২০১৯-২০ অর্থবছরে পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলায় পরীক্ষামূলক কাসাভা বা শিমুল আলু চাষের উদ্যোগ নেয় কৃষি বিভাগ। কন্দাল জাতীয় ফসল উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে শুরুতে ৪ থেকে ৫ বিঘা জমিতে চাষ করা হয়। প্রথম বছরেই ভালো ফল পাওয়া যায়। বর্তমানে এই উপজেলার প্রায় ৮০ বিঘা জমিতে এই আলু চাষ হচ্ছে।
দেবীগঞ্জের পাশাপাশি এবার বোদা উপজেলার বড়শশী ইউনিয়নের ডাঙ্গাপাড়া এলাকায় ২০ বিঘা জমিতে এই আলু চাষ হয়েছে। পঞ্চগড়ে এখন পর্যন্ত প্রতি হেক্টরে ২৮ টন ফলন পাওয়া গেছে। তবে ভালো ফলন হওয়ার পরও আলু বিক্রি নিয়ে বড় দুঃশ্চিন্তায় পড়েছেন চাষিরা।
চাষিরা বলছেন এলাকায় এ আলু তেমন পরিচিত না হওয়ায় স্থানীয় বাজারে তেমন চাহিদা নেই। আবার কেউ কিনতে আগ্রহ দেখালেও খুব কম দাম বলছেন।
কৃষকরা বলেন, 'চারা এবং সার দিয়া কৃষি অফিস আমাগো সহযোগিতা করসে। ফলও ভালো হইসে। কিন্তু লোকাল কোন পার্টি নাই। এলাকার মানুষ জানে না এইগুলা কিভাবে খাইতে হয়।'
তবে এলাকায় নতুন ফসল হিসেবে শিমুল আলু নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে আগ্রহের কমতি নেই। স্থানীয়রা বলেন, 'আমরা এই আলু চাষাবাদ করার কথা ভাবতেসি। লাভ ভালো হইলে চাষ করার ইচ্ছা আছে।'
কৃষি কর্মকর্তারা জানান, কাসাভা বা শিমুল আলু অত্যন্ত লাভজনক ও পুষ্টিকর ফসল। পতিত জমিতে পরিশ্রম ছাড়াই সহজেই উৎপাদন করা যায়। গাছ বড় হওয়া পর্যন্ত সাথী ফসল হিসেবে বাদাম, সরিষাসহ বিভিন্ন শাকসবজি আবাদ করা যায়। গাছের তলায় শেকড়ের মতো ধরে আলু, দেখতে লম্বাটে। এটি দিয়ে সাগুদানাসহ বিভিন্ন খাদ্য সামগ্রী তৈরি হয়। এছাড়া এর স্টার্চ নতুন কাপড়ে ব্যবহার হয়। অনেকে ভাতের বিকল্প হিসেবে এই সুস্বাদু আলু খেয়ে থাকেন।
কৃষি কর্মকর্তা আহমেদ রাশেদ উন নবী বলেন, 'এটির অসীম সম্ভাবনা রয়েছে। ওষুধ এবং বস্ত্র শিল্পে এর ব্যবহার করা হচ্ছে। সঠিক বাজারমূল্য দিতে পারলে কৃষক পর্যায়ে এর চাহিদা বাড়বে।'
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক রিয়াজ উদ্দিন বলেন, 'বিভিন্ন কোম্পানির সঙ্গে আমরা চাষিদের যোগসূত্র করিয়ে দিব। যাতে তারা সহজেই এই ফসলটি বিক্রি করতে পারে।'