এশিয়া
বিদেশে এখন
0

ভারতে তৃতীয় পর্বের নির্বাচনেও কম ভোটার উপস্থিতি

ভারতের লোকসভা নির্বাচনের প্রথম ও দ্বিতীয় পর্বের মতো তৃতীয় পর্বেও ভোটার উপস্থিতি অনেকটাই কম ছিলো। ভারতের হার্টল্যান্ড খ্যাত হিন্দিভাষা অধ্যুষিত রাজ্যগুলোয় ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) জনপ্রিয়তা কমছে।

২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে পাকিস্তানবিরোধী প্রচারণাকে নির্বাচনী কৌশল হিসেবে ব্যবহার করে বিজেপি। সেবার ভোটারদের জাতীয়তাবাদে উদ্বুদ্ধ করে ক্ষমতায় যাওয়ার ম্যান্ডেট পায় মোদি সরকার।

২০১৯ সালের নির্বাচনের আগে অযোদ্ধায় রামমন্দির পুনঃনির্মাণের প্রতিশ্রুতি ব্যবহার করা হয়। ৫ বছর পর বিজেপি ব্যবহার করছে 'ম' আদ্যাক্ষরের তিনটি শব্দ- মাটন, মোঘল ও মঙ্গলসূত্র। তবে ধর্মীয় বিভেদের রাজনীতি কতটা সফল হবে, তার জন্য ৪ জুন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। তিন পর্বের নির্বাচন শেষে ভোটার উপস্থিতি দেখে উদ্বিগ্ন গেরুয়া শিবির।

ভারতের ১১টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ৯৩টি আসনে তৃতীয় পর্বের ভোটগ্রহণ হয় মঙ্গলবার। যেখানে উপস্থিতির হার ছিলো ৬৪.৪ শতাংশ। যা গেলবারের চেয়ে প্রায় ৩ শতাংশ কম। প্রথম ও দ্বিতীয় পর্বেও প্রায় ৪ শতাংশ কম ছিলো ভোটার উপস্থিতি। সবশেষ পর্বে সবচেয়ে বেশি ভোটার ছিল আসামে, উত্তর প্রদেশে ছিল সবচেয়ে কম। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে ৯৩টির মধ্যে বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট ৮০টি আসনে জয় পায়।

এরই মধ্যে বিজেপির ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত গুজরাটের একটি আসন থেকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় দলটির প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছেন। তবে কেন্দ্রীয় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ বিষয়ক মন্ত্রীর বিরূপ মন্তব্যে চটেছে রাজপুত সম্প্রদায়। দলের ভেতরেই বিদ্রোহের সূত্রপাত। এমন পরিস্থিতিতে ভারতীয় গণমাধ্যমের বিশ্লেষণ বলছে, বিজেপির ৮ থেকে ৯টি আসনে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। তৃতীয় পর্বে রাজ্যটিতে ভোটার উপস্থিতি ছিল মাত্র ৫৯ শতাংশ।

ক্ষমতা ধরে রাখতে উত্তর প্রদেশের ৮০টি আসনের মধ্যে অন্তত ৭০টিতে জিততে হবে বিজেপিকে। কিন্তু প্রথম তিন পর্বে ভোটের লাইনে যাদব ও সংখ্যালঘু সমাজের ভিড়ে খুঁজে পাওয়া যায়নি গেরুয়া শিবিরকে। এই রাজ্যেও রাজপুত সম্প্রদায়ের পাশাপাশি ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য নিয়ে আন্দোলন করা কৃষকরাও বিজেপির ওপর ক্ষুব্ধ। তাই মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের প্রচারণা সত্ত্বেও ভোটার উপস্থিতি সবচেয়ে কম ছিল।

সম্প্রতি কর্ণাটকে জেডিএসের শীর্ষ নেতা প্রজ্জল রেভান্নার তিন হাজারের বেশি যৌন কেলেঙ্কারির ভিডিও ফাঁস হয়েছে। এই ইস্যুতে সরব রাজ্য। তবে ইতোমধ্যে অভিযুক্ত এই নেতা দেশ ছেড়ে জার্মানিতে পাড়ি জমিয়েছেন। এ নিয়েও চাপে জেডিএসের শরিক বিজেপি।

হিন্দি ভাষাভাষী অঞ্চলগুলো পরিচিত ভারতের হার্টল্যান্ড হিসেবে। আসন সংখ্যা বেশি হওয়ায় ক্ষমতার লড়াই মূলত এই রাজ্যগুলোতে নির্ধারণ হয়। বেকারত্বের মতো সমস্যা বিজেপির নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিতে না থাকার প্রভাবে কেন্দ্রবিমুখ ভোটাররা।

এখন পর্যন্ত তিন পর্বে ভারতের মোট ৫৪৩টি আসনের মধ্যে ২৮৩টি আসনে পছন্দের প্রার্থীর পক্ষে রায় দিয়েছেন জনগণ।