শিল্প-কারখানা
অর্থনীতি

সিমেন্টের বস্তা থেকে তৈরি হচ্ছে পণ্য, বছরে লাখ টাকা আয়

ফেলে দেয়া সিমেন্টের বস্তা থেকে পণ্য তৈরি ও তা বিক্রি করে সিলেটের ঘাসিটুলা এলাকার বেশ কয়েকটি পরিবার লাভবান হচ্ছেন। গত ৬ বছরে বেকারত্ব ঘুচিয়ে এসব পরিবারে উপার্জনের একমাত্র উৎস হয়ে দাঁড়িয়েছে সিমেন্টের বস্তা। আবার বস্তা থেকে নানা ধরনের পণ্য তৈরি করে কেউ কেউ বছরে লাখ টাকার বেশি আয় করছেন।

সুরমা নদীর ঘোলাজলে কর্মব্যস্ত সিলেট নগরীর মহিন মিয়া। পরিত্যক্ত সিমেন্টের বস্তা ধুয়ে মুছে পরিষ্কার করছেন তিনি। প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত এই কাজ করেন তিনি। তিনি বলেন, ‘এ কাজই আমাকে বেকারত্ব থেকে মুক্তি দিয়েছে।’

সিলেটের কোল ঘেঁষে বয়ে চলা সুরমা নদীর তীরে এই কর্মযজ্ঞ প্রতিদিনের। এ পেশাতেই নির্ভর করে অনেকে সুরমার পাড়ে বসতভিটা গড়ে তুলেছেন। অন্তত শতাধিক পরিবার সিমেন্টের খালি বস্তা সংগ্রহ করে। এদের কেউ সেই বস্তা ধোয়া-মোছার কাজ করেন আবার কেউ বা সেলাই প্রক্রিয়ায় যুক্ত হয়ে নানান ধরনের ত্রিপল, ব্যাগসহ নানা উপকরণ তৈরি করেন।

এদের বেশিরভাগই খেটে খাওয়া মানুষ, নানা সংকটে পড়ে এই পেশা বেছে নিয়েছেন। এখানে পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও সমানভাবে কাজ করেন।

নারী শ্রমিকরা বলেন, ‘আমরা সিমেন্টের বস্তা থেকে ব্যাগ তৈরির কাজ করি। একটি ব্যাগ তৈরি করে আমরা দেড় টাকা পাই। এর মধ্যে আমাদের মেশিন খরচসহ বিদ্যুৎ বিলও আছে।’

চট, ত্রিপল, গ্রো ব্যাগ ও বাজারের ব্যাগের প্রচুর চাহিদা থাকায় একই এলাকায় ৪০টির বেশি পাইকারি দোকান গড়ে উঠেছে। একেকজন ব্যবসায়ীর বিনিয়োগও কম নয়। কোন কোন ব্যবসায়ী কয়েক লাখ টাকা বিনিয়োগ করে বেশ লাভবান হচ্ছেন।

এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘সারা বছরের মধ্যে দুই মাস এই বস্তার ব্যাগের বেচাকেনা বেশি হয়। এছাড়া প্রতিমাসেই কমবেশি বেচাকেনা হচ্ছে। আর দিন দিন অনেকে এই ব্যবসায় যুক্ত হচ্ছেন।

সিলেট উইমেন চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি স্বর্ণলতা রায় বলেন, ‘সিলেটে উৎপাদিত এসব পণ্যের বেশ চাহিদা রয়েছে। অনেক মানুষ এই কাজের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছেন। একইসঙ্গে এসব পণ্য সিলেটে সম্ভাবনাময় খাত হয়ে উঠছে।’

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর