জুলাই মাসে সার্বিক মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়ায় ১১ দশমিক ৬৬ শতাংশ। খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল ১৪ শতাংশ, যা ১৩ বছরের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে যায়। অর্থনীতির গতি ফেরাতে নবনিযুক্ত গভর্নর আর উপদেষ্টা পর্ষদের জন্য এ পাহাড় ডিঙানো যেন বড় চ্যালেঞ্জ। যার ওপর নির্ভর করছে ঘরে বাইরের পুরো অর্থনীতির স্থিতিশীলতা। অথচ বিগত মুদ্রানীতিগুলোতে মূল্যস্ফীতি প্রাধান্য দিয়ে সুদের হার বাড়ানোও কোন প্রভাব ফেলেনি। যার কারণ হিসেবে ব্যাংক লুট, অর্থ পাচার, খেলাপী ঋণ ও টাকা ছাপানোকে দায়ি করেন ব্যবসায়ীরা।
বিশ্বমন্দার বাজারে এখন বিনিয়োগখাতও স্থবির হয়ে পড়েছে। তা নিয়ে গভর্নরের সাথে আলোচনা ও সৌজন্য সাক্ষাতে অংশ নিতে আজ (মঙ্গলবার, ২০ আগস্ট) সকাল ১১ টা থেকে আসতে শুরু করেন ব্যবসায়ী নেতারা।
আলোচনায় সুদের হার কমানোর দাবি জানালে মূল্যস্ফীতি কমে আসলে সুদের হার বিবেচনায় নেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এমন আশ্বাস পান ব্যবসায়ীরা।
বিকেএমইএ নির্বাহী মোহাম্মদ হাতেম বলেন, ‘সুদের হারের ব্যাপারে ৬ থেকে ৭ মাস সময় চেয়েছেন তিনি (গভর্নর)। মূল্যস্ফীতি কমে আসলে পরে সুদের হার বিবেচনায় নেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।’
এই মুহুর্তে তিন মাস পরিশোধ না করলে ঋণ গ্রহণকারীদের খেলাপি হিসেবে তালিকাভূক্ত করা হয়। সেটি ৬ মাস বাড়ানোর প্রস্তাব দেয়া হয় আলোচনায়।
এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, ‘যেহেতু আইএমএফের সাথে একটা চুক্তি রয়েছে। এইটা ৬ মাস সময় দেয়া হয় তাহলে ঋণ গ্রহণকারীদের খেলাপি কমে যাবে।’
ব্যবসার নামে যারা সম্পদ লুট করেছে তাদের দুর্বৃত্ত আখ্যা দিয়ে শাস্তির দাবি জানিয়েছেন সাবেক এফবিসিসিআই সভাপতি।
সাবেক এফবিসিসিআই সভাপতি আব্দুল আউয়াল মিন্টু বলেন, ‘যারা ব্যাংকগুলো লুট করেছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তি নেয়ার কথা বলে আসছি।’
ব্যবসায়ী নেতাদের সাথে বৈঠক শেষে গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর সাফ জানান মূল্যস্ফীতি কমাতে আরও কঠোর হবে মুদ্রানীতি।
গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, 'সুদের হার যথেষ্ট উচ্চ পর্যায়ে আছে। এইটাকে সময় দিলে ৬ থেকে ৭ মাসের মধ্যে আমরা মূল্যস্ফীতিকে ভালো জায়গায় নিয়ে আসতে পারবো।'
এদিকে, ব্যবসায়ী নেতাদের সাথে বৈঠক শেষে গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর সাফ জানিয়ে দিয়েছেন এস আলমের নিয়ন্ত্রণাধীন ব্যাংকগুলোকে টাকা ছাপিয়ে সহযোগিতা করা হবে না।
তিনি বলেন, 'আমরা আর তাদের সার্পোট দিবো না। কারণ তারা নিজ দায়িত্বে তাদেরকে এই পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছে। সবসময় উদ্ধার করা ঠিক না। চেষ্টা করবো এদের সংখ্যা কমাতে।'
এছাড়া ৪৩ খাতে স্থগিত প্রণোদনা পুনরায় সচলের দাবি জানিয়েছেন ব্যবসায়ী নেতারা।