আন্তর্জাতিক বাণিজ্য
0

ভারতের চালের বাজার ধরতে চায় পাকিস্তান

চলতি বছরে কমতে পারে ভারতের বাসমতি চাল রপ্তানি। সুযোগের সদ্ব্যবহার করে ভারতের বাজার ধরার লক্ষ্যে পৌঁছানোর পথে প্রতিবেশী পাকিস্তান। এরই মধ্যে উৎপাদন বাড়িয়ে বিশ্ববাজারে প্রতিযোগিতামূলক দরে চাল ছাড়তে শুরু করেছে দেশটি।

চির প্রতিদ্বন্দ্বী দেশ দুটির মধ্যে চাল রপ্তানি নিয়ে প্রতিযোগিতা নতুন নয়। ভারত ও পাকিস্তান দুই দেশের বিশেষ খ্যাতি রয়েছে সুন্দর ঘ্রাণ ছড়ানো বাসমতি চাল উৎপাদনের জন্য। যুক্তরাষ্ট্র, সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরব, ইয়েমেন, ইরাক, ইরানসহ সারা বিশ্বে যায় এ চাল।

বিশ্ববাজারে শীর্ষ চাল রপ্তানিকারক দেশ ভারত ২০২৩ সালে ৪৯ লাখ টন চাল রপ্তানি করে। যা একবছর আগের তুলনায় সাড়ে ১১ শতাংশ বেশি। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, গেলো বছর চাল রপ্তানি করে ভারত ৫৪০ কোটি ডলারের বৈদেশিক রাজস্ব আয় করে, যা আগের বছরের তুলনায় ২১ শতাংশ বেশি। অন্যদিকে প্রলয়ঙ্করী বন্যা আর তীব্র খরার কবলে পড়া পাকিস্তানে গেলো বছর চাল উৎপাদন ছিল অনেকটাই কম।

ভারতের চাল রপ্তানিকারকদের সূত্রে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, গেলো বছর পাকিস্তান চাল উৎপাদন নিয়ে সংকটে থাকায় বিদেশি ক্রেতারা তড়িঘড়ি মজুত বাড়াতে ভারতের মুখাপেক্ষী ছিল। কিন্তু এ বছর অধিক উৎপাদনের কারণে বিশ্ববাজারে ভারতের চেয়ে কম দামে চাল ছাড়ছে পাকিস্তান।

এ অবস্থায় ২০২৩-২৪ অর্থবছরে পাকিস্তানের চাল রপ্তানি ৫০ লাখ টন পৌঁছে যেতে পারে বলে আশাবাদী পাকিস্তানের চাল রপ্তানিকারক সমিতি রিপ। গেলো বছর ৩৭ লাখ টন বাসমতি চাল রপ্তানি করেছিল দেশটি। ডলারের বিপরীতে পাকিস্তানি রুপির দরপতনও পাকিস্তানের রপ্তানি খাতকে প্রতিযোগিতাপূর্ণ করে তুলছে বলে মত পাকিস্তানি ব্যবসায়ীদের।

গেলো আগস্টে প্রথমে চালের ন্যূনতম রপ্তানি মূল্য টনপ্রতি ১২০০ ডলার এবং পরে তা ২৫০ ডলার কমিয়ে ৯৫০ ডলার ধার্য করে ভারত সরকার। কিন্তু তাও বর্ধিত মূল্যে প্রতিযোগিতার বাজারে সহনশীল দামে চাল রপ্তানি করতে পারছেন না ব্যবসায়ীরা। ন্যূনতম রপ্তানিমূল্য বৃদ্ধির প্রভাবে সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে এক ধাক্কায় অনেকটা রপ্তানি কমেছে নয়াদিল্লির। অন্যদিকে লোহিত সাগরে নিরাপত্তাহীনতার কারণে আফ্রিকার দক্ষিণ প্রান্ত ঘুরে পণ্য পরিবহন সময় ও খরচ বাড়তে থাকায় জানুয়ারিতেও বাসমতি চাল রপ্তানি নিম্নমুখী।

দেশটির বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ইরাক, কাতার, ওমান ও সৌদি আরব ঘাটতির কারণে ২০২৩ সালে ভারতীয় বাসমতি চালের আমদানি বাড়ালেও সবচেয়ে বড় আমদানিকারক ইরান গেলো বছর ভারত থেকে বাসমতি কিনেছে ৩৬ শতাংশ কম। বিপরীতে উৎপাদন ১০ শতাংশ বেড়ে যাওয়ায় মজুত বাড়ছে বলে ভারতের অভ্যন্তরীণ বাজারে বেশ দাম কমেছে বাসমতির।

এভিএস

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর