নোয়াখালীতে সাম্প্রতিক বন্যার ভয়াল থাবায় ঘর-বাড়ি ছেড়ে সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই নিয়েছিল অন্তত ২০ লাখ মানুষ। বন্যা শেষ হলেও জেলার ৮টির উপজেলার বেশির ভাগ এলাকা থেকে এখনো বন্যার পানি না নামায় এমন অবস্থা।
বন্যায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর অধিকাংশ আসবাবপত্র, চেয়ার-টেবিল, স্যানিটারি সরঞ্জাম, ইলেকট্রিক্যাল সরঞ্জাম, ফ্লোর, মোজাইক, কাঠের দরজা-জানালা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়াও সরে গেছে ভবন সংলগ্ন মাটি। ধসে গেছে বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সীমানা প্রাচীর।
স্কুলের একজন শিক্ষক বলেন, ‘আমাদের স্কুলের যে মেঝে তা নষ্ট হয়ে গিয়েছে। বসার বেঞ্চও ভিজে নষ্ট হয়ে গিয়েছে।’
আরেকজন বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের বাসার সামনে পানি আছে ও স্কুল আশ্রয়কেন্দ্র হওয়ায় এখনো তারা স্কুলে আসছে না।’
বন্যা পরবর্তী সময় কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম সীমিত পরিসরে চালু করা হলেও এখনো বন্ধ রয়েছে অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। শিক্ষকরা প্রতিষ্ঠানে এলেও শ্রেণিকক্ষ পাঠদান উপযোগী না হওয়ায় আসতে পারছে না শিক্ষার্থীরা।
দীর্ঘদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বাইরে থাকায় শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায়ও পড়েছে প্রভাব। সময়মতো সিলেবাস শেষ করা নিয়েও দুশ্চিন্তায় অভিভাবকরা। একজন বলেন, ‘বন্যার কারণে আমাদের বাচ্চারা পড়াশোনা করতে পারছে না। তারা স্কুলে যেতে পারছে না।’
শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী বলছেন, ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর তালিকা ইতোমধ্যে প্রস্তুত করা হয়েছে। বরাদ্দ পেলে দ্রুতই সংস্কারে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হাসান শওকত বলেন, ‘দ্রুতই সংস্কারের ব্যবস্থা করা হবে। আমরা প্রাথমিক তালিকা করেছি যেসব প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’
সাম্প্রতিক ভয়াবহ বন্যায় নোয়াখালীর ৮ টি উপজেলার ৭৬৬ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ ১ হাজার ৩২৯ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামো, আসবাবপত্র, বইপুস্তকসহ অন্যান্য জিনিস ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যেগুলো সংস্কারে প্রাথমিকভাবে প্রয়োজন হবে প্রায় ৪৬ কোটি টাকা।