শিক্ষা
দেশে এখন
0

বিশ্ববিদ্যালয়টিতে অনুমোদন না থাকলেও চলে মাস্টার্স প্রোগ্রাম

অনুমোদন ছাড়াই ভর্তি চলে মাস্টার্স প্রোগ্রামে, বিপুল অঙ্কের টিউশন ফি দিয়ে কোর্সও শেষ করে শিক্ষার্থীরা। কিন্তু বিপত্তি বাধে সার্টিফিকেট সংগ্রহের সময়। এমন অভিযোগ উঠেছে, শরীয়তপুরের জেড এইচ শিকদার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে। এমন অবস্থায় দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিসহ ক্ষতিপূরণের দাবি করেছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা।

২০১৬ সালে জানুয়ারির স্প্রিং সেমিস্টারে আইন বিষয়ে এমএ বা এলএলএম ও সেপ্টেম্বরের ফল সেমিস্টারে ইংরেজি বিষয়ে মাস্টার্সে শিক্ষার্থী ভর্তি করে শরীয়তপুরের জেড এইচ শিকদার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ। এরপর নির্ধারিত সময় শেষে এলএলএমে আটটি ব্যাচে ১০৩ জন ও ইংরেজিতে সাতটি ব্যাচে ৭৮ শিক্ষার্থী মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। কোর্স ফি হিসেবে দুই বিভাগের ১৮১ শিক্ষার্থীর কাছ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আদায় করে প্রায় ১ কোটি ৯ হাজার টাকা।

কোর্স সম্পন্ন শেষে সনদ তুলতে গিয়ে বাধে বিপত্তি। শিক্ষার্থীরা জানতে পারে মাস্টার্সের অনুমোদন নেই বিশ্ববিদ্যালয়টির। এ অবস্থায় জড়িত সবার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি ভুক্তভোগীদের।

একজন শিক্ষার্থী বলেন, 'দুইটা কোর্সের কোনো কোর্সেরই ইউজিসি থেকে অনুমোদন ছিল না। এক্ষেত্রে পরে যখন এ বিষয়ে তদন্ত হয় তখন বিষয়গুলো সামনে আসে। সেটা আমাদের না জানিয়ে ২০২৪ সাল পর্যন্ত আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিভিন্নভাবে কালক্ষেপণ করেছে।'

অন্য এক শিক্ষার্থী বলেন, 'যে যে জবে রিকুয়ারমেন্ট থাকে মাস্টার্সের সেগুলোতে আমরা অ্যাপ্লাই করতে পারি না। এটা তো আমাদের অপূরণীয় ক্ষতি।'

এমন পরিস্থিতির জন্য তৎকালীন শিক্ষক ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে দায়ী করেছেন ওই দুই বিভাগের বর্তমান শিক্ষকরা। তবে, এ নিয়ে তেমন কোনো মন্তব্য করতে রাজি নন তারা।

জেড এইচ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ইমামুনুর রহমান বলেন, 'শিক্ষার্থীদের অনেকগুলো দাবি-দাওয়া ছিল, সেগুলো তারা উপস্থিত ছিলেন। ভিসি স্যার নিজে উপস্থিত ছিলেন। সবগুলো নোট ডাউন করা হয়েছে। এখনও পুরোপুরি ডিস্কাশনটা শেষ হয়নি। সামনের সপ্তাহে আমরা আবারও বসবো।'

জেড এইচ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক সাইফুজ্জামান বলেন, 'এ বিষয়ে কথা বলতে আমরা এখন অপারগ। আগে ওদের সাথে বিষয়গুলো সমাধান হোক তারপর কথা বলা যাবে।'

বিশ্ববিদ্যালয়টির ভাইস চ্যান্সেলর জানান, এমন ঘটনায় শিক্ষার্থীদের অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আদায় করা টিউশন ফি ফেরত দেয়ার উদ্যোগ নেয়ার কথা জানান তিনি।

জেড এইচ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর ড. তালুকদার লোকমান হাকিম বলেন, 'এই মেধা এবং সময় ফিরিয়ে দেয়ার মতো সক্ষমতা আমাদের নেই। আমরা এজন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে তাদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছি। আশা করি এ দু'টি বিষয় আমরা অনুমোদন পাবো খুব শিগগিরই। তারপরই তারা অনেকেই হয়তো এই কোর্সে ভর্তি হবে।'

অনুমোদন না থাকায় ২০১৯ সালে বিশ্ববিদ্যালয়টি মাস্টার্সের কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। এখন পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ হিসেবে শিক্ষার্থীদের দেয়া হয়েছে ৩৭ লাখ ২৭ হাজার ১৬৪ টাকা।

এসএস