এশিয়া
বিদেশে এখন
0

২০২৩ সালেও চীনের জন্মহার নিম্নমুখী

২০২৩ সালে চীনের জনসংখ্যা ১৪০ কোটি ৯০ লাখে নেমে এসেছে। যা আগের বছরের তুলনায় ২০লাখ ৮০ হাজার কম।

চীনের জাতীয় পরিসংখ্যান দপ্তরের তথ্যমতে, গত বছর চীনে শিশুর জন্ম কম হয়েছে সাড়ে ৫ হাজার। অন্যদিকে দেশটিতে মৃত্যুহার বেড়েছে। গত এক বছরে দেশটিতে মারা গেছে ১ কোটি ১১ লাখ মানুষ।

রয়টার্সের তথ্যমতে, গত এক বছরে দেশটিতে ১৬ থেকে ৫৯ বছর বয়সী শ্রমশক্তি কমেছে ১ কোটি ৭ লাখ ৫০ হাজার। অন্যদিকে ৬০ বছরের বেশি বয়সীদের সংখ্যা বেড়েছে ১ কোটি ৬৯ লাখ ৩০ হাজার। কর্মক্ষম জনসংখ্যা কমে, বয়স্ক মানুষের সংখ্যা বাড়ায় বিরূপ প্রভাব পড়ছে চীনের অর্থনীতিতে।

চীনা নাগরিকরা বলেন, 'জন্মহার বাড়াতে সরকার নানা ধরণের প্রণোদনা ও সুবিধা দিচ্ছে। কিন্তু আমার মনে হয়, মানুষ শুধু প্রণোদনার জন্য সন্তান ধারণে রাজি না। আমাদের দেশের অর্থনীতির আকার বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জীবনযাত্রার ব্যয় অনেক বেড়েছে। তাই সন্তান ধারণের দায়িত্ব বা চাপ সহ্য করতে অনেকেই ইচ্ছুক না। বাচ্চাদের ভবিষ্যৎ ও শৈশবকাল নিয়ে অভিভাবকরা এখন অনেক বেশি উদ্বিগ্ন থাকেন। সুন্দর ভবিষ্যতের নিশ্চয়তা দিতে না পারার শঙ্কায় অনেকে সন্তান নিতে আগ্রহী হন না।'

সূত্র: চীনের জাতীয় পরিসংখ্যান দপ্তর

টানা দুই বছর ধরে রেকর্ড হারে কমছে চীনের জনসংখ্যা। গত বছর ইতিহাসের সবচেয়ে কম জন্মহার দেখে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির এই দেশ। এমন অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে এক সন্তান নীতি থেকে সরে এসেছে চীনা প্রশাসন।

গত তিন দশকের মধ্যে চীনের অর্থনীতি সবচেয়ে ধীর গতিতে আছে। ২০২৩ সালে সরকারের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ৫ শতাংশ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করেছে। তবে মহামারির বছরগুলো বাদ দিলে এই প্রবৃদ্ধির গতি ১৯৯০ সালের পর সবচেয়ে দুর্বল। এছাড়া গত ডিসেম্বর পর্যন্ত তরুণদের বেকারত্বের হার ছিল ১৪.১ শতাংশ।

চীনকে একটা দীর্ঘ সময় ধরে বয়স্ক কর্মীর উপর নির্ভর করতে হবে। অবসর গ্রহণের সংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে স্বাস্থ্যসেবা ও পেনশনের ওপর চাপ পড়বে। ২০৩৫ সালের মধ্যে অবসর নেয়ার সংখ্যা দাঁড়াতে পারে প্রায় ৪০ কোটিতে।

চীনের উন্নয়ন গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক ফেং ওয়েনমেং বলেন, 'বয়স্কদের জন্য অপরিহার্য পণ্য ও সেবাগুলো আমাদের নিশ্চিত করতে হবে। বয়স্ক জনগোষ্ঠীর জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন ও তাদের নিরাপত্তায় আগে গুরুত্ব দিতে হবে। বিশাল এই বয়স্ক জনগোষ্ঠীর চাহিদা কীভাবে মেটাবে সেটি এখন দেশটির সবচেয়ে বড় বিষয়।'

১৯৮০'র দশকে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে এক সন্তান নীতি চালু করেছিল চীন। মূলত তখন থেকেই দেশটিতে জন্মহার কমতে থাকে। নিম্নমুখী জনসংখ্যা বৃদ্ধি বিপদজনক পর্যায়ে চলে গেলে ২০১৫ সালে এই নীতি তুলে নেয়া হয়। জন্মহার বাড়াতে নানা প্রণোদনা ও ভর্তুকির ব্যবস্থা করেছে চীনা সরকার। ২০২১ সালে তিন বা তার অধিক সন্তান গ্রহণে উদ্বুদ্ধ করা হয়। তবে করোনা মহামারিতে জন্মহার উল্লেখযোগ্য হারে কমে যায়।