দেশে এখন
0

ঠিকাদার দেশে নেই, দুই মাস ধরে বন্ধ আশুগঞ্জ-আখাউড়া চারলেন মহাসড়কের নির্মাণকাজ

সড়কের বেহাল দশায় জনদুর্ভোগ চরমে

ক্ষমতার পালাবদলে অনিশ্চিত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ-আখাউড়া চারলেন মহাসড়কের নির্মাণকাজ। আওয়ামী সরকারের পতনের পর ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিজ দেশে ফেরত যাওয়ায় প্রায় দুই মাস ধরে বন্ধ মহাসড়কের নির্মাণকাজ। এছাড়া দীর্ঘদিন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অধীনে থাকায় সংস্কার না হওয়ায় বেহাল দশা সড়কের ৪ কিলোমিটার অংশের। আর দীর্ঘদিন নির্মাণকাজ বন্ধ থাকায় যাত্রীদের দুর্ভোগ আরও দীর্ঘ হচ্ছে। তাই মহাসড়কটি দ্রুত যান চলাচলের উপযোগী করার দাবি স্থানীয়দের।

আশুগঞ্জ নদীবন্দর থেকে আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত প্রায় ৫১ কিলোমিটার সড়ক চারলেনে উন্নীতকরণে ২০১৭ সালে একটি প্রকল্প অনুমোদন দেয় সরকার। তবে দরপত্র আহ্বান এবং ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতা কাটিয়ে কাজ শুরু হয় ২০২০ সালে। পরবর্তীতে নানা সংকটে বিলম্বিত হয় প্রকল্পের কাজ। তিন দফায় মেয়াদ বাড়ানোর পর প্রকল্পের অগ্রগতি দাঁড়ায় প্রায় ৫৫ শতাংশে।

তবে গত ৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের পর নিরাপত্তাহীনতার কারণ দেখিয়ে প্রকল্পের ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এফকনস ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেডের প্রায় ৩শ' কর্মকর্তা-কর্মচারী নিজ দেশে চলে যান। ফলে বন্ধ রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পটির কাজ। দীর্ঘদিন ধরে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের অধীনে থাকায় সড়ক বিভাগ থেকে নিয়মিত সংস্কারও করা হয়নি রাস্তাটির।

যাত্রীদের মধ্যে একজন জানান, মোটামুটি কাজটা কিন্তু এগিয়ে যাচ্ছিলো। এখন কাজটা বন্ধ হয়ে যাওয়াতে আমাদের সাধারণ জনগণের খুবই দুর্ভোগ হচ্ছে ।

আরও একজন জানান, প্রায় সময়ই এই রোডে দুর্ঘটনা হয় । মাঝে মধ্যে ডাকাতিও হয়ে থাকে ।

বর্তমানে খানাখন্দে ভরা মহাসড়ক ব্যবহারে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে যাত্রীদের। ভাঙা সড়কে তৈরি হচ্ছে যানজট, নষ্ট হচ্ছে কর্মঘণ্টা। যানবাহন বিকল হয়ে আর্থিক লোকসানে পড়ছেন পরিবহন মালিক ও শ্রমিক। এছাড়া ধুলাবালির কারণে মহাসড়কের পার্শ্ববর্তী এলাকার বাসিন্দাদের অনেকেই শ্বাসকষ্টজনিত রোগে ভুগেছন।

যানবাহন চালকদের মধ্যে একজন জানান, অতিরিক্ত বেশি ভাঙা এই রাস্তাটা। লোড় গাড়ি থাকলে উল্টায় যাওয়ার মতো পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, 'প্রকল্পের আওতায় থাকা সড়ক মেরামতের দায়িত্ব ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের। তবে দুর্ভোগ নিরসনে সরকারের রাজস্ব খাত থেকে সড়কের বেহাল অংশ মেরামতের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের বিবেচনায় রয়েছে।'

আশুগঞ্জ-আখাউড়া চারলেন মহাসড়ক প্রকল্পের ব্যবস্থাপক শামীম আহমেদ বলেন, 'এই মুহূর্তে বাংলাদশে ঠিকাদার নাই। প্রকল্পটা মেরামত করার জন্য আমাদের বাইরেও যারা আছি রাজস্ব খাত থেকে যাতে মেরামত করা হয় সেটা কর্মকর্তাদের জানিয়েছি। শীঘ্রই হয়তো সিদ্ধান্ত আসবে আর তারপর আমরা দ্রুত কাজটা শুরু করে দুর্ভোগ কমানোর চেষ্টা করবো।'

৫ হাজার ৭৯১ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন আশুগঞ্জ-আখাউড়া চারলেন মহাসড়ক প্রকল্পে বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নের পাশাপাশি ভারতের ঋণ সহায়তাও রয়েছে। তবে ভারতীয় হাইকমিশন থেকে অনাপত্তিপত্র না পাওয়ায় কাজ শুরু করতে পারছে না ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।