ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের বরাত দিয়ে দ্য গার্ডিয়ান বলছে, পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ ইরানের প্রেসিডেন্টকে বহনকারী বিমানটি বিধ্বস্ত হয়ে সেখানে থাকা সবাই নিহত হয়েছেন। ইরানের প্রেসটিভি, মেহের নিউজ ও তাসনিম নিউজ খবরটি নিশ্চিত করেছে।
ইরানের আধা সরকারি বার্তা সংস্থা মেহের নিউজের বরাত দিয়ে আল জাজিরা বলছে, রাইসি এবং ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির আবদোল্লাহিয়ান মারা গেছেন। সেইসঙ্গে হেলিকপ্টার বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহত হয়েছেন পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের গভর্নর মালেক রহমাতিসহ অন্যান্যরা।
ইরানের কর্মকর্তার বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে মারা গেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তবে ইরানি কর্মকর্তার নাম প্রকাশ করে নি রয়টার্স।
ইরানের প্রেসিডেন্ট ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ বিধ্বস্ত হেলিকপ্টারে থাকা সবাই নিহত হয়েছে বলে খবর প্রকাশ করেছে বিবিসিও।
এর আগে ইরানের কর্মকর্তারা জানান, প্রেসিডেন্টকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে। ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন জানিয়েছে, হেলিকপ্টারটি পাহাড়ের চূড়ায় বিধ্বস্ত হয়েছে। যদিও দুর্ঘটনার কারণ নিয়ে এখনও সরকারিভাবে কিছু জানানো হয় নি।
হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় প্রেসিডেন্ট, পররাষ্ট্রমন্ত্রী, আজারবাইজানের গভর্নর ছাড়াও ছিলেন নিহত হয়েছেন, হোজ্জাতুল-ইসলাম আলে-হাশেম তাব্রিজের জুমার নামাজের ইমাম আয়াতুল্লাহ রাইসি, পাইলট, কো-পাইলট, ক্রু প্রধান, নিরাপত্তা দলের প্রধান এবং একজন দেহরক্ষী এবং আরও কয়েকজন সঙ্গী।
স্থানীয় সময় সোমবার সকালে তুর্কির পাঠানো ড্রোনের মাধ্যমে রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারটির ধ্বংসাবশেষস্থল চিহ্নিত করা হয়। তারপর সেখানে উদ্ধারকারীরা পৌঁছান বলে জানায় ইরানের রেড ক্রিসেন্ট। দুর্ঘটনাস্থলটি ইরানের পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের তাভিল নামক একটি গ্রামের তিন কিলোমিটার উত্তরে। মূলত দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে উদ্ধার তৎপরতায় দেরি হয়েছে বলে জানা গেছে।
আজারবাইজানের সীমান্তবর্তী এলাকায় একটি জলাধার প্রকল্প উদ্বোধনের পর তারবিজে ফেরার পথে ইরানের প্রেসিডেন্টকে বহন করা হেলিকপ্টারটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থাগুলো জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট রাইসি বেল টু-ওয়ান-টু মডেলের হেলিকপ্টারে ছিলেন। যা যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি।
১৯৬০ সালের ১৪ ডিসেম্বর জন্মগ্রহণ করেন ইব্রাহিম রাইসি। ইরানের রাজনীতিবিদের পাশাপাশে মুসলিম আইনবিদও ছিলেন তিনি। ২০২১ সালের নির্বাচনে ইরানের রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি। রাইসি ইরানের বিচার ব্যবস্থায় বিভিন্ন পদে কাজ করেছেন, যেমন ডেপুটি প্রধান বিচারপতি (২০০৪-২০১৪), অ্যাটর্নি জেনারেল (২০১৪-২০১৬), এবং প্রধান বিচারপতি (২০১৯-২০২১)। তিনি ১৯৮০ এবং ১৯৯০ এর দশকে তেহরানের প্রসিকিউটর এবং ডেপুটি প্রসিকিউটরও ছিলেন।