গত কয়েক বছর ধরে দেশজুড়ে দাপট দেখাচ্ছে এডিস মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গু। এ রোগে মৃত্যু হয়েছে হাজারও মানুষের। গত বছরের শুরু থেকেই আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছিল ঊর্ধ্বমুখী। যা অব্যাহত ছিল বছরের শেষ দিন পর্যন্ত।
চলতি বছরও আক্রান্ত ও মৃত্যুর পরিসংখ্যান উদ্বেগজনক। এখন পর্যন্ত মৌসুম শুরুর আগেই আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে হাজারের বেশি। ভ্যাপসা গরম আর সাথে হঠাৎ বৃষ্টি, যা এডিস মশা প্রজননের জন্য উপযুক্ত আবহাওয়া।
চিকিৎসকরা বলছেন, এবার অনেকেই ডেঙ্গুর লক্ষণ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। তবে টেস্টে ফলাফল আসছে ডেঙ্গু নেগেটিভ। হালকা জ্বর, কাশি, শরীর ব্যাথা, রক্তচাপের ওঠানামা, ডায়ারিয়া সবই ডেঙ্গুর লক্ষণ। তাই ফলাফল নেগেটিভ এলেও চিন্তামুক্ত না হয়ে চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা।
ডিএনসিসি কোভিড হাসপাতালের চিকিৎসক তৃষা হুমায়রা বলেন, 'অনেক জ্বর, কারও কারও কাশি আছে, কারও লুজমোশন আছে। আমরা যখন ব্লাড টেস্ট করতে যাচ্ছি, তাদের হয়তো ডব্লিউবিসি বেড়ে যাচ্ছে, আবার অনেকের প্লাটিলেট ফল করছে অনেক। আমরা জানতাম প্লাটিলেট ফল করা মানেই ডেঙ্গু। কিন্তু এনাদের বারবার টেস্ট করেও ডেঙ্গু পজেটিভ আসছে না।'
এ বছর ডেঙ্গুর ভয়াবহতা আগের যে কোনো সময়কে ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাই এখন থেকেই পরিকল্পিতভাবে সব বিভাগকে এক হয়ে কাজ করার আহ্বান তাদের।
কীটতত্ত্ববিদ কবীরুল বাশার বলেন, 'সারা পৃথিবীতেই ওয়ার্নিং দিয়ে ডেঙ্গুর জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করছে, আমাদেরও প্রস্তুতি গ্রহণ করা দরকার। কারণ গতবছর আমাদের দেশের ইতিহাসে ডেঙ্গু সবচেয়ে ভয়াবহ রুপ নিয়েছিল। এ বছরও ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে বাংলাদেশের অনেকগুলো জেলা। তাই স্থানীয় সরকারের যে অঙ্গ প্রতিষ্ঠানগুলো আছে তাদের এখনই প্রস্তুতি গ্রহণ করা দরকার।'
২০২৩ সালে ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়। এতে মৃত্যু হয় ১ হাজার ৭০৫ জনের।