উচ্চ মূল্যস্ফীতির জেরে অভ্যন্তরীণ বাজারে আকাশছোঁয়া দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের চেষ্টায় গেলো বছর জুলাই থেকে ধাপে ধাপে চাল রপ্তানিতে বিধিনিষেধ আরোপ করতে শুরু করে ভারত সরকার। নন-বাসমতি সাদা চাল রপ্তানি বন্ধ, এরপর সেদ্ধ চালে ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ, সবশেষ আগস্টে বাসমতি চালেও ন্যূনতম রপ্তানি মূল্য ধার্য করা হয় ১ হাজার ২০০ ডলার।
বিশ্বের শীর্ষ চাল রপ্তানি দেশ ভারতের রপ্তানি নিষেধাজ্ঞায় বাজারে চাল সরবরাহ কমে গেলেও এশিয়া-আফ্রিকার দেশগুলোতে চাহিদা আগের মতোই। ফলে গেলো কয়েকমাসে ঊর্ধ্বমুখী অন্যতম প্রধান এ খাদ্যশস্যের দাম। তবে সব রেকর্ড ভেঙে চলতি সপ্তাহে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে ভারতীয় চালের রপ্তানি মূল্য।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, নতুন মৌসুমের জন্য ভারত সরকার কৃষকদের কাছ থেকে ধান কিনতে শুরু করেছে। ফলে বেসরকারিভাবে চাল কেনাবেচার সুযোগ এখন কম। তার ওপর চলছে ধান মাড়াইয়ের কাজও। সব মিলিয়ে বাজারে চালের ঘাটতি দেখা দেয়ায় চলতি সপ্তাহে পাঁচ শতাংশ খুদের চালই বিশ্ববাজারে ভারত বিক্রি করেছে প্রতি টন ৫৩৩ থেকে ৫৪২ ডলারে, যা এক সপ্তাহ আগেও ছিল ৫২৫ থেকে ৫৩৫ ডলার।
প্রতিবেদনে বলা হয়, আট বছরে প্রথমবার চলতি অর্থবছরে ভারতের চাল উৎপাদন নিম্নমুখী। জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে তাই চাল রপ্তানিতে বিধিনিষেধ আরও বাড়তে পারে বলে জোরালো হচ্ছে শঙ্কা।
অন্যদিকে, ভারতের পরই চাল রপ্তানিতে দ্বিতীয় ও তৃতীয় দেশ থাইল্যান্ড-ভিয়েতনামে কমেছে চালের রপ্তানি মূল্য।
ভিয়েতনাম বিশ্ববাজারে পাঁচ শতাংশ খুদের চাল বিক্রি করছে প্রতি টন ৬৩০ ডলারে, যা এক সপ্তাহ আগের তুলনায় ২৩ ডলার কম। দেশটিতে চাল উৎপাদনে শীর্ষ মেকং-ডেল্টা অঞ্চলে আসন্ন শীত ও বসন্তে ফলন বাড়ার সম্ভাবনা জোরালো হওয়ায় কমেছে দাম।
অন্যদিকে, মার্কিন ডলারের বিপরীতে থাই মুদ্রা দুর্বল হওয়ায় চলতি সপ্তাহ থাইল্যান্ডে পাঁচ শতাংশ খুদের চাল কিছুটা কমে প্রতি টন ৬৬৩ থেকে ৬৬৫ ডলারে বিক্রি হচ্ছে। ব্যাংকক বলছে, অভ্যন্তরীণ চাহিদা এবং ইন্দোনেশিয়া পাঁচ লাখ টন চাল আমদানি করায় খুব বেশি পতন হয়নি থাই চালের দামে।