বাজেটকে কেন্দ্র করে প্রতি বছর নানা পণ্যের দাম বাড়ে। এ বছরও সেটির ব্যত্যয় ঘটেনি। বাজারে আগেভাগেই অনেক পণ্যের দাম বেড়েছে। তবে সরকার বলছে এ বাজেট মূল্যস্ফীতি কমানোর বাজেট।
বেলায়েত হোসেন নামের একজন বাজেট বক্তৃতায় নিত্যপণ্যের কর কমার কথা শুনে খুশি মনে বাজারে ঢুকেন। কিন্তু সেই খুশি মুহূর্তেই বিষাদে রুপ নেয়। গত সপ্তাহে যে পেঁয়াজ কিনেছিলেন ৭০ টাকায় সেটির দাম এখন ৮০ টাকা। তাহলে বাজেটের ঘোষণা অনুযায়ী এক শতাংশ কর কমলে আগের দামে কি ফিরে যেতে পারবে পেঁয়াজ? এটাই এখন বেলায়েত হোসেনের প্রশ্ন।
তিনি বলেন, 'বাজেটের ঘোষণা অনুযায়ী ভেবেছিলাম বাজারে জিনিসের দাম কমবে। কিন্তু দাম উল্টো বেড়ে গেছে। ৭০ টাকার পেঁয়াজ ৮০ টাকা হয়ে গেছে।'
২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে মূল্যস্ফীতির লাগাম টানতে অন্তত ২৭ অত্যাবশ্যকীয় নিত্যপণ্যে উৎসে কর কমিয়ে ১ শতাংশ করা হচ্ছে। যার মধ্যে রয়েছে- পেঁয়াজ, রসুন, মটর, ছোলা, চাল, গম, আলু, মসুর, আদা, হলুদ, শুকনা মরিচ, ডাল, ভুট্টা, ময়দা, আটা, লবণ, গোলমরিচ, এলাচ, দারচিনি। তাতে স্বস্তি বাড়ার আশা নিত্যপণ্যের বাজারে। কিন্তু দাম কমবে কিনা এ নিয়ে ক্রেতাদের মনে রয়েছে শঙ্কা।
বাজারে আসা এক ক্রেতা বলেন, 'বাজারের পর্যবেক্ষণ একটা বড় ব্যাপার। যেটা আমরা ওইভাবে দেখতে পাই না। কর কমানোর পরও দাম বেড়ে গেছে। বাজেটের কোনো প্রভাব বাজারে দেখিনি।'
দাম কমালেই হবে না, বাজার নিয়ন্ত্রণে নজরদারি বাড়ানোর পাশাপাশি সিন্ডিকেটের শক্তি কমাতে ব্যবস্থা নিতে হবে বলে জানান অর্থনীতিবিদ ড. নজরুল ইসলাম। তিনি বলেন, 'যে পণ্যের দাম ৫ শতাংশ কমে যাওয়ার কথা, সেটার দাম একই রাখা হচ্ছে। কিন্তু যেটার দাম ২ শতাংশ বাড়ার কথা সেটা ৫ শতাংশ বাড়িয়ে দিচ্ছে। যারা এটা করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে এটা হতেই থাকবে।'
অন্যদিকে বাজেটে যেসব পণ্যে নতুন করে কর আরোপ করা হয়েছে সেই সব পণ্যে এখন থেকেই গুণতে হচ্ছে বাড়তি দাম। কর বাড়ার তালিকায় আছে সিগারেট, শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র, রেফ্রিজারেটর, মোবাইল সিম, টিউবলাইট, এলইডি বাল্ব, আইসক্রিমসহ ফলের জুস।
কোরবানিকে কেন্দ্র করে বাড়ছে ফ্রিজ বিক্রি। বাজেট ঘোষণার পর থেকেই ফ্রিজের ক্ষেত্রে পণ্যভেদে দাম বেড়েছে ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা। দাম বেড়েছে এসিতেও। কিন্তু বাজেটকে কেন্দ্র করে অনেক পণ্যে দাম বৃদ্ধির প্রভাব পড়ার কথা জুলাই মাসে। অথচ এখন থেকেই বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে অনেক পণ্য।
বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে কমবে মূল্যস্ফীতির চাপ। তাই এখন বাজার নিয়ন্ত্রণ করাই হবে সরকারের বড় চ্যালেঞ্জ।