সড়ক বিভাগ বলছে, ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে ৮ মার্চ পর্যন্ত ব্রিজে চলবে না ট্রাক, পিকআপ-কাভার্ডভ্যান, কনটেইনার লরির মতো পণ্যবাহী কোন ভারী বাহন। যাত্রীবাহী বাস, মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকার, সিএনজিচালিত অটোরিকশার মতো হালকা যান ২৪ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি এবং মার্চের ১, ৪ ও ৮ তারিখ বন্ধ থাকবে।
চালুর পর আরও একবার বন্ধ হতে যাচ্ছে ঢাকার প্রবেশদ্বার বুড়িগঙ্গার ওপর নির্মিত সবচে পুরনো এই সেতু। কর্তৃপক্ষ বলছে, ৪ বছর আগে উদ্ধারকারী জাহাজের ধাক্কায় সেতুতে ফাটল দেখা দেয়ার কারণেই আরেক দফার এ সংস্কারকাজ। কিন্তু প্রশ্ন হলো ঢাকার সঙ্গে দক্ষিণের ২১ জেলার এই যোগাযোগ পথ বন্ধ হলে বিকল্প উপায় কী হবে?
প্রচারিত গণবিজ্ঞপ্তিতে মূলত এ ব্রিজের বিকল্প হিসেবে বাবুবাজার ব্রিজ ব্যবহার করার কথা বলা হয়েছে। এক্ষেত্রে যাত্রাবাড়ী থেকে পদ্মাসেতুগামী যানবাহনকে ধোলাইপাড়, দয়াগঞ্জের রাস্তা ব্যবহার করে বাবুবাজার ব্রিজ হয়ে তেঘরিয়া ইন্টারসেকশন দিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব এক্সপ্রেসওয়েতে উঠবে।
যেসব গাড়ি পোস্তগোলা ব্রিজ হয়ে যাত্রাবাড়ী ঢুকবে তাদেরও বিপরীতভাবে একই সড়ক ব্যবহার করতে বলা হয়েছে। গাবতলী থেকে পদ্মাসেতুগামী বাসগুলো বেড়িবাঁধ সড়ক হয়ে বাবুবাজার তেঘরিয়া ইন্টারসেকশন ধরবে। উৎসাহিত করা হয়েছে পদ্মা সেতুর বিকল্প পাটুরিয়া দৌলতদিয়া ফেরি রুট ব্যবহার করতে। কিন্তু বিকল্প এ সড়কগুলোর অবস্থা কেমন?
পোস্তগোলার বিকল্প বাবুবাজার ব্রিজ ধরতে দয়াগঞ্জ মোড় সড়কটির কথা বলা হয়েছে গণবিজ্ঞপ্তিতে। খানাখন্দ আর নির্মাণ সামগ্রীর বিশৃঙ্খলার এ সড়কে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে রিকশা ও লেগুনার মতো বাহনগুলো চলাচলের উপযোগী নয়। যদিও ট্রাফিক বিভাগ বলছে তারা সামলে উঠতে পারবেন।
ট্রাফিক পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মো. মুনিবুর রহমান বলেন, 'সড়ক সংস্কারের বিষয়টা নিয়ে আমরা সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলেছি। অন্যান্য সংস্থাগুলোও পারস্পরিক আলোচনা করেছে। পুলিশও এই বিষয়টা নিয়ে অবগত। আমরা সবসময় বলে থাকি সড়ক সংস্কারের বিষয়টা কিন্তু আমাদের অগ্রাধিকার বিষয়।'
ডিএমপি ট্রাফিক বিভাগ আয়োজিত এ সমন্বয় সভায় ব্রিজ সংস্কারের তারিখ পিছিয়ে দেবারও দাবি ওঠে। বিশেষকরে রমজান ও মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের অসুবিধার বিষয়টিও তোলেন অংশীজনরা। যদিও শেষমেশ সড়ক বিভাগের গণবিজ্ঞপ্তি অনুসরণ করার ব্যাপারে সবাই একমত হয়।
মুনিবুর রহমান আরও বলেন, 'সমন্বয়ের উপরেই আমরা জোর দিয়েছি এবং যারা এই বিষয়টার অংশীদার তাদের সাথেও কথা বলেছি। মানুষকে সেবা দেয়ার লক্ষ্য যদি ঠিক থাকে তাহলে এই চ্যালেঞ্জটাও মোকাবেলা করতে পারবো বলে মনে করি।'
নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সেতুর সংস্কার করা সম্ভব না হলে ভোগান্তি চরমে উঠতে পারে বলে শঙ্কা করেন অংশগ্রহণকারীরা।