সংস্কৃতি ও বিনোদন
দেশে এখন
0

হবিগঞ্জের বড়আন বিলে ‘পলো বাওয়া’ উৎসব

হবিগঞ্জ

হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ের বড়আন বিলে অনুষ্ঠিত হয়ে গেলো 'পলো বাওয়া' উৎসব। হারিয়ে যাওয়া বাংলার ঐতিহ্য ধরে রাখতে প্রতিবছর বিলে এই উৎসবের আয়োজন করা হয়।

মাছ ধরার বিভিন্ন সরঞ্জাম নিয়ে একদল মানুষ ছুটে চলে হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার বড়আন বিলের উদ্দেশ্যে। সকাল ১১টা বাজতেই কোমরে আর মাথায় গামছা বেঁধে পলো নিয়ে মাছ শিকারে বিলের পানিতে নানা বয়সী মানুষ নেমে পড়েন।

পলোর পাশাপাশি হাত জাল, উড়াল জালসহ মাছ ধরার নানা ফাঁদ নিয়ে হই-হুল্লোড় আর হাসি-আনন্দে মাছ ধরায় মেতে ওঠেন সবাই। বিলের আশপাশের গ্রাম ছাড়াও হবিগঞ্জ সদর, নবীগঞ্জ, বানিয়াচং এবং আজমিরীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে হাজার হাজার পেশাদার ও সৌখিন মাছ শিকারিরা পলো বাওয়া উৎসবে অংশ নেন। তবে এ বছর বিলে আশানুরূপ মাছ না থাকায় অধিকাংশ শিকারি শূন্য হাতে ফিরেছেন।

মাছ শিকারিরা বলেন, ‘এর আগের বছরগুলোতে অনেক মাছ নিছি। এইবার তেমন মাছ নাই। সারাদিন কষ্ট কইরা খালি হাতে যাইতাছি। অনেক মানুষ আইছে কিন্তু মাছ পাই নাই।’

মাছ না পেলেও কারও মুখে ছিল না হতাশার চাপ। তারা বলছেন, হাজার হাজার মানুষের সাথে পলো বাওয়া উৎসবে অংশ নেয়াই চরম আনন্দের। আর যারা মাছ পেয়েছেন তাদের ছিলো বাড়তি উচ্ছ্বাস। তারা বলেন, ‘মাছ পাইছি ভালোই লাগতাছে। এটা হইলো গিয়া একটা আনন্দ।’

শত বছরের বেশি সময় ধরে বড়আন বিলে পলো বাওয়া উৎসবের আয়োজন করে আসছে আথুকুড়া গ্রামবাসী। অনেকটা হারিয়ে যেতে বসা সংস্কৃতিকে ধরে রাখার আহবান আয়োজকদের।

উৎসবের সমন্বয়কারী মহিবুল হোসেন উজ্জল বলেন, ‘আরও ৪ থেকে ৫টা বড় বড় বিল আছে। আগে পলো বাইচ হইতো, কিন্তু এখন যারা লিজ নেয় তারা দিতে দেয় না। ভবিষ্যতে যাতে সরকার এটার সুযোগ করে দেয় এর দাবি জানাই।’

একসময় হবিগঞ্জের বিভিন্ন বিলে পলো বাওয়া উৎসবের আয়োজন হতো। দিন দিন নদী ও বিল ভরাট এবং দখল হওয়ার কারণে হারাতে বসেছে গ্রামবাংলার এই ঐতিহ্য।

এভিএস

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর