মধ্যপ্রাচ্য
বিদেশে এখন
0

মাসুদ পেজেশকিয়ান যুগে কেমন হতে পারে ইরানের পররাষ্ট্রনীতি?

ইরানের নতুন প্রেসিডেন্টের হাত ধরে কেমন হতে পারে দেশটির পররাষ্ট্রনীতি? হামাস-ইসরাইল যুদ্ধেই বা ইরানের ভূমিকা কতটুকু কমতে পারে? সংস্কারবাদী নেতা মাসুদ পেজেশকিয়ান ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর নানা মহলে ঘুরপাক খাচ্ছে এসব প্রশ্ন।

প্রেসিডেন্ট রাইসির হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় মৃত্যু হওয়ায় নতুন প্রেসিডেন্ট পেল ইরান। প্রেসিডেন্ট হিসেবে সংস্কারপন্থি মাসুদ পেজেসকিয়ানকে বেছে নিয়েছেন ইরানের জনগণ। যার মুখে সবসময় শোনা যায় পশ্চিমাদের সঙ্গে সখ্যতা বাড়ানোর বুলি।

তার জয়ের পরই আন্তর্জাতিক মহলে নানা গুঞ্জন। যার মধ্যে বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে হামাস-ইসরাইল যুদ্ধে ইরানের ভূমিকা নিয়ে। গেল ১০ মাস ধরে চলা হামাস-ইসরাইল যুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের জোরালোভাবে সমর্থন দিয়ে আসছে ইরান। সেই সঙ্গে হামাসকে সামরিক ও অর্থনৈতিক সহায়তা দিয়ে আসছে তারা। তবে ইরানের নতুন প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান সশস্ত্র এ গোষ্ঠীটির কতটুকু পাশে থাকবেন? তার শাসনে এ যুদ্ধে বড় ধরনের পরিবর্তন আসবে কিনা তা নিয়ে সন্দিহান অনেকে।

যদিও ইরানের সাংবিধানিক আইন অনুযায়ী, দেশটির প্রতিরক্ষা বিভাগের দায়িত্ব সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আল খামেনি'র হাতে। এক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট নাক গলাতে পারবে না। সেক্ষেত্রে হামাসকে সহায়তায় তেহরান বাধার সম্মুখীন হবে না বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

জাপানের মধ্যপ্রাচ্যে রাজনীতি বিশ্লেষক থানাকা কইচিরো বলেন, 'ইসরাইলের বিরুদ্ধে ইরানের অবস্থানে কোনো পরিবর্তন আসবে না। কারণ এসব বিষয় ইরানের সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে। তবে পশ্চিমা ও ইসরাইলের বিরুদ্ধে কিছুটা শিথিল হতে পারে ইরানের নতুন প্রেসিডেন্ট। যদিও দেশটির পররাষ্ট্র নীতিতেও তেমন পরিবর্তন আনবে না।'

পররাষ্ট্রনীতিতে তেমন পরিবর্তন না আসলেও বড় ধরনের পরিবর্তন আসতে পারে ইরানের পারমাণবিক ইস্যুতে। কারণ সংস্কারবাদী এই নেতার চাওয়া, পশ্চিমাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তুলে ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নেয়া।

থানাকা কইচিরো আরও বলেন, 'পারমাণবিক ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে সমঝোতায় পৌঁছানোর চেষ্টা করবে ইরান। ২০১৮ সালে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যে চুক্তি থেকে সরে যায়, তা পুনরায় শুরু করতে কাজ করতে পারেন নতুন প্রেসিডেন্ট। যদিও বিষয়টি পুরোপুরি নির্ভর করছে অপরপক্ষ বিষয়টিকে কীভাবে নেবে তার ওপর।'

বৈদেশিক সম্পর্ক ইস্যুর পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ সংস্কারে কাজ করবেন মাসুদ পেজেশকিয়ান। নবনির্বাচিত প্রেসেডেন্টের কাছে এটাই প্রত্যাশা দেশটির সাধারণ জনগণের।

এক ইরানি নাগরিক বলেন, 'ইরানের মেয়েরা যেন নির্ভয়ে রাস্তায় চলাচল করতে পারে। তাদের কেউ উঠিয়ে নিয়ে যাবে এই ভয় যেন কারও ভেতরে কাজ না করে, এটাই একমাত্র চাওয়া। পেজেশকিয়ান সরকার গঠনের পর ইরানের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা কিছুটা হলেও প্রত্যাহার হবে। এটাই সাধারণ মানুষের জন্য মঙ্গলজনক।'

চিকিৎসক মাসুদ পেজেসকিয়ানের হাত ধরে নতুন আলোর মুখ দেখবে ইরান। এটাই প্রত্যাশা দেশটির সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের।