শ্রমিক, দিনমজুর কিংবা অট্টালিকার বাসিন্দা, সকলেরই রীতি অনুযায়ী-ঈদের সকালে সবার পাতে থাকে লাচ্ছা-সেমাই।
রোজার পর ঈদের চাহিদা বিবেচনায় লাচ্ছা-সেমাই তৈরির প্রস্তুতি প্রায় শেষ। আর দেশজুড়ে বেশ খ্যাতি থাকায় বিদেশেও সুনাম কুড়িয়েছে বগুড়ার প্রসিদ্ধ লাচ্ছা ও চিকন সেমাই।
বগুড়া ব্রেড বিস্কুট এন্ড কনফেকশনারী ওনার্সের সভাপতি হাসান আলী আলাল বলেন, 'মেশিন ও হাতের কাজের মধ্যে অনেক টেস্টের পার্থক্য থাকে। সে কারণে আমাদের এ পণ্যটার চাহিদা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে।'
সদরের কালশিমাটিসহ জেলার বেশকটি গ্রামে নারীদের হাতে তৈরি হচ্ছে চিকন সেমাই। রোদে শুকানোর পর বাঁশের তৈরি খাঁচাবোঝাই এসব সেমাই চলে যায় খুচরা ব্যবসায়ীদের হাতে। রমজানের বেশ আগে থেকেই সেমাই তৈরি শুরু হয় গ্রামগুলোতে। এ সময় বাড়তি আয়ের পথ খুঁজে নেন মৌসুমী নারী শ্রমিকরা।
ঈদকে সামনে রেখে তেলে ভাজা হচ্ছে সেমাই। ছবি: এখন টিভি
এর বাইরে বগুড়ার বিভিন্ন এলাকায় আছে ছোট ছোট লাচ্ছা তৈরির কারখানা। তবে বড় পুঁজির প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে এখন পাত্তা পায় না ছোট ছোট এসব কারখানা। তাই সামান্য লাভে লাচ্ছা বিক্রি করতে হচ্ছে তাদের।
কারখানা মালিকরা বলেন, আমাদের পুঁজি নাই, তাই তাদের সঙ্গে কুলিয়ে উঠতে পারছি না। আমরা সীমিত লাভ করি।
এখানকার চিকন সেমাই খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকায়। খোলা লাচ্ছা ১০০ থেকে ১৫০ টাকা, ঘিয়ে ভাজা প্রতি কেজি ব্র্র্যান্ডের লাচ্ছা ৮০০ থেকে ১৫০০, সয়াবিনে ভাজা ২৪০ আর ডালডায় ভাজা লাচ্ছার কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৫০ টাকায়। গতবছরের তুলনায় বেশ কিছু কাঁচামালের দাম কমেছে- বিদ্যুৎ, জ্বালানি, শ্রমিক ও পরিবহন খরচ বৃদ্ধি পেলেও পাইকারিতে লাচ্ছা সেমাই বিক্রি হচ্ছে আগের দামে।
আকবরিয়া'র প্রধান বিপণন কর্মকর্তা ইকবাল নুর শুভ বলেন, 'কম লাভে ভোক্তার কাছে লাচ্ছা পৌঁছে দিতে আমরা দাম না বাড়ানোর চেষ্টা করেছি।'
ব্রেড বিস্কিট অ্যান্ড কনফেকশনারি প্রস্তুতকারক সমিতির তথ্যমতে, রমজান ও ঈদ ঘিরে এবার বগুড়ায় সাড়ে ১৭ হাজার টনের বেশি লাচ্ছা-সেমাই উৎপাদন হবে।