মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে চায়ের নেমন্তন্ন থেকে ঝড়-বৃষ্টি, কোনো কিছুতেই আটকানো যাচ্ছে না আন্দোলনরত চিকিৎসকদের। দুর্যোগ মাথায় নিয়ে মহামিছিল হলো সেন্ট্রাল পার্ক থেকে স্বাস্থ্য ভবন পর্যন্ত। তিলোত্তমাকে সুষ্ঠু বিচার পাইয়ে দিতে মরিয়া হয়ে আছে ক্ষুব্ধ জুনিয়র ডাক্তার ফোরাম। রাজপথের এই আন্দোলনের সাথে সংহতি সর্বস্তরের মানুষের।
জুনিয়র চিকিৎসকদের এই অদম্য সাহস ও মনোবলে অভিভূত খোদ তৃণমূল কংগ্রসের নেতারাও। এমন গণ আন্দোলনের এই জোয়ার আগে কখনও দেখেননি বলে মন্তব্য করেছেন আসানসোলের সংসদ সদস্য ও বলিউড তারকা শত্রুঘ্ন সিনহা। তবে টালিউড সুপারস্টার ও সংসদ সদস্য দীপক অধিকারী দেব মনে করেন, দিদি পদত্যাগ করলে দাদা আসবেন ক্ষমতায়। আন্দোলন হোক নারীদের সুরক্ষা নিশ্চিতের দাবিতে, ক্ষমতার পালাবদল কোনো সমাধান নয়।
তবে, ঘণ্টার পর ঘণ্টা মুখ্যমন্ত্রীকে বসিয়ে রেখেও আলোচনায় বসতে রাজি না হয়ে আন্দোলনকারীরা রাজ্য সরকারকে অপমান করেছে বলে মন্তব্য করেছেন রাজ্যের অর্থ, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য।
এদিন, সিজিও কমপ্লেক্স থেকে শিয়ালদা আদালত থেকে নেয়ার সময় জনরোষের মুখে টালা থানার ওসি অভিজিৎ মণ্ডল। আদলতের চারপাশে বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা আবেদন মেনে আর জি কর মেডিকেলের সাবেক অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ এবং ওসিকে তিন দিনের সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। পরবর্তী শুনানি বিশ্বকর্মা পূজার দিন, আগামী মঙ্গলবার।
তথ্য প্রমাণ লোপাটের সাথে কারা জড়িত ছিল তার তদন্ত হওয়া সবচেয়ে বেশি জরুরি বলে মনে করছে সিপিএম-ও। বিশেষ করে আর্থিক দুর্নীতির পর ধর্ষণ ও খুনের মামলায় সাবেক অধ্যক্ষ ও সংশ্লিষ্ট থানার ওসির গ্রেপ্তার যুক্তিসংগত, এমন দাবি দলের নেতাদের।
বৃষ্টিতে ভিজলে আন্দোলনকারীরা অসুস্থ হয়ে যেতে পারে, মুখ্যমন্ত্রী মমতার এমন বক্তব্যের মায়ায় ধরা দিচ্ছেন না চিকিৎসকরা। এমনকি, তদন্ত রাজ্য সরকারের হাতে নেই, সিবিআই দোষীদের শাস্তির আওতায় আনবে, এসব বলেও কর্মক্ষেত্রে ফেরত পাঠানো যাচ্ছে না আন্দোলনকারীদের। এই যখন পরিস্থিতি তখন বারবার পিছলে যাওয়া রাজ্য সরকার কীভাবে এই জনরোষ থামাবে সেদিকে নজর গোটা ভারতের।