কর্ণফুলী নদীর দুই পাড়ে গড়ে উঠা চট্টগ্রাম ৮ আসন। একপাশে বোয়ালখালী উপজেলায় গ্রামীণ জনপদ। অন্যপাশে বিস্তৃত নগরী।
এ আসনটিতে কেটলি প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম। একাধারে তিনি শিল্পপতি এবং মহানগর আওয়ামী লীগের অর্থ সম্পাদক। ২০০৯ থেকে দশ বছর সিডিএ'র চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্বে ছিলেন তিনি। দীর্ঘ সময় নগরের একটি প্রভাবশালী সংস্থার প্রধান এ কর্ণধার উন্নয়ন করলেও পাননি দলীয় মনোনয়ন।
এখানে জোটের প্রার্থী জাতীয় পার্টির সোলায়মান আলম শেঠের বিপরীতে হেভিওয়েট প্রার্থী আবদুচ ছালাম। এখনও তিনি মনে করেন বাণিজ্য নগরী সাজাতে অনেক কাজ বাকি। যা সিডিএ চেয়ারম্যান থাকার সময় করতে পারেননি।
আবদুচ ছালাম বলেন, 'চট্টগ্রামে সহজ এবং উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা নিশ্চিত করার জন্য আমার চেষ্টার কোন ত্রুটি ছিলনা। আমি এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে করে নিজেই হতবাক হয়েছি। যোগাযোগ ব্যবস্থা ঠিক না থাকলে উন্নয়ন অসম্ভব।'
এখন টেলিভিশনের সাথে কথা বলছেন আবদুচ ছালাম
দীর্ঘ আট বছর চট্টগ্রামের মেয়র ছিলেন আরেক শিল্পপতি মোস্তফা গ্রুপের কর্ণধার এম মনজুর। দীর্ঘসময় কাউন্সিলর থাকার পর বিএনপির হয়ে মেয়র নির্বাচিত হন। পরে দল পরিবর্তন করে আসেন ক্ষমতাসীন দলে।
তবে নৌকার মনোনয়ন না পেয়ে ফুলকপি প্রতীকে নেমেছেন এম মনজুর। চট্টগ্রাম ১০ আসনে জনসমর্থনের কারণে এ প্রার্থীকেও হেভিওয়েট বলছেন ভোটাররা। তবে মেয়র থাকাকালে জলাবদ্ধতা, পাহাড় কাটাসহ নানা দুর্ভোগ দূর করতে না পারলেও সংসদ সদস্য হলে অনেকটাই লাঘব হবে বলে মনে করেন তিনি।
তিনি বলেন, 'আমি নির্বাচিত মেয়র থাকাকালীন ৪১ নং ওয়ার্ডে অনেক সমস্যা ছিল যেগুলোর সমাধান করা হয়নি। এবার যদি আল্লাহ আমাকে ক্ষমতা দেন আমি এই সমস্যাগুলোর সমাধান করবো।'
নগরীর প্রধান দুই সংস্থার সাবেক এ দুই কর্ণধারকে নিয়ে আলোচনা এখন পুরো নগরীজুড়ে।
ভোটাররা বলেন, চট্টগ্রাম ১০ আসনের জলাশয়গুলো যেন পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকে। আবদুচ ছালাম ফ্লাইওভারগুলো করেছেন এবং এম মনজুরও মেয়র থাকাকালীন অনেক উন্নয়ন করেছেন। এখন জাতীয় সংসদে গিয়ে আইন প্রণয়নে কতটুকু সফলতা পাবেন এটাই দেখার বিষয়।
প্রচারণায় ব্যস্ত স্বতন্ত্র প্রার্থী এম মনজুর
এদিকে এ দুই আসনের একটিতে মহাজোটের মনোনয়ন পেয়েছেন জাতীয় পার্টির সোলায়মান আলম শেঠ। মাঠ দখলে রাখতে লাঙলের পাশাপাশি নৌকার কর্মী সমর্থক নিয়ে মাঠে নেমেছেন তিনি।
চট্টগ্রাম ৮ আসনের মহাজোট প্রার্থী সোলায়মান আলম শেঠ বলেন, 'আমি প্রার্থী হওয়াতে এলাকার মানুষ মন থেকে খুশি হয়েছেন। তারা মনের আনন্দে আমার কাছে আসছেন।'
আর চট্টগ্রাম ১০ আসনে এম মনজুরের বিপরীতে নৌকার প্রার্থী মহিউদ্দিন বাচ্চু। তিনিও মনে করেন যতই শক্তিশালী হোক নৌকা বা দলের বিপক্ষে গিয়ে জয়ী হওয়া সহজ হবে না ।
চট্টগ্রাম ১০ আসনের মহিউদ্দিন বাচ্চু বলেন, 'স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ব্যক্তি পর্যায়ের, তারা কেউ দলের প্রতিনিধিত্ব করছে না। আওয়ামী লীগ থেকে এই এলাকায় ৭ বার সাংসদ নির্বাচিত হয়েছে। কোন ব্যক্তি প্রার্থী আওয়ামী লীগকে চ্যালেঞ্জ করবে এটা আমি মনে করি না।'
তবে দুজনই মনে করেন বাণিজ্য নগরী হিসেবে সাজিয়ে তোলা সম্ভব হয়নি চট্টগ্রামকে। বরং অপরিকল্পিতভাবেই গড়ে উঠছে এ নগরী। যার ব্যর্থতা জনপ্রতিনিধিদেরও।





