এখন মাঠে
0

ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ে পূর্ণমন্ত্রীর নতুন চ্যালেঞ্জ

নতুন মন্ত্রী, নতুন দায়িত্ব আর কত শত চ্যালেঞ্জ। দেশের ক্রীড়াক্ষেত্রকে নতুন করে সাজাতে করতে হবে স্বাস্থ্যবান বাজেট। এমন মতামত ক্রীড়া সংগঠকদের।

দেশের ক্রীড়াঙ্গনকে আরও বেশি উজ্জল ও বেগমান করতে ক্রীড়ামনস্ক বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসানকে দেয়া হয়েছে দায়িত্ব। পাহাড়সম চ্যালেঞ্জ সামলাতে উঠে পড়ে লেগেছে নব নিযুক্ত মন্ত্রীও।

তিনি বলেন, 'আমাদের অবজেকটিভ ঠিক করতে হবে। কিন্ত তা করার আগে আরও কাজ আছে। আমি যে মন্ত্রণালয়ে এসেছি তা সম্পর্কে আমাকে জানতে হবে।'

প্রায় ৩৩ বছরে দেশের ক্রীড়াঙ্গন দেখেনি কোনো পূর্ণমন্ত্রী। তবে দীর্ঘদিন পর হলেও দেশের অন্যতম ক্রীড়া সংগঠক নাজমুল হাসান পাপনের আগমনে ফুরিয়েছে সে অপেক্ষা। তার কড়া বার্তায় ঝিমিয়ে পড়া ফেডারেশনগুলো জাগিয়ে তুলতে ক্রীড়ামন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়ার ১৩ দিনের মাথায় ফেডারেশনগুলোর সাথে বৈঠক করেছেন নাজমুল হাসান। তার তড়িৎ এমন উদ্যোগ আভাস দিচ্ছে ইতিবাচক কিছুর।

তবে যতটা সহজ মনে হচ্ছে বাস্তবে তা ততটাই দূরহ। বিসিবির একারই প্রায় হাজার কোটি টাকা থাকলেও, ক্রীড়া মন্ত্রণালয় ঠিক তার উল্টো। এর অধীনে ৫০ টির বেশি ফেডারেশন ও অ্যাসোসিয়েশন আছে। এছাড়া যুব ক্রীড়া মন্ত্রণালয়, ক্রীড়া পরিদফতর, বিকেএসপি ও বঙ্গবন্ধু ক্রীড়াসেবী প্রতিষ্ঠান অন্যতম। যে কারণে দেশের ক্রীড়া জগৎ জাগিয়ে তুলতে কঠিন চ্যালেঞ্জ নাজমুল হাসানের সামনে।

কারণ, চাহিদার থেকে অর্থের যোগান দিতে বাজেট অনেকটাই কম হয়ে থাকে ক্রীড়াক্ষেত্রে। ২০২২-২৩ অর্থ বছরের থেকে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বরাদ্দ কিছু নির্দিষ্ট খাতে বাড়লেও পুরো বাজেটে কমেছে।

তবে নাজমুল হাসান যেভাবে এগিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছেন তাতে করে আসছে নতুন বাজেট বৃদ্ধির সম্ভাবনা দেখছেন ক্রীড়া বিশ্লেষকরা।

সিনিয়র সাংবাদিক শামীম চৌধুরী বলেন, 'ক্রীড়া বাজেট কখনোই পর্যাপ্ত না। এ বাজেট অনেক কম। মূল বাজেটের দশমিক এক এর থেকেও কম হয়ে থাকে। আমলা তান্ত্রিক জটিলতার বলয় ভেদ করে পাপন কিছু কাজ করতে পারবে তা আশা করি।'

এদিকে, ক্রিকেটের পর ফুটবল বেশি জনপ্রিয় হলেও, ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের বাজেটে ভাগ বসায় না বাফুফে। তবে এবার ফেডারেশনের দেয়া বড় প্রকল্পের বাজেট পাশ হওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী বাফুফে সহ-সভাপতি আতাউর রহমান ভুঁইয়া মানিক। তিনি বলেন, 'প্রকল্প অনুমোদিত হলে আমাদের আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট, মহিলা দল, বয়সভিত্তিক একাডেমি চালানোর বরাদ্দ সেখানে রাখা আছে। আমরা সে উচ্চতায় যেতে চাইলে আমাদের সে সহযোগিতা করতে হবে।'

শুধুই কি অর্থ সমস্যা? তা কিন্তু নয়। আছে অবকাঠামোসহ নানান সমস্যা। সবকিছুতে নতুন মন্ত্রীর চ্যালেঞ্জ দেখছেন ক্রীড়া সংগঠক ও বিশ্লেষকরা।

ক্রীড়া সংগঠক সিরাজউদ্দিন আলমগীর বলেন, 'আমাদের স্পেশালাইজড গঠন তৈরি ও অর্থের যোগান নিশ্চিত করতে হবে। সরকারের সহযোগিতা বাড়াতে হবে। এবং সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন হবে ফেডারেশনগুলোকে সঠিকভাবে মনিটরিং করা।'

নিমিষেই হয়তো সবকিছুকে পাল্টানো সম্ভব নয়। তবে সঠিক পরিকল্পনা আর সদ ইচ্ছার বিকল্প নেই বলছেন বিশ্লেষকরা।

অনেক আগে থেকেই বিশ্বের অন্যতম ধনী ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতির দায়িত্বে আছেন নাজমুল হাসান পাপন। তবে দেশের ক্রীড়াঙ্গন যে শুধুই ক্রিকেটে সীমাবদ্ধ নয়। একইসাথে অন্য ফেডারেশন ও অ্যাসোসিয়েশনের কথাও ভাবতে হচ্ছে নতুন ক্রীড়ামন্ত্রীকে। বাজেট কম হওয়ায় ক্রীড়াক্ষেত্রে নবজাগরণের জন্য অনেক বড় চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হবে পাপনকে।

তবে এত সবকিছুকে পেছনে ফেলে নতুন করে ক্রীড়াঙ্গনকে জাগ্রত করতে কি করতে পারেন নাজমুল হাসান পাপন তা দেখার অপেক্ষায় ক্রীড়াপ্রেমীরা।

এমএসআরএস

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর