ঘটনার সূত্রপাত দিঘীনালার বাজারে। হিংসার আগুনে পুড়েছে শতাধিক পাহাড়ি বাঙালির স্বপ্ন, আয় উপার্জনের একমাত্র অবলম্বন। অথচ এ বাজারেই গত ৩০ বছর সম্প্রীতি রেখে একসাথে ব্যবসা করেছেন দুই পক্ষই।
খাগড়াছড়ি দিঘীনালার বাজার। ছবি: এখন টিভি
তবে এ ঘটনাকে পুঁজি করে হঠাৎ গুজবে অস্থির হয়ে উঠে পুরো দেশ। ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে নানা রকম পুরনো ও ভিনদেশি ছবি। কোনটিতে দেখা যায় বাড়ি ছেড়ে পালাচ্ছে পাহাড়িরা, কোনটিতে অস্ত্র হাতে আঞ্চলিক সংগঠনের হুমকি, কোনটিতে বৌদ্ধ মূর্তি পোড়ানোর। রিউমার স্ক্যানার বলছে, এমন অন্তত ১৩টি ভুয়া ছবি ছড়িয়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে দেয়া হয়। স্থানীয়রা বলছেন, তিন পার্বত্য জেলায় খুব দ্রুত মোবাইল ও ইন্টারনেটে এসব ছবি ছড়িয়ে পড়ে, যা এ সংঘাতকে আরও উস্কে দেয়।
স্থানীয়দের একজন বলেন, 'যাচাই-বাছাই করে ফেসবুকে যদি আপলোড ও শেয়ার করা হয় তাহলে আমাদের জন্য এইটা ভালো।'
আরেকজন বলেন, 'মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে মানুষের মনে আতঙ্ক সৃষ্টি করা হচ্ছে। এইগুলোর কোনো সত্যতা নেই।'
দীঘিনালার ওসি নুরুল হক বলেন, ‘গত ১৯ সেপ্টেম্বর হামলার পর থেকে অন্য কোথাও নতুন করে হামলা ও আগুনের ঘটনা ঘটেনি।’
একপার্যায়ে পাহাড়ে সরকার ইন্টারনেট ও মোবাইল সংযোগ বন্ধ করে দিয়েছে এমন গুজবও ছড়িয়ে পড়ে। এভাবে ঘটনাকে নতুন মোড় দিয়ে সংঘাত তৈরির চেষ্টা করে একটি পক্ষ। এটিকে দেশি, বিদেশি ষড়যন্ত্রের অংশ মনে করছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম।
উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেন, 'সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যেমনটা দেখানো হচ্ছে তেমনটা ঘটছে না। এখানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। ব্যবসায়ী যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদেরকে ক্ষতিপূরণ দেয়ার কথা বলেছি।'
তাহলে এ ধরনের গুজব বন্ধে কী ভাবছে নতুন সরকার? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, 'পাহাড় থেকে সমতল সব জায়গায় একটি গোষ্ঠী পরিকল্পিত এ কাজ করছে, তাই জাতীয়ভাবে ফ্যাক্ট চেকিং সেল গঠন ও জড়িতদের চিহ্নিত করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।'
তবে খাগড়াছড়িতে এ সহিংসতার ঘটনায় এখনও কোন মামলা হয়নি। ফলে জড়িত কাউকে আটক করাও সম্ভব হয়নি।