স্বাস্থ্য
বিদেশে এখন
0

আক্রান্তের ৭ বছর আগেই শনাক্ত হবে ক্যান্সার: অক্সফোর্ড

আক্রান্ত হওয়ার ৭ বছর আগেই ক্যান্সার শনাক্ত সম্ভব? শুধু রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে এটি করা সম্ভব বলে দাবি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের। তারা বলছে, রক্তের প্রোটিন বিশ্লেষণের মাধ্যমে প্রতিরোধ করা যাবে ক্যান্সার।

বিশ্বজুড়ে অন্যতম ঘাতকব্যাধি হিসেবে পরিচিত ক্যান্সার। মানবদেহে অনিয়ন্ত্রিত কোষ বিভাজনের মাধ্যমে উৎপত্তি ঘটে এই রোগের। ব্যয়বহুল হওয়ায় বেশিরভাগ রোগী থেকে যাচ্ছে ক্যান্সারের চিকিৎসা সেবার বাইরে। এখন পর্যন্ত রোগটির চিকিৎসায় সুর্নিদিষ্ট কোনো ওষুধ আবিষ্কার করতে পারেননি বিজ্ঞানীরা। তবে রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে আক্রান্তের ৭ বছর আগেই শনাক্ত করা যাবে ক্যান্সারের উপস্থিতি।

অবিশ্বাস্য হলেও যুগান্তকারী এই গবেষণা করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন ব্রিটেনের একদল গবেষক। ন্যাচার কমিউনিকেশন জার্নালে উল্লেখ করা হয় দুটি পরীক্ষার কথা। প্রথম পরীক্ষায় ব্রিটেনের বায়োব্যাংক থেকে ৪৪ হাজার ব্যক্তির রক্তের নমুনা সংগ্রহ করেন অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা। যাদের মধ্যে প্রায় ৫ হাজার ব্যক্তি আক্রান্ত ছিলেন ক্যান্সারে। মূলত ১৯ ধরনের ক্যান্সারের ক্ষেত্রে সংযোগ রয়েছে ৬০০ এর বেশি প্রোটিনের। রক্ত পরীক্ষার ফলাফলে দেখা যায়, যে ব্যক্তিরা ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছেন, তাদের দেহে ৭ বছর আগে পরিবর্তিত হয় ১০৭টি প্রোটিন।

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রুথ ট্রেভিস বলেন, 'আমরা এমন কিছু প্রোটিন খুঁজে পেয়েছি যা ক্যান্সার কোষ তৈরিতে দায়ী। এর মাধ্যমে আগেই ক্যান্সার নির্ণয় করা সম্ভব। দ্বিতীয় পরীক্ষার মাধ্যমে ক্যান্সারের প্রাথমিক ধাপে কী হয়, তা বুঝতে পেরেছি। তাই বায়োলজি পরিবর্তনের মাধ্যমে ক্যান্সার প্রতিরোধ সম্ভব।'

অন্যদিকে দ্বিতীয় পরীক্ষায় ৩ লাখ ক্যান্সার আক্রান্ত ব্যক্তির রক্তে প্রোটিনের বিশ্লেষণে দেখা যায়, ৪০ ধরনের প্রোটিন ৯ ধরনের ক্যান্সার কোষ সৃষ্টিতে দায়ী। তাই প্রোটিনগুলো পরিবর্তনের মাধ্যমে ক্যান্সার কোষ তৈরির আশঙ্কা কমিয়ে আনা সম্ভব।

রুথ ট্রেভিস আরও বলেন, 'আপনার কাছে যদি লাখখানেক লোকের রক্তের নমুনা থাকে, ১৫ বছর পর তাদের কারও ক্যান্সার হলে রক্তের উপাদানগুলোর পার্থক্য খুঁজে বের করা সম্ভব। এতে প্রাথমিক ধাপেই আপনি ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে পারবেন।'

জাতিসংঘের তথ্য বলছে, প্রতিবছর ক্যান্সারের বিভিন্ন ধরনে আক্রান্ত হয়ে অকালে ঝরে যায় ১ কোটি প্রাণ। প্রতি ৬ জনের মধ্যে ১ জনের মৃত্যুর কারণ ক্যান্সার হওয়ায় সবচেয়ে বড় স্বাস্থ্য ঝুঁকি হিসেবে বিবেচনা করা হয় এই রোগকে। তবে নতুন গবেষণার মাধ্যমে মৃত্যুর হার কমিয়ে আনার বিষয়ে আশাবাদী গবেষকরা।

এভিএস