বরিশালের প্রধান পাইকারি কাঁচাবাজার বহুমুখী সিটি পাইকারি বাজার। দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে সবজি এনে বিক্রি করা হয় এখানে। সপ্তাহ ব্যবধানে এ বাজারে প্রায় সব ধরনের সবজির দাম কমেছে ৫ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত। এতে স্বস্তি জানিয়েছেন ক্রেতারা। তবে কাঁচামরিচের ঝাল তেমন একটা কমেনি। খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ২৭০ টাকা কেজি দরে।
একজন ক্রেতা বলেন, 'পেঁয়াজ ও আলুর দাম কমেছে। তরকারির দাম আগে যা ছিল, তার থেকে হালকা পরিবর্তন হয়েছে।'
ব্যবসায়ীদের দাবি, গেলো মাসের তুলনায় সবজির দাম নেমেছে অর্ধেকে। কাঁচামাল সরবরাহে ও পণ্য পরিবহণে চাঁদাবাজি কমেছে। আগের মতো সিন্ডিকেট নেই। ফলে সরবরাহ ভালো থাকায় দাম কমে এসেছে। এর ফলে বেড়েছে বেচাকেনাও। এতে খুশি সবজি ব্যবসায়ীরা। ধীরে ধীরে সবজি বাজার আরও কমবে বলে ধারণা ব্যবসায়ীদের।
একজন ব্যবসায়ী বলেন, 'গত সপ্তাহে দাম বেশি ছিল, এখন দাম কমেছে এবং বাজার নিয়ন্ত্রণে এসেছে। প্রতিটি সবজিতে প্রতিকেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা দাম কমেছে।'
অন্যদিকে খুব একটা স্বস্তি ফেরেনি নগরীর পোর্ট রোড পাইকারি মাছ বাজারে। মাছের দাম নিয়ে ক্রেতাদের মধ্যে রয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। সপ্তাহ ব্যবধানে ২০ থেকে ৫০ টাকা কমে কারও কারও কাছে সাধ্যের মধ্যে থাকলেও বেশিরভাগ মানুষের নাগালের বাইরে মাছের বাজার।
একজন ক্রেতা বলেন, 'সকাল থেকে এক ঘণ্টা ঘুরলাম মাছের জন্য। বাজারে মাছের দাম একদম আকাশছোঁয়া। মাছ তো তেমন বেশি ওঠেনি। আমরা কেনার মতো অবস্থা নেই যে দাম চাচ্ছে।'
তবে দাম বৃদ্ধির বিষয়টি বিক্রেতারাও স্বীকার করে বলেন, নদীতে মাছ কম ধরা পরায় এবং চাষের মাছের সরবরাহ কম থাকায় দাম কিছুটা বেড়েছে। তবে, ভরা মৌসুম হলেও বাজারে নেই কাঙ্ক্ষিত ইলিশ। এখন প্রতিদিন ৫ থেকে ১০ মণ ইলিশের সরবরাহ কঠিন হয়ে পড়েছে। ৫০০ গ্রাম থেকে দেড় কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৪০০ টাকা থেকে ২ হাজার ২০০ টাকা পর্যন্ত। তবে মাছের সরবরাহ স্বাভাবিক হলে বাজার নিয়ন্ত্রণে আসবে প্রত্যাশা ব্যবসায়ীরা।
একজন বিক্রেতা বলেন, 'আবহাওয়ার কারণে মাছ জালে পড়ছে না। এজন্য বাজারে মাছ কম। সমুদ্রে নৌকা যেতে পরছে না। মাছ ধরতে গেলে একদিন দুইদিন থেকেই আবহাওয়া খারাপ হয়, সেজন্য চলে আসতে হয়।'
কোষাধ্যক্ষ, বরিশাল মালিক সমিতি অ্যাসোসিয়েশনের কোষাধ্যক্ষ ইয়ার হোসেন সিকদার বলেন, 'খাজনা থেকে শুরু করে বিভিন্ন জায়গায় টাকা দেওয়ার কারণে আমাদের এ সাইড থেকে মাছ কম হয়। একটা মাছ ঢাকায় পাঠালে তা ৩০০ টাকায় পৌঁছে যায়। কিন্তু বরিশালে সেটা ৮০০ টাকা লাগে। সেজন্য কেউ বরিশালে ৮০০ টাকা খরচে রাতে চায় না।'
বরিশালের বাজারে মুরগির দাম কমেছে ৫ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত। তবে গরুর মাংস ৬৫০ টাকা ও খাসির মাংস ৮০০ টাকা নির্ধারণ করা হলেও বিক্রি হচ্ছে আগের দামেই।