বিদেশে এখন
0

আন্তর্জাতিক আদালতের নির্দেশ উপেক্ষা করে গাজায় হামলা

আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের (আইসিজে) আদেশকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে গাজায় হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরাইলি বাহিনী।

ইসরাইলি হামলায় খান ইউনিস শহরে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে নাসের হাসপাতালের কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। এদিকে গুরুতর আহতদের সরিয়ে নেয়ার মতো অ্যাম্বুলেন্স না থাকায় রোগীদের আর্তনাদে ভারি হয়ে উঠে বাতাস।

শনিবারও (২৭ জানুয়ারি) গাজার দক্ষিণাঞ্চলে রাফাহ সীমান্তে স্থল অভিযান চালাচ্ছে ইসরাইলিরা। ১০ হাজার বাসিন্দাকে আল-দাহরার এলাকা ছাড়ার নির্দেশ দিয়ে শুরু হয় গুলিবর্ষণ। এছাড়া দখল করা পশ্চিম তীরে শরণার্থী শিবির অন্যান্য বেসামরিক অবকাঠামো বুলডোজার দিয়ে গুড়িয়ে দেয় ইসরাইলি সেনারা। গাজায় মানবিক সহায়তার ট্রাক ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না।

এই অবস্থায় শুক্রবার আন্তর্জাতিক আদালত অবরুদ্ধ গাজায় গণহত্যা ঠেকাতে ইসরাইলকে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেয়। এছাড়া গাজার মানবিক পরিস্থিতি উন্নতিতে ইসরাইলকে জরুরি পদক্ষেপ নিতে বলেন বিচারকরা। ইসরাইলের বিরুদ্ধে গণহত্যা অভিযোগের মামলাটিও আমলে নিয়েছে আইসিজে।

তবে আদালতের আদেশের পরও আগের অবস্থানেই আছে ইসরাইল। আইসিজের আদেশ প্রত্যাখ্যান করে ইসরাইল প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, ইসরায়েলকে নৈতিকতা শেখানোর কোন প্রয়োজন নেই। প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু আদালতের সিদ্ধান্তকে আপত্তিকর বলেছেন।

ইসরাইলের সামরিক মন্ত্রিসভার মন্ত্রী বেনি গ্যান্টজ বলেন, হামাস শিশু, নারী ও বয়স্কদের হত্যা ও অপহরণ করে জঘন্য কাজ করছে। আগে তাদের বিচার হওয়া উচিত। আন্তর্জাতিক আইন, ইহুদি ঐতিহ্য ও ইসরাইলি সেনাবাহিনীর মূল্যবোধ অনুযায়ী জাতীয় ও ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালন করা হচ্ছে।

মামলার পূর্ণাঙ্গ রায় পেতে কয়েক বছর সময় লেগে যাবে। আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের কোন সুযোগ নেই। গণহত্যা কনভেনশনে স্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে ইসরাইল আইসিজের আদেশ মানতে বাধ্য। তবে ওই রায় বাস্তাবায়নের ক্ষমতা নেই আইসিজের। ইসরাইল চাইলে বিচারকদের নির্দেশ সম্পূর্ণ উপেক্ষা করতে পারে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ইহুদি নিধনের ঘটনায় ১৯৪৮ সালে গণহত্যা কনভেনশন চালু হয়।

এদিকে ফিলিস্তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ইসরাইলিরা বিশ্ববাসীর কাছে মিথ্যা বলছে তা আদালতে প্রমাণিত হয়েছে। তারা গণহত্যা কনভেনশন লঙ্ঘন করে ফিলিস্তিনিদের হত্যা করছে। এই আদেশের প্রতি সম্মান জানাতে সব রাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

আন্তর্জাতিক আদালতে দক্ষিণ আফ্রিকার করা গণহত্যার অভিযোগগুলোকে ভিত্তিহীন বলছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে আইসিজের আদেশের দ্রুত বাস্তবায়ন চায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলো আইসিজের আদেশকে মাইলফলক হিসেবে উল্লেখ করেছে।