ইরানের সবচেয়ে সস্তা গাড়ি 'দ্য প্রাইড'। তেহরানভিত্তিক প্রতিষ্ঠান সাইপা ১৯৯৩ সালে প্রথম বাজারে নিয়ে আসে গাড়িটিকে। নিম্নমানের পাশাপাশি নিরাপত্তা ত্রুটি থাকায় দ্য প্রাইডকে চলন্ত কফিনের সঙ্গে তুলনা করেন ইরানিরা।
মাত্র ৬ হাজার ডলার মূল্যের গাড়িটি একদশক আগে কেনার জন্য একজন ব্যক্তিকে খরচ করতে হতো বার্ষিক আয়ের ১.৬ গুণ অর্থ। বর্তমানে অর্থ গুনতে হচ্ছে বার্ষিক আয়ের ৩ গুণ। অর্থাৎ সবচেয়ে সস্তা মডেলের গাড়িটি পরিণত হয়েছে বিলাস পণ্যে। চলন্ত কফিনটিকে নিয়ে আলোচনার কারণ অর্থনৈতিক দুরবস্থা।
ইরানের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর থেকেই মূল্যস্ফীতির সঙ্গে বাড়তে থাকে জীবনযাত্রার ব্যয়। ২০১৫ সালে পারমাণবিক চুক্তি স্বাক্ষরের পরবর্তী তিন বছর দেশটিতে মূল্যস্ফীতি ছিলো এক অঙ্কের ঘরে। চুক্তি ভেস্তে যাবার পর যা কখনোই নামেনি আগের পর্যায়ে।
অর্থনৈতিক দুরাবস্থার মধ্যেই মধ্যপ্রাচ্যের দেশটিতে চলছে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে চুক্তি পুনর্বহালের অঙ্গীকার করেছেন সংস্কারপন্থী প্রার্থী মাসুদ পেজেশকিয়ান। অর্থনীতির চাকা ঘোরার আশায় প্রথম পর্বের ভোটগ্রহণে সর্বোচ্চ ১০ লাখের বেশি ভোটারের সমর্থন ছিলো পাঁচবারের আইনপ্রণেতার প্রতি। অনেক ইরানির আশা, দ্বিতীয় পর্বের ভোটেও চমক অব্যাহত রেখে প্রেসিডেন্টের আসনে বসবেন ৬৯ বছর বয়সী এই নেতা।
প্রথম পর্বের ভোটগ্রহণে পেজেশকিয়ান ছাড়া বাকি ৩ প্রার্থীই ছিলেন রক্ষণশীল। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলে সর্বোচ্চ নেতার প্রতিনিধিত্বকারী সাঈদ জালিল পান ৯০ লাখ ৪০ হাজার ভোট। বাকি দুই প্রার্থীর সম্মিলিত ভোট ছিলো ৩৫ লাখের বেশি। বিশ্লেষকদের ধারণা, রক্ষণশীল জনগণের ভোট যেতে পারে জালিলির ঘরে। এতে ম্লান হতে পারে পশ্চিমাদের সঙ্গে ইরানের সম্পর্ক উন্নয়নের সম্ভাবনা।