অন্যদিকে এভাবেই স্পিডবোটে করে নদীতে চষে বেড়াচ্ছেন মৎস্য বিভাগ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। সকাল-রাত এক চলছে টহল টিমের কসরত। এরমধ্যেও নজর ফাঁকি দিয়ে নদীতে নামে জেলেরা। এই চিত্র বিভাগের অন্য জেলার নদ-নদীতেও।
জেলেদের বলছেন, অন্য কোনো কাজ কর্ম না থাকায় তারা বাধ্য হয়ে ইলিশ মাছ ধরছেন।
এসময় মাছ ধরায় ব্যবহার করা হয় নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল। টহল টিমের স্পিডবোটের শব্দ শুনলেই দ্রুত পালিয়ে যায় নদীর তীরেই অসাধু জেলেরা। এ অবস্থায় নিষেধাজ্ঞা অমান্যকারীদের ধরতে তৎপরতার কথা বলছে প্রশাসন।
বরিশাল সদর উপজেলার মৎস্য কর্মকর্তা নিয়াজ মোরশেদ শিহাব বলেন, ‘আমরা একদিক থেকে টহল দিচ্ছি তো জেলেরা অন্য দিক থেকে ইলিশ ধরতে নামার চেষ্টা করছে। তারপরও আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি। জাল উঠিয়ে ফেলছি এবং যারা ধরা পড়ছে তাদের আটক করছি।’
বরিশাল মৎস্য ইলিশ কর্মকর্তা বিমল চন্দ্র দাস বলেন, ‘মৎস্য অধিদপ্তর ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে আমরা সব সময় পাহারায় আছি এবং যারা মাছ ধরতে নামছে তাদেরকেই আমরা আটক করছি’
মৎস্য বিভাগ বলছে, নিষেধাজ্ঞা চলাকালে ডিম দেওয়ার জন্য নদীতে আসে ইলিশ। তবে বাজারে এর দাম বেশি হওয়ায় লোভ সামলাতে পারছে না জেলেরা। এদিকে, এসব জেলেদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলে জানায় পুলিশ।
নৌ পুলিশ বরিশালের এস পি এস এম নাজমুল হক বলেন, ‘এ কার্যক্রম শুধু সরকারের সংস্থাগুলোর নয়, আপামর জনসাধারণেরও এ কার্যক্রমে একাত্মতা ঘোষণা করা উচিত বলে আমি মনে করি।’
বরিশাল বিভাগের মৎস্য অধিদপ্তরের উপ পরিচালক নৃপেন্দ্র নাথ বিশ্বাস বলেন, ‘যাতে কেউ আইন ভঙ্গ করে ইলিশ প্রজনন বিঘ্ন ঘটাতে না পারে সে লক্ষ্যে বরিশাল পুলিশ নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছে।’
জাতীয় অর্থনীতি ও বৈশ্বিক কূটনীতিতে ইলিশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। নিষেধাজ্ঞার সময় ইলিশ ধরা বন্ধ নিশ্চিত করতে পারলে জিডিপিতে ইলিশের অবদান আরও বাড়বে বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদরা।
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের চেয়ারম্যানরিফাত ফেরদৌস বলেন, ‘যদি এ সময়ে আমরা যদি ইলিশ ধরা বন্ধ করতে পারি তাহলে এটি আগামী বছর আমাদের জিডিপিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’
গেল ১৩ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এই নিষেধাজ্ঞা চলবে আগামী ৩ নভেম্বর পর্যন্ত। মঙ্গলবার পর্যন্ত বরিশাল বিভাগে অবৈধভাবে মাছ ধরার অভিযোগে ৪৮২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এসময় প্রায় ১৫ টন ইলিশসহ সাড়ে ৮৫ লাখ মিটার জাল জব্দ করেছে প্রশাসন।