বাণিজ্যিক সম্ভাবনায় গোলের গুড়

0

উপকূলীয় জেলা বরগুনার অর্থনৈতিক সম্ভাবনাময় উপজেলা তালতলী। এখানকার ৯০ হেক্টর জমিতে নোনা পানির উদ্ভিদ গোলগাছ রয়েছে প্রায় ২০ হাজার।

সমুদ্রঘেঁষা এ উপজেলার বেহালা গ্রামের চাষিরা শীত মৌসুমে গোলপাতার কান্ড থেকে সংগ্রহ করেন সুমিষ্ট রস।

প্রতিটি গোলগাছ থেকে প্রতিদিন গড়ে চার কলসি রস পাওয়া যায়। এই চার কলসি রস উনুনে জ্বাল দিয়ে পাওয়া যায় চার কেজি গুড়। এসব গুড় বিক্রি করে প্রত্যেক চাষি প্রতিদিন আয় করেন ১০০০ থেকে ১৫০০ টাকা।

গুড় প্রস্তুতকারকরা বলেন, 'সকাল ১০টা থেকে ১২টা পর্যন্ত রস নামাই। এরপরে জ্বাল দিয়া মিঠা তৈরি করি। গুড় বাজারে ১৮০ টাকা কেজি বিক্রি করি। আমাদের তৈরি গুড় অনেক ভালো চাহিদা রয়েছে, ভেজাল নাই।'

নানা খনিজ লবণ সমৃদ্ধ পুষ্টিমানে ভরপুর এই গোলের গুড় চাষিরা কেজিপ্রতি ১৮০ টাকা বিক্রি করেন। আর স্থানীয় বাজারে ব্যবসায়ীরা সেই গুড় বিক্রি করছেন ২৮০ টাকা কেজি দরে।

এদিকে গোলের গুড় এবং গুড় থেকে উৎপাদিত বিভিন্ন পণ্যের চাহিদা থাকায় তরুণ উদ্যোক্তারাও গুড় কেন্দ্রিক ব্যবসায় ঝুঁকছেন।

ব্যবসায়ীরা বলেন, 'এই গুড়গুলো আমরা তালতলী থেকে সংগ্রহ করি। বাজারে এ গুড়ের চাহিদা প্রচুর। এই প্রথম গোলের গুড়ের চা বিক্রি করছি। পর্যটকদের কাছে এটা খুব জনপ্রিয়তা পাচ্ছে।'

দেশে-বিদেশে গোলের গুড়ের চাহিদা থাকায় কৃষি বিভাগ এটিকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে বলে জানান জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. আবু সৈয়দ মো. জোবায়দুল আলম। বলেন, 'গোলের গুড়ের ভালো উৎপাদন এবং রোগমুক্তভাবে তৈরি হওয়ার ব্যাপারে আমরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে কৃষকদেরকে পরামর্শ দিয়ে থাকি।'

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, তালতলীতে প্রতিবছর শীত মৌসুমে উৎপাদিত হয় ১২ হাজার টন গোলের গুড়। যার বাজারমূল্য প্রায় ৩ কোটি টাকা।