৭২৫ বর্গকিলোমিটারের বিশাল কৃত্রিম জলাধার কাপ্তাই হ্রদ। যেখানে মৎস্য আহরণ করে জীবিকা নির্বাহ করেন প্রায় ২৫ হাজার জেলে। হ্রদের মৎস্য সম্পদ বৃদ্ধিতে সম্মিলিতভাবে মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশন কাজ করছে।
বিএফডিসি’র তথ্যমতে গত ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম চারমাসে বিভিন্ন ঘাটে অবতরণ হয় ৪ হাজার ১৩৩ টন মাছ। যা থেকে রাজস্ব আদায় হয় ৮ কোটি ৬২ লাখ টাকা। তবে চলতি অর্থবছরের সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর এই চার মাসেই লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করেছে।
বিএফডিসি বলছে, আগে মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রগুলোতে ২৪ ঘণ্টা কার্যক্রম চলতো। সেজন্য হ্রদে ২৪ ঘণ্টা মাছ ধরতো জেলেরা। এখন ১২ ঘণ্টা মাছ অবতরণের নতুন সময়সূচি নির্ধারণ করায় সুফল মিলছে। এছাড়া চলতি মৌসুমে হ্রদে পর্যাপ্ত পানির মজুদ ও প্রজনন মৌসুমে টানা ১৩২ দিনের নিষেধাজ্ঞায় মাছ বৃদ্ধি পেয়েছে।
রাঙামাটি মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশনের ব্যবস্থাপক মো. আশরাফুল আলম ভূঁইয়া বলেন, 'গতবছর এই সময় উৎপাদন ছিল ৭ থেকে ৮ টন। সেখানে এবছর আমাদের উৎপাদন নূন্যতম ২০ টন হয়েছে। আমরা আশাবাদী যে মাছের উৎপাদন সারাবছর একই হারে বলবৎ থাকবে।'
জেলে ও মাছ ব্যবসায়ীরা বলছেন, আগে আড়তগুলোতে বেশি মাছ অবতরণের ফলে বরফ সংকটে অনেক মাছ ফেলে দিতে হতো। তবে নতুন সময়সূচির কারণে কর্মকর্তাদের সমন্বিত কার্যক্রমে মৌসুমজুড়েই মাছের যোগান মিলছে।
ব্যবসায়ীরা বলেন, '২৪ ঘণ্টার চেয়ে ১২ ঘণ্টা মাছ ধরার ফলে উৎপাদন বেশি হচ্ছে। অন্যান্য বছরের চেয়ে ভালো আছে। আশা করছি সারাবছর মাছ পাবো। মাছের বাজার ভালো হওয়ার কারণে সবাই মোটামুটি লাভবান হচ্ছে।'
নতুন সময়সূচি অনুযায়ী, ৪টি মৎস্য অবতরণ ঘাটে সকাল ৬টা থেকে মাছ পরিমাপ ও শুল্কায়ন শুরু হয়। এরপর তিনঘণ্টা বিরতি দিয়ে রাত ১০টা পর্যন্ত চলে। আগে এই কার্যক্রম ২৪ ঘণ্টা চলতো।
কাপ্তাই হ্রদে গত বছর দেশীয় ৫৩ প্রজাতির সাড়ে ১৬ হাজার টন মাছ ধরা পড়েছে। যার বাজারমূল্য প্রায় ৭০০ কোটি টাকার বেশি। যেখান থেকে সরকার রাজস্ব পায় ১১ কোটি ২৫ লাখ টাকা।