কৃষি , গ্রামীণ কৃষি
দেশে এখন
0

আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারে ভালো ফলন বগুড়ার চাষিদের

সনাতন চাষাবাদ ছেড়ে আধুনিক প্রযুক্তির সাথে উন্নত বীজ আর সারের ব্যবহার নিশ্চিত করলে ভালো ফলন পাওয়া যায়। অন্যদিকে শুধু ফসল ফলানোর সঠিক সময় জানা থাকলে ভালো দামও পাওয়া যায়। তার প্রমাণ দিয়েছেন বগুড়ার দুর্গম চরের মরিচ চাষিরা।

টাকায় কেনা তেল, সার, পানি খরচ করেও যমুনার বালুচরে রোপণ করা মরিচের গাছে ফলন জোটেনি। মরিচের পাতার মতোই কুকড়ে গেছে চাষীদের স্বপ্ন। কাঙ্ক্ষিত ফলন না পেয়ে লাভের আশায় মরিচ চাষ করে লক্ষীকোলা চরের অনেকের কপালে হাত উঠেছে। সময়ের পরিবর্তনে বিভিন্ন রোগ আর আধুনিক চাষাবাদ সম্পর্কে ধারনা না থাকাই কারণ, দাবী প্রান্তিক কৃষকের।

একজন কৃষক বলেন, 'অনেক ওষুধ দিয়েছি তারপরও ফলন এমন। সার দিয়ে যেভাবে যত্ন নেয়া দরকার সব করেছি। কিন্তু গাছ কি কারণে নষ্ট হয়ে যায় তা বুঝতে পারি না।'

যমুনার বুকে বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে দূর্গম চরে বাম্পার ফলন পেয়ে মরিচ থেকে এবার অপ্রত্যাশিত টাকা গুণেছেন এমন কৃষকও পাওয়া যায় এখানে।

ভিন্ন গল্প লুকিয়ে আছে এই একই চরে। একটু ভালো পরামর্শ আর সঠিক পথ দেখালে কৃষকরা যে ভালো ফলনের পাশাপাশি ভালো দামও পেতে পারে তেমনই উদাহরণ সৃষ্টি করেছে বেসরকারি একটি সংগঠনের নেয়া প্রকল্প।

কৃষক জিহাদ ইসলাম (ডান দিকে) নিজ জমিতে মরিচ চাষ করছেন। ছবি: এখন টিভি

এই প্রকল্পের সহায়তায় ভালো ফলন পেয়েছেন জিহাদ ইসলাম নামের এক কৃষক। আশ্বিনে রোপণের পর কার্তিক থেকে মাঘ পর্যন্ত চার মাসে বিক্রি করেছেন ৮০ মণ মরিচ। চৈত্র পর্যন্ত সবমিলিয়ে এক বিঘা জমি থেকে ৩ লাখ টাকার বেশি মরিচ বিক্রি করবেন তিনি। তারমতো চরাঞ্চলের ২৪০ জন কৃষক এবার আশানুরুপ ফলন আর দাম পেয়েছেন মরিচ থেকে।

এসব সম্ভব হয়েছে চরাঞ্চলে উচ্চমূল্যের ফসল উৎপাদন ও বাজার জাত উন্নয়ন প্রকল্পের কল্যাণে। যেখান থেকে উন্নত প্রযুক্তি, আধুনিক চাষাবাদ, উন্নত বীজ ও সময়োপযোগী ফসল ফলানোর প্রশিক্ষণ ও সহযোগিতা চোখ খুলে দিয়েছে তাদের।

কৃষক জিহাদ বলেন, 'আমরা আগে এরকম চাষ পদ্ধতি জানতাম না। এবং কি বিষ সংরক্ষণ করতে হবে তাও আমরা জানতাম না। আমার আগের পাঁচ বছরের চেয়ে এবার বাম্পার ফলন পাইছি।'

দক্ষতা উন্নয়নের মাধ্যমে চর, দ্বীপ চরের মতো প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষকদের আর্থিক সক্ষমতা বৃদ্ধিতে ব্র্যাক ব্যাংকের সহযোগিতায় প্রকল্পটি গ্রহণ করে বেসরকারী সংগঠন গ্রাম উন্নয়ন কর্ম (গাক)। কৃষি বিভাগও বলছে, কৃষকের দ্বারে দ্বারে আধুনিক কৃষি পৌছাতে পারলে কৃষককে আর পেছন ফিরে তাকাতে হবে না।

বগুড়া গাকের প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক ড. খন্দকার আলমগীর হোসেন বলেন, 'সারাজীবন হয়তো আমাদের সাপোর্ট নাও থাকতে পারে। কিন্তু মডেলটি থাকবে, প্রযুক্তিটা থাকবে। কৃষকরা যেন একজন আরেকজনকে দেখে ভালো ফলন করতে পারে।'

কৃষি বিভাগের তথ্য বলছে, গত বছর বগুড়ায় ৫ হাজার ৬৫০ হেক্টর জমিতে মরিচের আবাদ হলেও এবার রবি মৌসুমে ৫ হাজার ৭১৮ হেক্টর জমি থেকে ৯২ হাজার ৬২৫ মেট্রিক টন কাঁচা মরিচ উৎপাদনের লক্ষ্য তাদের।

এসএস

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর