ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে পশ্চিমা বিশ্বের একের পর এক বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়তে থাকে রাশিয়া। যার নেতিবাচক প্রভাব পড়ে বিদেশি কোম্পানিগুলোর ব্যবসার ওপর। চাহিদা অনুযায়ী পণ্য সরবরাহ করতে না পারায় ক্ষতির মুখে পড়ে অনেক প্রতিষ্ঠান। বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় ইলেকট্রনিক কোম্পানি দক্ষিণ কোরিয়ার এলজি, জার্মানির বশ ও জাপানের সনি রাশিয়ায় তাদের সরবরাহ চেইন ঠিক রাখতে পারছিল না। বাধ্য হয় ব্যবসা গুটিয়ে ফেলতে।
রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরুর পরই ২০২২ সালের মার্চে এলজি ইলেক্ট্রনিক্স মস্কোয় তাদের প্ল্যান্টের কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। একই সময়ে, রাশিয়ায় সফ্টওয়্যার ও হার্ডওয়্যার সরবরাহ বন্ধ করে দেয় জাপানের সনি। একইসঙ্গে বন্ধ থাকে গেম খেলার প্লেস্টেশন কনসোল বিক্রিও। কিছুদিন পর জার্মানির বশ ৭টি রাশিয়ান কারখানায় উৎপাদন বন্ধ করে দেয়।
কোম্পানিগুলো এরই মধ্যে নিজস্ব ব্র্যান্ডের অনেক শোরুম বন্ধ করে দিয়েছে। রাশিয়ায় এসব ব্র্যান্ডের স্বাভাবিক বাণিজ্যিক কার্যক্রম চালানো অনেকটা দুঃসাধ্য হয়ে পড়ে। বেশ অনেকদিন ধরেই এসব প্রতিষ্ঠানের পণ্য ডেলিভারি বন্ধের পরিকল্পনা নেয়া হয়। মজুত পণ্য বিক্রি হলেই ব্যবসা পুরোপুরি গুটিয়ে ফেলবে তারা। শপিংমলগুলোর সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি লিজ চুক্তির কারণেও অনেকে আটকা পড়েছে।
বশ কোম্পানি রাশিয়ায় স্বয়ংক্রিয় মেশিন, চিকিৎসা সরঞ্জাম, খুচরা যন্ত্রাংশ, গৃহস্থালিসহ উচ্চ প্রযুক্তির পণ্য ও পরিষেবা দিয়ে আসছে ২০১৯ সাল থেকে। উৎপাদন সুবিধার জন্য রাশিয়ায় তাদের সাতটি কারখানা চালু ছিল। রাশিয়ায় ১৯৯৯ সালে সনি মিউজিক চালু হয়। রুশ রেকর্ডিং বাজারের ২০ শতাংশ শেয়ার সনির দখলে। যার আর্থিক মূল্য আড়াই বিলিয়ন রুবল। ২০২৩ সালে রাশিয়া থেকে এলজি ইলেকট্রনিক্স আয় করেছে ৩.৩ বিলিয়ন রুবল। যা আগের বছর থেকে ১৯ গুণ কম।
রাশিয়ায় কোম্পানিগুলোর আর্থিক মূল্য। ছবি: এখন টিভি।
এর আগে পশ্চিমা বিশ্বের অনেক খাদ্যপণ্য কোম্পানি যেমন ম্যাকডোনাল্ডস, কোকা-কোলা, হেইনিকেন ও স্টারবাকস এবং বিভিন্ন প্রসাধনী কোম্পানি, শিপিং ও টেলিকম যন্ত্রাংশ নির্মাতা নকিয়াসহ আরো অনেক বড় কোম্পানি রাশিয়া থেকে তাদের ব্যবসা গুটিয়ে নেয়।




