হামলার ভয়ে থানচি ছাড়ছেন অনেকেই

0

বান্দরবানে কুকি চিনের টানা হামলা ও গোলাগুলির মুখে প্রাণভয়ে এলাকা ছাড়ছেন থানচি উপজেলার মানুষ। উপজেলা সদরের বেশ কিছু পরিবার ইতোমধ্যে ঘরবাড়ি ছেড়েছেন, ছাড়ছেন অনেকেই। বন্ধ থানচি বাজারের অনেক দোকান, মার্কেট। এদিকে কুকি চিন নির্মূলে র‌্যাবের সর্বাত্মক অভিযানের ঘোষণায় আগামীতে বড় ধরনের সংঘাত হতে পারে বলে শঙ্কা অনেকের।

বান্দরবানে গহীন পাহাড়ের কোল ঘেঁষে বয়ে চলা সাঙ্গু নদী। নদীর মতোই শান্ত আর স্থির জীবনধারা এখানকার পাহাড়ী মানুষের। কিন্তু গত কয়েকদিন সশস্ত্র সংগঠন কুকি চিনের টানা হামলা, গোলাগুলি আর লুটপাটে ছেদ পড়েছে এদের জীবনধারায়।

সবুজ পাহাড়জুড়ে এখন বাড়ছে উদ্বেগ, উৎকন্ঠা। থানচি থানার কয়েকশো গজ সামনেই এ পাড়া। গত তিনদিনে কয়েকদফা কুকি চিনের গোলাগুলি স্বচক্ষে দেখেছেন এখানকার মানুষ। আগামীতে আবারও হামলার আশঙ্কায় প্রাণভয়ে ঘরবাড়ি ছেড়ে অনত্র্য চলে গেছেন বেশিরভাগ মানুষ।

স্থানীয়রা বলেন, আমাদের ভয় অনেক বেশি। বাজার এলাকায় থাকি, গোলাগুলি হয়। এদের অনেক সাহস। সবাই চলে গেছে শুধু আমরাই আছি। পরিস্থিতি খুব খারাপ কখন গুলি খেয়ে মরে যাই। সবাই খুব আতঙ্কের মধ্যে আছি।

থানার সামনে দেখা যায় ছোট ছোট গাড়িতে প্রয়োজনীয় জিনিস নিয়ে উঠছেন অনেকে। এলাকার অস্থায়ী শ্রমিক, ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ী প্রাণ হারানোর ভয়ে সবাই ছাড়ছেন সংঘাতপূর্ণ এ এলাকা।

থানচি উপজেলা সদর বাজারে ছোট বড় মিলিয়ে ২৫০টিরও বেশি দোকান, মার্কেট ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। সরেজমিনে দেখা যায়, তালাবদ্ধ অনেক দোকান। যারা খোলা রেখেছেন তাদেরও ক্রেতা নেই। আতঙ্কে বাজারে আসছেন না বাসিন্দারা। ঈদ ও বৈশাখের আগে এমন ঘটনায় লোকসানে পড়ার শঙ্কা সবার।

থানচি ও রুমা থানা, উপজেলা সদর, বাজার কিংবা সড়ক সবজায়গায় এখন কড়া নিরাপত্তা। এখানকার অনেক পাড়া কুকি চিনের শক্ত ঘাঁটি। পুলিশ জানায়, থানার এক থেকে দেড় কিলোমিটারের মধ্যে ঘাপটি মেরে আছে সংগঠনটির সশস্ত্র সদস্যরা। যে কোন সময় হামলা করতে পারে তারা।

থানচি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জসিম উদ্দীন বলেন, 'তারা থানচি থানার এক-দেড় কিলোমিটারের মধ্যে আত্মগোপনে আছে বলে আমরা সংবাদ পেয়েছি। পরিস্থিতি মোকাবেলায় ডিআইজি স্যার আমাদের সার্বক্ষণিক দিক নির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছেন।'

এরইমধ্যে বান্দরবানে কুকি চিনকে সর্বাত্মক নির্মূলে মাঠে অভিযান শুরুর কথা জানিয়েছে র‌্যাব। তেমনটি হলে আগামীতে পাহাড়ের পরিস্থিতি আরও অবনতি হওয়ার শঙ্কা করছেন এখানকার বাসিন্দারা।