বিদেশে এখন
0

যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জনসমর্থন কমছে কামালা হ্যারিসের

যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে শেষ সময়ে এসে জনসমর্থন কমছে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কামালা হ্যারিসের। একের পর এক জরিপে ব্যবধান কমিয়ে তাকে ছুঁতে যাচ্ছেন রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। বিশ্লেষণে উঠে আসছে, দেশকে নিয়ে ট্রাম্পের কট্টর জাতীয়বাদী দর্শন চাপ বাড়াচ্ছে প্রতিদ্বন্দ্বী কামালার ওপর। তার ওপর নিজে কৃষ্ণাঙ্গ হয়েও কৃষ্ণাঙ্গদের যথেষ্ট সমর্থন পাচ্ছেন না কামালা।

হোয়াইট হাউজে ফিরতে যুক্তরাষ্ট্রকে পাল্টে দেয়ার আর বিশ্বকে কাঁপিয়ে দেয়ার এক চরম দর্শন ছড়িয়ে দিচ্ছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ও আসন্ন নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাকে থামাতে প্রতিদ্বন্দ্বী ডেমোক্র্যাট প্রার্থী ও বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট কামালা হ্যারিসের হাতে সময় আছে আর মাত্র তিন সপ্তাহ।

ট্রাম্পের তুলনায় প্রায় মাসখানেক দেরিতে জুলাইয়ে নির্বাচনী দৌঁড়ে নাম লেখান কামালা। তা সত্ত্বেও প্রবীণ ট্রাম্পকে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে দাঁড় করাবেন অপেক্ষাকৃত নবীন কামালা, পরের টানা তিন মাস প্রায় সব জরিপে মিলছিল এমনই আভাস। কিন্তু ভোটের ২৩ দিন আগে ভিত একটু কি নড়বড়ে হতে শুরু করেছে ডেমোক্র্যাট প্রার্থীর? রোববার প্রকাশিত তিনটি জরিপে দেখা যাচ্ছে, হোয়াইট হাউজের দৌঁড়ে ট্রাম্পের চেয়ে জনসমর্থন কমেছে কামালার।

৫ নভেম্বরের ভোট সামনে রেখে সিবিসি নিউজ/ইউগভ সবশেষ জরিপে কামালা ৫১ শতাংশ জনসমর্থন পেয়ে এগিয়ে আছেন, সামান্য ব্যবধানে পিছিয়ে ট্রাম্পের প্রতি সমর্থন ৪৮ শতাংশ। এবিসি নিউজ/ইপসোসের সবশেষ জরিপেও ৫০ শতাংশ সমর্থন নিয়ে এগিয়ে কামালা, ট্রাম্পের প্রতি সমর্থন ৪৮ শতাংশ। এক মাস আগেও এ জরিপে কামালার প্রতি সমর্থন জানিয়েছিল ৫২ শতাংশ মানুষ, যা বর্তমানে কমেছে। অন্যদিকে একইমাসে ট্রাম্পের প্রতি সমর্থন ছিল ৪৬ শতাংশ, যা সবশেষ জরিপে বেড়েছে। এনবিসি নিউজের জরিপে দুই প্রার্থীই আছেন সমান অবস্থানে। বলা হচ্ছে, আগ্নেয়াস্ত্র ইস্যুতে দুই পক্ষের অবস্থান বড় প্রভাব ফেলছে ভোটারদের চিন্তায়।

ভোটারদের একজন বলেন, ‘এটাই ডেমোক্র্যাটদের পরিকল্পনা। সব দোষ তারা দেয় আগ্নেয়াস্ত্রকে, এর পেছনে থাকা ব্যক্তিটিকে নয়।’

আরেকজন বলেন, ‘কামালা জিতলে ডানপন্থিরা বামপন্থিদের মতো আচরণ শুরু করবে। আর ট্রাম্প জিতলে বামরা যা করতো তা চালিয়ে যাবে, নিজেরাই নিজেদের শহর পোড়াবে।’

কামালাকে বামপন্থী হিসেবে চিহ্নিত করে নির্বাচনী কৌশল যে ভালোই নিয়েছেন ট্রাম্প, তা স্পষ্ট জরিপে। অভিবাসীদের বিরুদ্ধে ট্রাম্পের কঠোর শব্দবাণ উৎফুল্ল করছে কট্টর মার্কিন জাতীয়তাবাদীদের। এমন বাস্তবতার মধ্যেই অ্যারিজোনার সমাবেশে তার নতুন প্রতিশ্রুতি, সীমান্তরক্ষী বাহিনীতে ১০ হাজার সেনা মোতায়েন করার।

যুক্তরাষ্ট্রের রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘আমাদের সীমান্তে দাঁড়িয়ে দেশরক্ষায় নিয়োজিত বাহিনীকে আরও বড় করে তুলবো আমি। তারা চমৎকার মানুষ। দেশের প্রতি তাদের অবিশ্বাস্য সেবার স্বীকৃতি দেবো। নতুন করে আরও ১০ হাজার সেনা নিয়োগ করবো এবং প্রবীণ সেনাদের বাহিনীতে রেখে দেবো। তাদের সেবা ভীষণ প্রয়োজন আমাদের।’

ট্রাম্প-কামালার ব্যবধান এবং ডেমোক্র্যাট শিবিরের প্রতি জনসমর্থন কমার আরেকটি বড় কারণ হিসেবে উঠে আসছে- হিস্প্যানিক ও আফ্রিকান আমেরিকান ভোটারদের সমর্থন আদায়ে কামালার ব্যর্থতার কথা। নিউইয়র্ক টাইমস/সিয়েনা কলেজের শনি ও রোববারের জরিপে দেখা গেছে, এখন পর্যন্ত কৃষ্ণাঙ্গদের ৭৮ শতাংশ এবং হিস্প্যানিকদের ৫৬ শতাংশ ভোট ধরে রেখেছেন কামালা, ২০১৬ ও ২০২০ সালের বিগত দুই নির্বাচনে যে পাল্লা আরও ভারী ছিল ডেমোক্রেটিক পার্টির। এমন পরিস্থিতিতে নর্থ ক্যারোলাইনায় সাত হাজার মানুষের সমাবেশে যোগ দিয়ে সামনের দিনগুলোতে কঠিন সংগ্রামের আভাস দেন ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্টপ্রার্থী।

যুক্তরাষ্ট্রের ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট প্রার্থী কামালা হ্যারিস বলেন, ‘সামনে কঠিন পরিশ্রম করতে হবে আমাদের। আমরা পরিশ্রম করতে পছন্দ করি। পরিশ্রম মানে ভালো কাজ। আগামী ২৩ দিনে আপনাদের সাহায্যে আমরা জিতবো। আমরাই জিতবো।’

যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম নারী ও দ্বিতীয় কৃষ্ণাঙ্গ প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে কামালাকে কৃষ্ণাঙ্গরাই যথেষ্ট সমর্থন দিচ্ছেন না বলে একদিন আগেই সমালোচনা করেন প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা।

ইএ

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর