পরিবেশ ও জলবায়ু
বিদেশে এখন

রেকর্ড তাপপ্রবাহের কবলে যুক্তরাষ্ট্র

এবার খানিকটা আগেই যুক্তরাষ্ট্রের আবহাওয়ায় হানা দিয়েছে তাপপ্রবাহ। গরমে স্বস্তি পেতে পানি নিয়ে খেলা যায় এমন পার্কে ভিড় করছে মানুষ। আগামীকাল বৃহস্পতিবার (৫ জুন) তাপমাত্রার পারদ ১১১ ডিগ্রি ফারেনহাইট ছাড়িতে যেতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অফিস। এদিকে বন্যায় ধুঁকছে জার্মানির দক্ষিণাঞ্চল, ব্রাজিলের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য এবং শ্রীলঙ্কার ১৩টি জেলা।

তাপপ্রবাহ থেকে খানিকটা রেহাই পেতে শীতলতার জন্য সন্তানদের নিয়ে ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের পার্কে পার্কে ঘুরে বেড়াতে দেখা যাচ্ছে অভিভাবকদের। এবার আগেভাগেই তাপমাত্রার পারদ বাড়তে থাকায় দেশটির দক্ষিণ-মধ্য এবং দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে থাকা সব রাজ্যের একই হাল।

এরমধ্যে উত্তর ক্যালিফোর্নিয়া থেকে দক্ষিণ অ্যারিজোনা হয়ে দক্ষিণ টেক্সাস পর্যন্ত এক কোটি ৯০ লাখ বাসিন্দা আরও বেশি তাপমাত্রার শিকার হবে বলে সতর্কতা জারি করেছে দেশটির আবহাওয়া অফিস। বৃহস্পতিবার তাপমাত্রা ১১১ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা ৪৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে যাবে বলে পূর্বাভাসও দেয়া হয়েছে। যার ধাক্কা লাগতে শুরু করেছে মঙ্গলবার থেকেই। তাই গ্রীষ্মের তিন মাস তাপের লড়াই নিয়ে চিন্তিত সাধারণ মানুষ।

গরমে পার্কে এসে স্বস্তি অনুভব করছেন ক্যালিফোর্নিয়ার বাসিন্দারা। তাদের একজন বলেন, 'গরমের মধ্যে এখানে এসে ভালো লাগছে। তবে সম্ভবত গরম আরও বাড়বে। পূর্বাভাসেও তাই দেখা যাচ্ছে। সামনের দিনগুলোতে পরিস্থিতি কেমন হবে তা নিয়ে চিন্তিত। আপাতত আমরা শীতল থাকার চেষ্টা করছি।'

এদিকে বন্যার পানিতে তলিয়ে আছে জার্মানির দক্ষিণাঞ্চল। দানিউব নদীর পানির স্তর ১০ মিটার বাড়ায় আশপাশের শহরগুলোতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। সবচেয়ে ঝুঁকিতে রয়েছে দক্ষিণ জার্মানির পাসাউ শহর। ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে কয়েক হাজার বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হয়েছেন। আটকে পড়াদের উদ্ধার করতে গিয়ে প্রাণ গেছে উদ্ধারকর্মীর।

এক উদ্ধারকর্মী বলেন, 'পাসাউ শহরে আমার অনেক আত্মীয় বসবাস করে। তাদের নিয়ে চিন্তায় আছি। বন্যা পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে, তাই সব জায়গায় সতর্কতা অবলম্বন করা করছি। বিভিন্ন জায়গায় ভ্রাম্যমাণ টিম রয়েছে। সবাই বন্যা প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় কাজ করে যাচ্ছে। প্রাথমিক সুরক্ষা ব্যবস্থায় পাসাউ শহরে এখন পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতি তুলনামূলক কম।'

অতি বৃষ্টিতে সৃষ্ট বন্যা ও ভূমিধসে বিপর্যস্ত শ্রীলঙ্কা। ২৫টি জেলার মধ্যে ১৩টি জেলাই পানিতে তলিয়ে আছে। বেশ কয়েকটি নদীর পানির স্তর উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌঁছেছে। বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হওয়ার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত এক লাখ ৬০ হাজার বাসিন্দা। বন্যা ও ভূমিধসে প্রাণও হারিয়েছেন অনেকে। পরিস্থিতি উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

রোববার বৃষ্টির সাথে সাথে পানির স্তরও বাড়তে শুরু করে। বাসিন্দারা তাদের জিনিসপত্র নিয়ে নিরাপদ এলাকায় চলে যেতে শুরু করে। এখনও পানির স্তর ছয় থেকে সাত ফুট।

এদিকে একমাসের বেশি সময় ধরে বন্যায় ধুঁকছে ব্রাজিলের রিও গ্র্যান্ডে দো সোল রাজ্য। যেখানে প্রাণহানি ১৭০ জনেরও বেশি এবং বাস্তুচ্যুত হয়েছেন ৫ লাখ ৮০ হাজার মানুষ। এ অবস্থায় স্থানীয় কর্তৃপক্ষ এটিকে এই অঞ্চলের ইতিহাসে সবচেয়ে খারাপ বিপর্যয় বলে বর্ণনা করেছে।

এভিএস

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর