমণের শিকার হচ্ছেন। সরকার প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনে পর্যটক সীমিত করার সিদ্ধান্তে স্থানীয় বাসিন্দাদের মতো বিপাকে পড়েছেন দ্বীপের কুকুরসহ নানা ধরনের বন্যপ্রাণী। ইতিমধ্যে খাবারের অভাবে অনেক কুকুর মারা গেছে।
সেন্টমার্টিনের সাবেক মেম্বার হাবিবুর রহমান জানান, সরকারের নতুন সিদ্ধান্ত ও প্রবাল দ্বীপে পর্যটক সীমিত করার সিদ্ধান্তে পুরো দ্বীপবাসী দুর্ভিক্ষের কবলে পড়বে। এই দ্বীপে ট্যুরিজম ব্যবসা ছাড়া বিকল্প কোনো জীবিকার পথ নাই। দ্বীপে ৯০ শতাংশ মানুষ পর্যটন ব্যবসার সাথে জড়িত। পর্যটক মৌসুমে আশানুরূপ পর্যটক আসতে না দেওয়ায় দ্বীপের মানুষ মানবেতর জীবন যাপন করছে।
সেন্টমার্টিনের বাসিন্দা নূর মোহাম্মদ বলেন, ‘কুকুরের জন্য পরিবেশের খুব ক্ষতি হচ্ছে। পর্যটক আসতে না পারায় অনেক কুকুর না খেয়ে মারা যাচ্ছে। দ্বীপ থেকে কিছু কুকুর অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে গেলে ভালো হবে।’
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আরিফ উল্লাহ নেজামী বলেন, ‘কুকুর নিয়ে কাজ করে সম্মিলিত একটি সংগঠনের ১১ জন সদস্যের একটি টিম উপজেলা প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে কুকুরের জন্য খাবার নিয়ে সেন্টমার্টিনের উদ্দেশ্য যাত্রা শুরু করেছে। সাথে ২০০ কুকুরের চিকিৎসা সরঞ্জাম নিয়ে গেছে। এটি একটি ভালো উদ্যোগ।’
উল্লেখ্য, ২০২২ সালে কুকুরের সংখ্যা কমাতে উপজেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তর সেন্টমার্টিন থেকে ২ হাজার কুকুরকে টেকনাফ উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপের ঘোলারচরে নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।
সে অনুযায়ী, ২০২২ সালে মার্চে সেন্টমার্টিন থেকে ৩৬টি কুকুর আটক করে খাঁচায় রাখা হয়। কিন্তু পরে কয়েকটি পরিবেশবাদী সংগঠন এর বিরোধিতা করে। তাদের দাবির মুখে কুকুর স্থানান্তরের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়।