নির্বাচনে নিকোলাস মাদুরোর জয় ঘোষণার পর থেকেই বিক্ষোভ শুরু হয়েছে ভেনিজুয়েলায়। সোমবার (২৯ জুলাই) কারাকাসে হাজার হাজার বিক্ষোভকারী রাষ্ট্রপতি ভবন অভিমুখে বিক্ষোভে অংশ নেন। সিএনই নিকোলাস মাদুরোর ২০২৫ থেকে ২০৩১ মেয়াদে জয় ঘোষণার পরই জনমনে দেখা দেয় অসন্তোষ।
অভিযোগ ওঠে মাদুরোর সমর্থক নিয়ন্ত্রিত নির্বাচন কমিশন পুরো ভেনিজুয়েলার ৩০ হাজার পোলিং স্টেশনের মধ্যে সব স্টেশনের ফলাফল প্রকাশ করা হয়নি। দক্ষিণ আমেরিকার এ দেশের নির্বাচনে এবার বড় ধরনের কারচুপির অভিযোগ উঠেছে। ফলাফলকে চ্যালেঞ্জ করেছেন বিক্ষোভকারীরা।
বিরোধী দল থেকে প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে দাঁড়ানো এডমান্ডো গোনলাজেসের দাবি, তারা ৭০ শতাংশের বেশি ভোট পেয়েছে। ১১ বছর ধরে দেশটির ক্ষমতায় আছেন নিকোলাস মাদুরো। অর্থনৈতিক সংকটের এমন সময় তার বিরোধিতা করে একজোট হয়েছে সব বিরোধী দল। পশ্চিম ও লাতিন আমেরিকার অনেক দেশসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় প্রতিটা পোলিং স্টেশনের নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশের জন্য ভেনিজুয়েলার সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
আর্জেন্টিনা এই ফলাফলকে অগ্রহণযোগ্য উল্লেখ করেছে। অনেক দেশই নিজেদের কূটনীতিকদের ভেনিজুয়েলা থেকে সরিয়ে নিয়েছেন। এই অস্থিরতার কারণে বুধবার পর্যন্ত পানামা আর ডমিনিকান রিপাবলিকে বাণিজ্যিক বিমান চলাচল স্থগিত করেছে দেশটির সরকার। গণতন্ত্র রক্ষায় পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন নিকোলাস মাদুরো।
মাদুরো বলেন, 'ভেনিজুয়েলার নির্বাচনী ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা আমি সংবিধান থেকেই পেয়েছি। সার্বভৌম নির্বাচন হয়েছে। কিন্তু আমি অসম্মান পেয়েছি। কারণ আমি একজন কর্মী। সাম্রাজ্যবাদ আমাকে ক্ষমা করবে না। তারা এখন ভেনিজুয়েলাকে অস্থিতিশীল করতে উঠে পড়ে লেগেছে। গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে কিছুই সহ্য করবো না। আমার কোনো দুর্বলতা নেই।'
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে জলকামানসহ সেনাবাহিনী আর পুলিশ সদস্যরা মাঠে নেমেছে। রাষ্ট্রপতি ভবনের সামনে যেতে বিক্ষোভকারীদের বাঁধা দিচ্ছে পুলিশ। বিক্ষোভকারীদের মুখে স্লোগান স্বাধীনতা, স্বাধীনতা। তাদের দাবি সরকারের পতন। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে নিক্ষেপ করা হয়েছে টিয়ার শেল। দেশটির ন্যাশনাল ইলেক্টোরাল কাউন্সিল জানায়, গোন্দালেজ ৪৪ শতাংশ ভোট পেয়েছেন যেখানে মাদুরো ৫১ শতাংশ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন।
উত্তরসূরি হুগো শাবেজের পর ২০১৩ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ভেনিজুয়েলার ক্ষমতায় আছেন প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো। তার সময়ে অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতায় দেশ ছেড়েছেন লাখ লাখ মানুষ। যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ অনেক দেশের নিষেধাজ্ঞায় বিপর্যস্ত জ্বালানি খাত এখনও ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি।