ফ্রাঞ্চাইজ টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের আমূল পরিবর্তন এনেছে। প্রতিভাবান ক্রিকেটারদের জন্য ডলার আকাশে বাতাসে উড়ছিলো। চাইলেই বস্তায় বস্তা ডলারের ভাণ্ডার সমৃদ্ধ করতে পারতেন হয়তো। কিন্তু, লাল বলের ক্রিকেটকেই ভালোবেসেছেন। ডিউক বলের সঙ্গে সখ্যতা গড়েছেন। টেস্ট ক্রিকেটকে যখন প্রতিষ্ঠিত ক্রিকেটাররা বা পেসাররা এড়িয়ে গেছেন অর্থের জন্য। জিমি সেখানে নিজে সঁপে দিয়েছেন। ৯ বছর খেলেননি সাদা বলের ক্রিকেট! ৪২ বছর বয়সী জিমি শুধু টেস্ট ক্রিকেটে নিবেদন রথী মহারথীদের পেসারদের ছাপিয়ে গেছেন।
ক্রিকেট ধরণীতে কোনো পেসার ৭০০ ক্লাবে নেই। একমাত্র জিমি ছাড়া। তার ওপরে আছেন দুজন কিংবদন্তি স্পিনার শেন ওয়ার্নার ৭০৮ ও মুত্তিয়া মুরালিধরন ৮০০! টেস্টে পেসারদের মধ্যে সর্বাধিক আর সব মিলিয়ে তৃতীয়। চতুর্থ উইকেট শিকারের দিকেও আরেক স্পিনার অনিল অনিল কুমলের পর দ্বিতীয় পেসার যিনি সর্বাধিক উইকেট শিকারের তালিকায় পঞ্চম স্থানে তারই সতীর্থ স্টুয়ার্ট ব্রড ৬০৪ উইকেট।
দারুণ সব স্পেল উপহার দেয়া অ্যান্ডারসন ইনিংসে ৩২ বার পাঁচ আর ৩ বার শিকার করেছেন ১০ বার বেশি উইকেট। শচীনের ২০০ টেস্টের পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৮৮ টেস্ট খেলেছেন। সুশৃঙ্খল জীবনযাপন, ক্রিকেটের প্রতি নিবেদন আর নিষ্ঠার কারণে বদলে যাওয়া ক্রিকেট বাণিজ্যের এই দুনিয়ায় 'জেমস মাইকেল অ্যান্ডারসন' হয়ে থাকবেন আগামী প্রজন্মের পেসার জন্য জ্বলন্ত উদাহরণ।
২০১৫ সালের পর সীমিত ওভারের ক্রিকেট খেলেননি। যে লর্ডসে ২০০৩ সালে শুরু সেখানেই ক্যারিয়ার দাড়ি। ২১ বছরে ৪০ হাজারেরও বেশি লাল বলের শৈল্পিক ডেলিভারিতে শিকার ৭০৪ উইকেট! যা আর কেউই চাইলেও তাকে ছুঁতে পারেন না। হ্যাঁ পারবে না। এক কথায় অকল্পনীয়।
কারণ ক্রিকেটের ধরন বদলেছে, ডলার আর পাউন্ড আকাশে বাতাসে উড়ছে। তাই কোনো পেসার আর কি চাইলেও ছুঁতে পারবে জিমি নামক হিমালয়কে? না কোনো সম্ভাবনাই দেখছি না। হার্ড ওয়ার্ক আর ওয়ার্কলোড এই দুই এর সমন্বয়ে সুলতান অফ সুইং ওয়াসিম আকরামের পর কিং অফ সুইং উঠেন জিমি অ্যান্ডারসন।
কিন্তু টেস্ট ক্রিকেটে ওয়াসিম আকরাম, গ্লেন ম্যাকগ্রা, ওয়ালশরা যতটা লাইমলাইটে এসেছিলেন। ততোটা কি খ্যাতি পেয়েছেন অ্যান্ডারসন। এ নিয়ে দ্বিমত দ্বিধা আছে। যে মানুষ টা কিংবদন্তি সব পেসারদের টপকে গেলেন সবার ওপরে সেই জিমি তো মেঘে ঢাকা জ্যোৎস্না!