বলা হয়েছিল ক্ষতিগ্রস্ত মেট্রোরেল স্টেশন এক বছরের আগে চালু করা যাবে না। মেরামতে খরচ পড়বে শত কোটি টাকা। কিন্তু এক বছর নয়, চালু হচ্ছে মোটামুটি দেড় মাসের মাথায়। খরচও অত বেশি না।
বস্তুত কোটা সংস্কার আন্দোলনের মধ্যে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় মেট্রোরেলের কাজীপাড়া ও মিরপুর-১০ স্টেশন। আর এ কারণে প্রায় মাসখানেক বন্ধ রাখা হয়েছিল পুরো মেট্রোরেল। ৩৫ দিনের মাথায় পুনরায় মেট্রো চলাচল শুরু করলেও বন্ধই থাকে কাজীপাড়া ও মিরপুর-১০ স্টেশন। তখন থেকেই প্রশ্ন ছিল, কতদিন মেট্রো সুবিধা থেকে বঞ্চিত থাকতে হবে এই দুই এলাকার মানুষকে।
ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্ম আবদুর রউফ বলেন, 'ফাইনাল একটা পরীক্ষা হয়েছে, সব চেকিং চলছে। ট্রায়াল চালিয়েছি, টিকিট কাটা, টপআপ করা, কার্ড পাঞ্চ করা সব ঠিক আছে। ইনশাআল্লাহ আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যে চালু করতে পারবো।'
মেট্রোর নবনিযুক্ত এই ব্যবস্থাপনা পরিচালক জানিয়েছেন, মূলত হালকা মেরামত ও অন্যান্য স্টেশন থেকে র্যাশনিং করে যন্ত্রাংশ প্রতিস্থাপন করায় এই স্টেশনটি পুনরায় এত দ্রুত চালু করা সম্ভব হচ্ছে। এর জন্য কারিগরি সব পরীক্ষাই এরই মধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। এখন অপেক্ষা শুধু একটি তারিখের, যেটার জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে আবেদনও করা হয়েছে। ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরও জানান, উদ্বোধনের তারিখটি পেলে ঐদিনই শুক্রবার মেট্রো চালু করার ঘোষণা দেয়ারও প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে।
ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্ম আবদুর রউফ বলেন, 'আমরা অলমোস্ট রেডি। আমরা শুক্রবারেও অপারেশন এবং কাজীপাড়া স্টেশন চালু করতে প্রস্তুত আছি। এবং শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতির কাজ চলছে। আমাদের অথোরিটির নলেজ আছে, এবং আজকেই হয়তো ওনারা একটা রেজাল্ট দেবেন আশা করছি।'
কাজীপাড়া স্টেশন চালু হলেও সহসাই চালু করা যাচ্ছে না মিরপুর ১০ স্টেশন। কারণ এখানে কিছু যন্ত্রাংশ এত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যে, নতুন করে সংযোজন করতে হবে। যোগাযোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মেরামতের নামে যাতে অপ্রয়োজনীয় অর্থ ব্যয় না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক মো. হাদিউজ্জামান বলেন, 'যে দু'টি সস্টেশনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমার ধারণা, আমার লোকাল যে কারিগরি সক্ষমতা আছে, লোকাল অনেক ওয়ার্কশপ আছে, সেখান থেকেও এই যন্ত্রপাতি সংস্কার করে চালু করা সম্ভব। এক বছরের যে কথা বলা হয়েছে সেটা আসলে অতিরঞ্জিত ও রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। এবং ব্যয়ের যে কথাটা বলা হয়েছে এটাও অনেকটা রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। যে টিকিট মেশিন বলা হচ্ছে ক্ষতিগ্রস্ত, এটার বিকল্প কোনো ব্যবস্থা করেও কিন্তু এটা চালু করা যেতে পারে। স্বয়ংক্রিয়ভাবে চালু করা না গেলে, অন্য যে কোনো উপায়ে চালু করতে হবে।'
এই বিশেষজ্ঞ আরও বলেন, মেট্রোকে যুগোপযোগী করতে এটিকে বিচ্ছিন্ন একটি করিডর হিসেবে নয়, একটি নেটওয়ার্ক হিসেবে বিবেচনা করতে হবে, সবার আগে গুরুত্ব দিতে হবে নিরবচ্ছিন্ন যাত্রীসেবা নিশ্চিতের।