অর্থনীতি
0

সীমান্ত সড়কে বদলে যাচ্ছে পাহাড়ি অর্থনীতি

নতুন সীমান্ত সড়কের ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে নেত্রকোণার পাহাড়ি অঞ্চলের অর্থনীতি ও জীবনযাত্রায়। ইতোমধ্যে ৭৬ কিলোমিটার সড়ক ঘিরে গড়ে উঠেছে ছোট-বড় বাজার। যাতায়াত, শিক্ষা, পণ্য পরিবহনে সাশ্রয় হচ্ছে সময় ও অর্থ। তবে চারটি সেতুর অভাবে শতভাগ সুফল বঞ্চিত স্থানীয়রা।

পাহাড়ি সবুজ প্রকৃতির মাঝ দিয়ে তৈরি সড়কে চলাচল করে ছোট-বড় বিভিন্ন যানবাহন। একসময় সীমান্তবর্তী মানুষের কাছে এমন চিত্র স্বপ্ন হলেও এখন বাস্তবে ধরা দিয়েছে। নতুন সীমান্ত সড়কে পরিবর্তন এসেছে ময়মনসিংহ, নেত্রকোণা, সুনামগঞ্জের সীমান্তবর্তী ৮ উপজেলার বাসিন্দাদের জীবনমান। সেই সাথে ৫টি জেলার সাথে তুলনামূলক দ্রুত যোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপন হয়েছে।

মোহাম্মদ সোহরাব উদ্দিন নামের একজন ২৮ বছর ধরে কৃষিকাজের পাশাপাশি নেত্রকোণার সীমান্ত ঘেঁষা ফান্দা বাজারে ব্যবসা করছেন। আগে মাটির রাস্তা থাকলেও এখন নতুন সীমান্ত সড়ক বদলে দিয়েছে বাজারের হালচাল। হাতেগোনা কয়েকটি দোকান থেকে অর্ধশতাধিক দোকান তৈরি হয়েছে। আগের থেকে কয়েকগুণ ব্যবসা বেড়েছে।

সোহরাব উদ্দিন এখন টেলিভিশনকে বলেন, 'বাজার এখন আগের চাইতে বড় হইছে। ব্যবসা-বাণিজ্য ভালো হইতাছে; মানুষ চলাচল করতাছে। অনেক উন্নত হইছে।'

এই সড়ক ঘিরে ছোট বড় অন্তত ৩০টি বাজার রয়েছে। এর মধ্যে বিজয়পুর, তিনালি, ফান্দা, লক্ষ্মীপুর, কালিকাপুর, লেঙ্গুড়া, গোবিন্দপুর, পাঁচগাঁওসহ প্রায় প্রতিটি বাজারেই সকাল-বিকেল প্রতিদিন হাট বসে। স্থানীয় কৃষকরাও খুব সহজে তাদের উৎপাদিত পণ্য এসব বাজারে বিক্রি করছেন। দূর দুরান্তের ক্রেতারাও আসছেন।

বড় চারটি নদীর উপর ব্রিজ নির্মাণ হলেই শতভাগ সুফল পাবে পাহাড়ের বাসিন্দারা

স্থানীয়রা বলেন, 'এখন রাস্তাঘাট ভালো পাইছি, যাতায়াতের সুবিধা হইছে। আগে তো এলাকার মধ্যে সাইকেলও ব্যবহার করা গেছে না। আর এখন অটো আর ট্রাকও চলে। আগে অনেক কষ্ট হইতো কিন্তু রাস্তাটা হওয়াতে সবদিক দিয়ে ভালো হইছে।'

প্রায় ৭৬ কিলোমিটার সড়কের কাজ পুরোপুরি শেষ হলেও এখনো বাকি বড় চারটি নদীর উপর ব্রিজ নির্মাণ। এরইমধ্যে সমীক্ষা যাচাই ও নকশা প্রণয়নে যৌথ উদ্যোগে এর কাজ শুরু করেছে বাংলাদেশ, অস্ট্রেলিয়া ও ফ্রান্সের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। যা শেষ হবে চলতি বছরের মাঝামাঝিতে।

সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহমুদ আল নূর সালেহীন বলেন, 'অস্ট্রেলিয়া ও ফ্রান্সের কোম্পানিসহ পরামর্শক প্রতিষ্ঠান সম্পূর্ণ নকশার কাজ করছে। আমরা নকশা পাওয়ার পর ডিবিডি প্রণয়ন করে সেতু নির্মাণের কাজ হাতে নিবো।'

ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট থেকে শুরু হয়ে সীমান্ত এই সড়ক শেষ হয়েছে সুনামগঞ্জের মধ্যনগর। এটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৫৫৯ কোটি টাকা।