সিরিয়ায় থাকা কনস্যুলেট ভবনে প্রাণঘাতি হামলার জবাব দিতে ইতিহাসে প্রথম ইসরাইলি ভূখণ্ডে হামলা চালায় ইরান। সেই ঘটনার এক সপ্তাহ না যেতেই এবার ইরানের ভূখণ্ডে পাল্টা হামলা চালিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনাকে বাড়িয়ে দিয়েছে ইসরাইল। এরমধ্য দিয়ে দীর্ঘদিনের ছায়াযুদ্ধ বাদ দিয়ে এবার সরাসরি সংঘাতের পথে দু'দেশ। এতে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে পুরো বিশ্বে।
এ অবস্থায় কাদের বিমানবাহিনীর ভান্ডার কত শক্তিশালী তা নিয়ে হিসাব-নিকাশ করছে বিভিন্ন গবেষণা সংস্থা। পরিসংখ্যানে বেড়িয়ে আসছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। যেখানে দেখা যায়, ইরানি বিমানবাহিনীতে সদস্য সংখ্যা ৩৭ হাজার। কিন্তু কয়েক দশকের নিষেধাজ্ঞার কারণে উচ্চপ্রযুক্তির সামরিক সরঞ্জাম খুব বেশি মজুত করতে পারেনি তেহরান। এছাড়া যুদ্ধ বিমানের সংখ্যাও হাতে গোনা। এগুলোর মধ্যে যেমন রুশ যুদ্ধবিমান আছে, তেমনি ১৯৭৯ সালে ইরানি বিপ্লবের আগে যুক্তরাষ্ট্র থেকে সংগ্রহ করা কিছু পুরোনো মার্কিন বিমানও রয়েছে।
তবে আশার কথা হলো পাইলট ছাড়াই লক্ষ্যবস্তুতে গিয়ে সফলভাবে আঘাত হানতে সক্ষম, এমন বিমান আছে ইরানের হাতে। এছাড়া কয়েক হাজার শক্তিশালী ড্রোনের মালিক তেহরান। পাশাপাশি ভান্ডারে জমা আছে সাড়ে তিন হাজারের বেশি ক্ষেপণাস্ত্র। এগুলোর কোনো কোনোটি আধা টনের মতো ওয়ারহেড বহন করতে সক্ষম। তবে ইসরাইল পর্যন্ত পৌঁছাতে সক্ষম এমন মিসাইলের সংখ্যা তুলনামূলক কম বলে ধারণা করছেন বিশ্লেষকরা।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের কল্যাণে বেশ অগ্রসর হয়েছে ইসরাইলের বিমানবাহিনী। তাদের কাছে কয়েকশ' এফ-ফিফিটিন, সিক্সটিন ও থার্টিফাইভ মাল্টিপারপাস যুদ্ধবিমান রয়েছে। ইরানের নিক্ষিপ্ত ড্রোন ভূপাতিত করতে এসব বিমানকেও কাজে লাগানো হয়। তবে নেই দীর্ঘপাল্লার বোমারু বিমান। তবে কিছু বোয়িং সেভেন জিরো সেভেন বিমানকে পরিবর্তন করে রিফুয়েলিং ট্যাংকারে পরিণত করা হয়েছে। এর ফলে এসব জঙ্গি বিমানগুলো দূরের লক্ষ্যবস্তুতে গিয়েও হামলা চালিয়ে ফিরে আসতে পারবে।
একটানা ৩০ ঘণ্টারও বেশি উড়তে সক্ষম ইসরাইলের হেরন ড্রোন। এছাড়া ডেলিয়াহ মিসাইলের পাল্লা মাত্র ২৫০ কিলোমিটার। চাইলেই বিমানবাহিনী এটিকে ইরানের সীমান্তের কাছাকাছি এনে নিক্ষেপ করতে পারবে। তবে ভূমি থেকে ভূমিতে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র শক্তি নিয়ে সংশয় আছে। কিন্তু ১৯৯১ সালে উপসাগরীয় যুদ্ধের পর যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় বহুস্তরীয় আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা তৈরি করে ইসরাইল। এটি ব্যবহার করে ইরানের দীর্ঘপাল্লার ড্রোন ও মিসাইল ভূপাতিত করার সক্ষমতা রয়েছে দেশটির। এছাড়া আছে আলোচিত আয়রন ডোম।