এস আলম কর্তৃপক্ষ, এমনকি সরকারের পক্ষ থেকে বারবার বলা হয়েছে চিনির কারখানার আগুন বাজারে কোনো প্রভাব ফেলবে না। তবে বাজার সে কথার উল্টোপথে চলছে।
আগুন লাগার খবরে পরদিনই বাজারে প্রতি বস্তা চিনির দাম বাড়ে ২০ টাকা, এরপর ৮০ টাকা এবং বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) বাজারে দাম বেড়েছে বস্তাপ্রতি ২০০ টাকা পর্যন্ত। অর্থাৎ প্রতি কেজিতে দাম বেড়েছে ৪ টাকা। বর্তমানে বাজারে পাইকারিতে প্রতি কেজি চিনি বিক্রি হচ্ছে ১৩৮ টাকা দরে।
এস আলমের চিনি কারখানার অপরিশোধিত চিনির গুদামে আগুন লাগে। পরিশোধিত চিনি অক্ষত থাকায় ঘাটতি হওয়ার কথা নয়। তবুও অদৃশ্য কারণে প্রতিনিয়ত দাম বাড়ছে।
জিরি এন্টারপ্রাইজের স্বত্ত্বাধীকারী মো. মোজাম্মেল বলেন, 'এস আলমের গুদামে আগুন লাগার পর থেকে চিনি পাওয়া যাচ্ছে না। বিশেষ করে ঢাকা থেকেও চিনি আসছে না। আমরা বেঁচতেও পারছি না।'
দেশে প্রতিমাসে চিনির চাহিদা থাকে এক লাখ টনের মতো। রোজায় তা বেড়ে দাঁড়ায় ২ থেকে আড়াই লাখ টনে। রমজানকে ঘিরে দেশে চিনি আমদানির চিত্রও উর্ধ্বমুখী। জানুয়ারিতে দেশে ৯৩ হাজার টন চিনি আমদানি হয়। ফেব্রুয়ারিতে তা বেড়ে দাঁড়ায় ১ লাখ ২৭ হাজার টনে। চট্টগ্রাম বন্দরে আরও দু'টি জাহাজে ১ লাখ ১২ হাজার টন চিনি খালাসের কার্যক্রম চলছে। দাম বৃদ্ধির জন্য কৃত্রিম সংকটকে দায়ী করছেন ব্যবসায়ীরাই।
একজন ব্যবসায়ী বলেন, 'এখন তো বাজারে পণ্য পাচ্ছি। বাজার থেকে পণ্য কিনেই আমরা বিক্রি করছি। বাজারে পণ্য না পেলে আমরা কোথায় থেকে বিক্রি করছি। বাজারে যথেষ্ট চিনি আছে। বাজারে কোনো সংকট নেই।'
চট্টগ্রামের চিনির বাজার মূলত এস আলম গ্রুপের দখলে। দেশে আরও ৫টি কোম্পানি চিনি বাজারজাত করলেও তাদের পণ্য সেভাবে মেলে না। ফলে এস আলম রিফাইন্ড সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ পণ্য সরবরাহ স্বাভাবিক না করলে চিনির বাজারে স্বস্তি মিলবে না বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।
৪ মার্চ চট্টগ্রামের কর্ণফুলীর ইছানগরে এস আলম রিফাইন্ড সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ কারখানার একটি গুদামে আগুন লাগে। এই কারখানা থেকেই দৈনিক প্রায় ১ হাজার টন চিনি বাজারে সরবরাহ করা হয়। যা বাজারে চাহিদার ১০ শতাংশ।