প্রবল বেগে ছুটছে ঢলের জল। কলকল শব্দে শঙ্কিত জনপদ। ক্ষুধার্ত বন্যা গ্রাস করছে নতুন নতুন এলাকা। জনবসতি ছেড়ে জীবন রক্ষার যাত্রা জলমগ্ন পথে পথে। শরণার্থী উদ্বাস্তুর মতো প্রতিটি প্রাণের চোখে মুখে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা। উদ্ধার তৎপরতায় ব্যস্ত সেনাবাহিনীসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবক দল।
বন্যাদুর্গতরা বলেন, ‘আজকে সকালে মেয়ে বলে ভাই আমরা ছাদের উপর তাড়াতাড়ি উদ্ধার করতে আয়। এখন তো ছেলেরেও দেখিনা মেয়েকেও দেখিনা।’
আরো দুইজন বলেন, ‘বয়স্ক এবং গর্ভবতী মহিলারা এখানে আসতে পারছেন না। এখন বৃষ্টি নেই কিন্তু পানি তারপরও বাড়ছে। মাছ শস্য যা ছিল সব তলিয়ে গেছে।’
ফেনীর পর ভয়াবহ বন্যার সাক্ষী কুমিল্লার গোমতী ঘেঁষা বুড়িচংসহ ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা। বুড়বুড়িয়া বেড়িবাঁধ ভেঙে প্লাবিত গ্রামের পর গ্রাম। আক্রান্ত ১৪ উপজেলার বেশিরভাগ এলাকা বন্যা কবলিত। নারী-শিশুসহ পরিবার নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে নানা বয়সী মানুষ। আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতেও নেই পর্যাপ্ত খাবার।
স্বেচ্ছাসেবীরা বলেন, ‘পানির স্রোত এতটাই বেড়ে গেছে যেটা আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে। শুকনা খাবার ছাড়াও জামা কাপড়ও নিয়ে এসেছি।’
অন্যদিকে, ৪০ বছরের রেকর্ড ভেঙেছে চট্টগ্রামের বন্যা পরিস্থিতি। হালদার বাঁধ ভেঙে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ। নৌকা ও ভেলায় ভেসে আশ্রয়ের খোঁজে হাজার হাজার মানুষ। ঘরবসতি থেকে শুরু করে হাট-বাজার ও দোকানপাট ডুবেছে বানের জলে। হাটহাজারী, ফটিকছড়ি, রাউজান ও মীরসরাইসহ পানিবন্দি জেলার অন্তত ২ লাখ মানুষ।
চট্টগ্রামের বন্যাদুর্গতরা বলেন, ‘পানিবন্দি হাজার হাজার মানুষ এখানে। ১তলা ২ তলা সব ডুবে গেছে।’
স্বেচ্ছাসেবীরা বলেন, ‘লাইফ জ্যাকেট নিয়ে আসছি যেটা দিয়ে উদ্ধার কাজ চালাতে পারবো। প্রায় ১০ হাজার মানুষের জন্য শুকনো ও ভেজা খাবার আনা হয়েছে।’
দুর্গত এলাকায় ভেঙে পড়েছে সড়ক যোগাযোগ, বিদ্যুৎ সরবরাহ ও মুঠোফোনের সংযোগ সুবিধা। ব্যাহত হচ্ছে ত্রাণ কার্যক্রম ও উদ্ধার তৎপরতা।এতে বাড়ছে বিপর্যয়ের মাত্রা।