দেশে এখন
1

বরগুনায় লোডশেডিংয়ে বরফ উৎপাদন ব্যাহত, ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ

বরগুনার পাথরঘাটায় চরম আকার ধারণ করেছে বিদ্যুৎ বিভ্রাট। লোডশেডিং ও লো ভোল্টেজের ফলে বরফ উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সাধারণ মানুষ। সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনে গ্রিড উপকেন্দ্র স্থাপনের কথা জানায় পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ।

মৎস্য আহরণ থেকে শুরু করে সংরক্ষণ ও বিপণনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ উপাদান বরফ। ইলিশসহ সামুদ্রিক মাছের জন্য প্রসিদ্ধ বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে প্রতিদিন প্রয়োজন হয় ৩০ থেকে ৬০ কেজি ওজনের কয়েক হাজার ক্যান বরফ।

তবে, সম্প্রতি বিদ্যুৎ সমস্যা প্রকট হওয়ায় ব্যাহত হচ্ছে এখানকার বরফ উৎপাদন। এতে নষ্ট হচ্ছে মাছ। ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন জেলেরাও। বছরে লোকসান হচ্ছে কোটি কোটি টাকা।

একজন জেলে বলেন, 'কারেন্ট না থাকায় বরফ পাওয়া যায় না। আর বরফ না পাওয়া যাওয়ায় মাছ নষ্ট হয়ে যায়। আর কারেন্ট না থাকায় বরফের দামও বেড়েছে অনেক। এর জন্য মাছের দামও বেশি হইছে।'

পাথরঘাটায় ২২টি বরফকল থাকলেও বিদ্যুৎ সমস্যায় উৎপাদন চালু আছে মাত্র ১৫টিতে। এমন অবস্থায় সিন্ডিকেট করে বরফের দাম বৃদ্ধির অভিযোগও উঠছে।

পাথরঘাটা বরফ মিলের মালিক পান্না খান বলেন, 'লোডশেডিং এমনভাবে হয় বলার মতো না। দেখা যায় বিদ্যুৎটা মাত্র আসছে। আসার সাথেই আমরা কন্টিনিউ করার আগেই যে ভোল্টেজ আসে তাতে মেশিনের মোটর পুড়ে যায়।

আড়ৎদার মালিক সমিতির কোষাধ্যক্ষ মো. নিজামউদ্দিন বলেন, 'আগে বরফ ১২০ টাকা থেকে ১৫০ টাকা বিক্রি করেছে। কিন্তু বছর অবরোধের সময় তারা ১৭০ টাকা রেট করে বিক্রি করেছে। এখনও ওইটাই ছিল, শেষে টিএনও স্যারকে বলার পর তারা ১৫০ টাকা বিক্রি করে। তবে তে আসলেই জেলেদের অনেক ক্ষতি হচ্ছে।'

এছাড়া বিদ্যুৎ বিভ্রাটে ভোগান্তির শিকার পাথরঘাটার কয়েক লাখ মানুষ। শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে হাসপাতালের রোগী সবাই পড়েছে বিপাকে।

কজন শিক্ষার্থী বলেন, 'বিদ্যুৎ যখন থাকে না তখন অনেক দুর্ভোগে পড়তে হয় আমাদের। আমরা ঠিকমতো পড়ালেখা করতে পারি না। সন্ধ্যা থেকে ৮টা বা ১০টা পর্যন্ত কারেন্ট না থাকলে আমরা কীভাবে লেখাপড়া করবো।'

গ্রিড উপকেন্দ্র না থাকা ও পাশের জেলা পিরোজপুর থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করায় এমন অবস্থা বলে দাবি পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের। তবে, আশ্বাস দিলেন দ্রুত সংকট সমাধানের।

পিরোজপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সহকারী জেনারেল ম্যানেজার মো. মিজানুর রহমান বলেন, 'বরগুনা গ্রিড থেকে আমরা আলাদা ৩৩ লাইনের জন্য কটা নকশা করেছি। এটা প্রাথমিক অবস্থায় আছে। এটার কাজ শুরু হলে হয়তো তিন থেকে চার বছরে শেষ হবে। পাথরঘাটা একেবারে শেষপ্রান্তে এবং এদিকে কোনো গ্রিড নেই। এজন্য এদিকে দ্রুত গ্রিডের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।'

জেলায় বিদ্যুতের মোট চাহিদা ৬৪ মেগাওয়াট। যার মধ্যে পিরোজপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি পাথরঘাটায় সরবরাহ করে ১১.৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ।

এমএসআরএস

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর