জীবনযাপন

সুখী দেশের তালিকায় ১১ ধাপ পিছিয়ে ১২৯তম বাংলাদেশ

শীর্ষ ২০ থেকে ছিটকে গেল যুক্তরাষ্ট্র, তরুণদের মধ্যে কমছে সুখী হওয়ার প্রবণতা

সুখী দেশের তালিকায় আবারও পিছিয়েছে বাংলাদেশ। জাতিসংঘের অর্থায়নে বুধবার (২০ মার্চ) প্রকাশিত বিশ্বের সুখী ১৪৩ টি দেশের তালিকায় ১১ ধাপ পিছিয়ে এবছর বাংলাদেশের অবস্থান ১২৯তম।

এ তালিকায় ৯৩তম অবস্থানে থেকে নেপাল দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে সুখী দেশ। তীব্র অর্থনৈতিক সংকটে জর্জরিত পাকিস্তন, এমনকি সংঘাতকবলিত মিয়ানমারেরও চেয়েও পিছিয়ে আছে ১২৬তম অবস্থানে থাকা ভারত। এরপর শ্রীলঙ্কার ঠিক পেছনে ১২৯তম অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। গেল বছর তালিকার ১১৮তম অবস্থানে ছিল বাংলাদেশ।

টানা সপ্তমবারের মতো এ বছরও শীর্ষে আছে ফিনল্যান্ড। শীর্ষ দশে আধিপত্য নরডিক দেশগুলোর। ইউরোপ ও আটলান্টিকের উত্তরাঞ্চলীয় দেশগুলোর তালিকায় ফিনল্যান্ডের পর দ্বিতীয় ও তৃতীয় অবস্থানেই আছে ডেনমার্ক ও আইসল্যান্ড, সপ্তম সুইডেন।

যুদ্ধবাজ ইসরাইল সুখী দেশের তালিকায় পঞ্চম। এক দশকের বেশি সময় ধরে প্রকাশিত এ তালিকায় প্রথমবারের মতো শীর্ষ ২০ থেকে ছিটকে গেছে যুক্তরাষ্ট্র ও জার্মানি। দেশ দু'টির অবস্থান ২৩ ও ২৪তম। এ দু'টি দেশের বদলে শীর্ষ ২০ টি দেশের মধ্যে জায়গা করে নিয়েছে মধ্য আমেরিকার দেশ কোস্টারিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের কুয়েত।

অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির ওয়েলবিইং রিসার্চ সেন্টারের ওয়ার্ল্ড হ্যাপিনেস রিপোর্টে বলা হয়, বিশ্বের বড় বা অধিক জনসংখ্যার দেশগুলো আর সবচেয়ে সুখী দেশের তালিকায় নেই। সুখের পর্যায় নির্ধারণ পরিমাপ করা হয়েছে সামাজিক সহায়তা, আয়, স্বাস্থ্য, স্বাধীনতা, উদার মানসিকতা এবং দুর্নীতিহীনতার ভিত্তিতে।

ওয়েলবিইং রিসার্চ সেন্টারের পরিচালক জ্যান-ইম্যানুয়েল ডি নিভ বলেন, 'বিভিন্ন দেশের মধ্যে এ তুলনায় মাথাপিছু আয়ের হিসাব রাখতেই হয়েছে। সম্পদের গুরুত্ব তো আছেই, এটি বণ্টন হচ্ছে কীভাবে- সেটিও সমান গুরুত্বপূর্ণ। ফিনল্যান্ড, ডেনমার্কসহ স্ক্যান্ডিনেভিয়ান দেশগুলোতে অন্যান্য দেশের তুলনায় সম্পদের সুষম বণ্টনের প্রবণতা বেশি। এসব দেশের অর্জিত সম্পদে নাগরিকরাই বেশি লাভবান হয় এবং এরপরে তারা প্রত্যেকে পারস্পরিক কল্যাণের একটি পরিবেশ গড়ে তোলেন যা থেকে তৈরি হয় মনস্তাত্বিক স্থিতিশীলতা।'

জরিপ চালানো ১৪৩ টি দেশের তালিকার তলানিতে আছে আফগানিস্তান। ২০২০ সালে তালেবানের দখলে চলে যাওয়ার পর থেকে তীব্র মানবিক সংকটে জর্জরিত এ দেশটির পাশাপাশি লেবানন আর জর্ডান সুখী দেশের তালিকায় অবস্থান হারিয়েছে সবচেয়ে দ্রুতগতিতে। বিপরীতে দিন দিন সবচেয়ে দ্রুত তালিকায় ওপরের দিকে উঠে এসেছে পূর্ব ইউরোপের সার্বিয়া, বুলগেরিয়া ও লাটভিয়া।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, উত্তর আমেরিকায় ১৫ থেকে ২৪ বছর বয়সীরা হারাচ্ছে সুখের অনুভূতি। ইউরোপের মধ্য ও পূর্বাঞ্চলে একই বয়সীদের মধ্যে এ অনুভূতি জোরালো হচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকার দেশগুলোতে অসুখী মধ্যবয়সীরা।

এ বিষয়ে জ্যান-ইম্যানুয়েল ডি নিভ বলেন, 'তরুণদের মধ্যে নাটকীয় মাত্রায় অসুখী হওয়ার প্রবণতা বাড়ছে। ওয়ার্ল্ড হ্যাপিনেস রিপোর্টের ভিত্তিতে এ বিষয়ে আমাদের সূক্ষ্ম দৃষ্টি দেয়া দরকার এবং সমস্যা সমাধানের উপায় চিহ্নিত করা দরকার।'

বিশ্বব্যাপী টেকসই উন্নয়নে জাতিসংঘের বৈশ্বিক কর্মসূচির অধীনে সাস্টেইনেবল ডেভেলপমেন্ট সলিউশন্স নেটওয়ার্ক ২০১২ সালে প্রথমবার প্রকাশ করে ওয়ার্ল্ড হ্যাপিনেস রিপোর্ট।

এমএসআরএস

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর